আজকে রবিবার সপ্তাহের কাজ শুরুর দিন। গত এক সপ্তাহ বাচ্চাদের স্কুলে যেতে পারিনি।। কিন্তু কতদিন আর বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ রাখা যায়! তাই মনের জোর বাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করলাম।বেশ ভোরে ঘুম থেকে উঠে গেলাম। সকালের দিকে আসলে কাজের ব্যস্ততা টা অনেক বেশি থাকে।এর নাস্তা,ওর নাস্তা,টিফিন এরপরে একে একে বিদায় দেয়া।নিজেও তৈরি হওয়া,নিজের খাবার গুলো রেডি করে নেয়া। আসলে সকালবেলাটা অনেক ঝামেলায় কাটে।
এর মধ্যে আজকে দারুন কাজ হয়েছে। সব ব্যস্ততা মিলিয়ে আমি মোবাইল সাথে করে নিয়ে বের হতে ভুলে গেছি। সকালে উঠে মোবাইল চার্জে দিয়েছিলাম।বের হওয়ার মুহূর্তে একেবারে খেয়াল ছিল না।তেজগাঁও পৌঁছানোর পরে আমার স্মরণ হলো যে আজকে মোবাইল নেওয়া হয়নি।কিন্তু বাসায় ফিরে যাওয়ার মত সময় নেই।কারণ যদি একবার ফেরত যাই তাহলে আর এগারোটাতেও স্কুলে পৌঁছানো হবে না।
তাই মোবাইল ছাড়াই এক বেলা কাটানোর চেষ্টা করতে লাগলাম।গতকাল রাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে অনেক জোরে নয়।কিন্তু একটানা বৃষ্টি হচ্ছে।স্কুলে পৌঁছেও দেখলাম বৃষ্টির প্রভাব। তেমন কেউ আজকে স্কুলে আসেনি।প্রথমে ছেলেকে ক্লাসে দিয়ে ক্যান্টিনে এসে বসলাম। কিছুক্ষণ পরে নাস্তা করে নিলাম।নাস্তা করার সময় আমার বান্ধবী নার্গিস চলে আসলো।কিন্তু আজকে বান্ধবী জেরিন আসেনি, শাহীন ও আসেনি।
নাস্তা খাওয়া শেষে নার্গিস আমাকে আস্তে আস্তে বলল যে, তুমি আমার সাথে চলো। তোমার সাথে আজকে একটু জরুরী কাজ আছে।আসলে ও একটি গাড়ি কিনেছে। গাড়ির কি অবস্থা! কেমন হয়েছে! আর কি কি কাজ করতে হবে এগুলো আমাকে দেখানোর জন্য ডাকছিল।
ওর একটা গাড়ি খুবই দরকার ছিল।কিন্তু ওর শশুর সাহেব কোনোভাবেই রাজি হচ্ছিলেন না। এদিকে বেশ কিছু মাস হয়েছে ওর হাজব্যান্ড মারা গিয়েছে।তাই দুটি বাচ্চাকে সামলানো ওর জন্য খুব কষ্টকর হয়ে যাচ্ছিল।ও একটি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনেছে।পরে আমি বললাম ঠিক আছে চলো ঘুরে আসি আর তোমার গাড়ি ও দেখবো।
তবে গাড়িটি আমার দেখে খুব পছন্দ হলো। আকাশী নীল রং রংয়ের এক্স করোলা রানেক্স গাড়ি।ভেতরে শুধু ডেকোরেশন এর কাজ ওর করতে হবে।তাহলে গাড়ি একদম নতুন হয়ে যাবে।প্রথমেই ও গাড়ির তেল নিলো সিএসডি পাম্পে গিয়ে।এরপর বলল যে ও কিছু টাকা তুলবে নগদ থেকে।পাশেই নগদের দোকান ছিল।যেহেতু সাড়ে নয়টা বাজে ততক্ষণে দোকান খোলেনি।অতঃপর আমরা আবার গাড়ি নিয়ে রওনা দিলাম মহাখালীতে।ওখান থেকে গাড়িতে গ্যাস নিবে।
বেশ কিছুক্ষণ জ্যাম ঠেলে মহাখালী গ্যাস পাম্পে পৌছালাম।কিন্তু বিশাল লাইন যা দেখে মনে হলো আজকে আর গ্যাস নেয়া সম্ভব নয়।পরে আমি ওকে বললাম যে আজকে তেলে চলো কালকে ভোরে বা আজকে বিকালে গ্যাস নিও।আমরা আবার ফেরত চলে আসলাম সিএসডি তে।ততক্ষণে নগদের দোকান খুলেছে।ও ১৪ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করলো।
তারপর একটু হেঁটে দেখলাম ভাগ্যকুলের একটি নতুন মিষ্টির দোকান খুলেছে।তখনই গাড়ি থেকে ফ্রেশ মিষ্টি নামানো হচ্ছে।এরকম পরিস্থিতিতে আসলে আমার যা হয়!!!আমি মোটেও লোভ সামলাতে পারি না। যেহেতু আজকে মোবাইল নেইনি তাই ভাগ্যকল মিষ্টান্ন ভান্ডারের সুদৃশ্য ডেকোরেশন আপনাদেরকে দেখাতে পারলাম না। নিশ্চয় আরেকদিন দেখাবো।
আমি বেছে বেছে বেশ কয়েকটি মিষ্টি দেখালাম।দু পিস করে দিতে বললাম।পার পিস হিসেবে দাম ধরতে বললাম।এছাড়া গরম গরম আমিত্তি ও পনিরের সমুচা এসেছে।পনিরের সমুচা আমার ভীষণ প্রিয়।দশটি দিতে বললাম। শুধু মিষ্টির দাম এসেছে ৮৫০ টাকা।আমি বেশ অবাক হয়ে গেলাম।আসলে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে মোট ৯৭০ টাকা বিল দিলাম।
এরপর নার্গিস বলল চলো তোমাকে কফি খাওয়াই।আমি বললাম যে আমি রং চা এনেছি। কিন্তু ও কিছুতেই রাজি হলো না।এরপর কফি শপে ঢুকে এক কাপ কফি খেলাম।যেহেতু বৃষ্টি পড়ছিল তাই হেঁটে আসতে আর পারলাম না ওর গাড়িতে করে স্কুলে এসে পৌছালাম।
দুপুরে বাসায় ফিরতে প্রায় দুইটা বেজে গেলো।গোসল করে নামাজ সেরে নিলাম।এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম।দুপুরে আসার সময় আমার হাজব্যান্ড আমার সেই অর্ডার করার প্রেসার কুকারটা নিয়ে আসলো।খুলে দেখলাম।বেশ ভারী মনে হলো।এতো ভারী এটাতে কিভাবে রান্না করবো এটাই ভাবছিলাম।
তবে মনে মনে ভীষণ খুশি হয়েছি। আসলে মহিলারা যত যাইই কিনুক না কেন সংসারের হাঁড়ি পাতিল পেলে মনে হয় সবচেয়ে বেশি খুশি হয়ে যায়।বিকেলে শসা খেতে খেতে পোস্ট লিখে ফেললাম।আজকের দিনটি আমার এভাবেই কেটে গেলো।সবাই ভালো থাকবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন।আল্লাহ হাফেজ।
.
দারুন মিষ্টান্ন খাবার।
মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আমার প্রচুর লোভ তাই এই খাবারগুলো অত্যন্ত লোভণীয় ছিল।
অবশ্যই কোন কাজ করতে হলে ভোরবেলা থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়।
খুব সুন্দর একটা দৈনিক কার্যক্রম আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খাবার গুলো আর লোভ সামলাতে পারছি না। মিষ্টি দেখলে আমি অনেক বাচ্চা শিশুর মত হয়ে যাই। মনে হয় সব মিষ্টি আমি একাই খাই। আমার বিশেষকরে কালোজাম মিষ্টি খুবই পছন্দা। কারন অন্যান্য মিষ্টির চেয়ে কালোজাম মিষ্টিার স্বাদ একটু অন্যরকম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার দেখানো খাবারগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। তবে আমরা যদি কোন কাজ করতে যাই তাহলে আগে আমাদের প্রস্তুতির প্রয়োজন।
কিছু সময় প্রস্তুতি ছাড়াও কিছু কাজ করা যায়।সুন্দর লেখাটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit