![]() |
---|
পূর্বের একটি পোস্টে আপনাদের সাথে বলেছিলাম যে আমার কিছু মেহমান আপ্যায়ন করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।কিন্তু শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে ৩০ জন মেহমানের আয়োজন ঘরে করা আমার জন্যে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছিল।সে জন্যই রেস্টুরেন্টে আয়োজন করা।সেই আপ্যায়ন টি ছিল আজকে শুক্রবার দুপুরে।
কিন্তু রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাওয়া হলেও বিকেলে চা আপ্যায়নের ব্যাপারটি ঘরেই ছিল।তাই সকাল থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।অনেকদিন আসলে ঘরের কোন কিছুর দিকে নজর দেয়া হয়নি। আজকে তাকিয়ে দেখলাম ঘরে অনেক ঝুল জমেছে।আর সবকিছু বেশ অগোছালো হয়ে আছে।
সকালের নাস্তা শেষ করে তাই কাজে নেমে পড়লাম।প্রথমে পুরো ঘরের ঝুলগুলো ডাস্টার দিয়ে পরিষ্কার করে নিলাম।এরপরে বিছানা পত্র গুছিয়ে ঘর বেশ সাজিয়ে নিলাম।ঘরে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ধূলা জমেছে।সেগুলো পরিষ্কার করে নিলাম।এরপর ঘর ঝাড়ু দিয়ে নিলাম।এগুলো করতে করতে প্রায় বারোটা বেজে গেল।এরপর ঘর মোছার খালাকে ফোন দিয়ে বললাম একটার মধ্যে এসে ঘরটা মুছে দিয়ে যেতে।
পৌনে দুইটার মধ্যে রেস্টুরেন্টে থাকতে হবে তাই খুব দ্রুত গোসল সেরে সবাই রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলাম।নাস্তা দেয়ার জন্য কাপ-পিরিচ, চামচ সহ সমস্ত জিনিস থেকে বের করে ধুয়ে ট্রলিতে গুছিয়ে রাখলাম।এদিকে দেড়টা বেজে গেলেও খালার কোন খবর নেই। আমি বের হয়ে যাওয়ার ঠিক পাঁচ মিনিট আগে উনি আসলেন ঘর মুছতে।
সত্যিই তখন মেজাজটা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল।উনাকে আমি এতবার অনুরোধ করার সত্ত্বেও উনি সময় মতো আসেননি।শেষ পর্যন্ত ঘর না মুছেই খালা চলে গেল।আমি অনুষ্ঠানের জন্য বের হয়ে গেলাম।রেস্টুরেন্ট আমার বাসার কাছে হওয়ায় পাঁচ মিনিটেই পৌঁছে গেলাম গিয়েছিলাম।
রেস্টুরেন্ট বায়তুল মোকাররমের উল্টোপাশে।ওখানে পৌঁছাতেই দেখলাম শত শত পুলিশ আর মুসল্লিদের আনাগোনা।আসলে প্রতি শুক্রবারে এখানে একটু গন্ডগোল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আজকেও বেশ কিছু মিছিল নিয়ে লোকজন বের হয়েছে।এর মধ্যে আমরাও পৌঁছে গেলাম।
রেস্টুরেন্টের ভেতরে আমাদের জন্য রিজার্ভেশন থাকলেও ওদের খোলা জায়গাটা দেখে মনটা একেবারে আনন্দিত হয়ে গেল।আমার ছেলেও ভীষণ খুশি হয়ে গেলো জায়গাটা দেখে।এদিকে আবহাওয়া টা খুব সুন্দর।বেশ কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে তাই ঠান্ডা আবার রোদ ও নেই।সব মিলিয়ে খুবই ভালো লাগছিল পরিবেশটি।
যদিও অতিথি আসতে একটু দেরি হচ্ছে কারণ তারা নামাজ শেষ করে তারপর আসবে। মেহমান আসতে আসতে প্রায় তিনটা বেজে গেলো।।কুশল বিনিময় করে আমরা একে অপরের সাথে বেশ কিছুক্ষণ ছবি তুলে নিলাম।এরপরে খাওয়ার পর্ব।
আমাদের এখানে রেস্টুরেন্ট গুলোতে ১০০ জনের নিচে বাংলা খাবার করতে রাজি হয় না। তাই বাধ্য হয়েছি আমরা চাইনিজ খাবার দিতে। তবে গরম গরম খাবার খুব একটা খারাপ লাগেনি।খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পরে উপহার বিনিময় চলল।নতুন বউ আসার সময় আমার ছেলে মেয়ের জন্যে কাপড় নিয়ে আসলো।আমিও অবশ্য ওর জন্য নায়রা কাটিং ড্রেস কিনে রেখেছি।
আজকে অতিথিদের একজনের জন্মদিন তাই তারা কেক নিয়ে এসেছিল।পরবর্তীতে আমরা সবাই মিলে কেক কাটলাম এবং কেক খাওয়া নিয়ে বেশ আনন্দ করা হলো।এরপর আমি খুব দ্রুত ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। কারণ মেহমানরা একটু পরেই সবাই বাসায় আসবে।
এসে চায়ের পানি চুলায় চড়িয়ে দিলাম।হাত মুখ ধুয়ে নাস্তার আয়োজন করতে লাগলাম। মিষ্টি ও ফল দিয়ে আপ্যায়ন করলাম।ওনারা ও আসার সময় অনেক মিষ্টি নিয়ে আসলেন।ঘর আজকে আমার মিষ্টিতে ভরে গেছে।এরপরে সবার জন্য চা বানানো হলো।চা আমার মেয়ে বানিয়েছে।মেহমানরা অনেকক্ষণ গল্প গুজব ও হাসি আনন্দ করার পরে প্রায় ৭:৩০ টার দিকে একে একে বের হয়ে গেল।
মেহমানদেরকে বিদায় দিয়ে আমি সবগুলো ক্রোকারিজ ধুয়ে মুছে শোকেসে তুলে রাখলাম। যেহেতু ঘর মোছা হয় নি তাই ঘর পরিষ্কার করে মপ দিয়ে মুছে দেওয়া হলো।এরপর ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নিতে বসলাম।বিশ্রাম নিতে নিতেই পোস্টটি লিখলাম।
[আজকের ছবিগুলো আমার মোবাইলেই তোলা। তবে কিছু ছবি ঠিক মত তুলতে না পারার কারণে রোটেট করতে হয়েছে।আর একটি ছবি স্ন্যাপশট দেওয়া।]
.