Incredible India contest by @sduttaskitchen|My all-time favorite food.

in hive-120823 •  last year 

আজকের প্রতিযোগিতার বিষয়টি অত্যন্ত চমৎকার। আমি কখনোই শুকনো বা রোগাপটকা ছিলাম না। আর এতেই বোঝা যায় যে খাবার আমার কতটা প্রিয়। আমি খেতে ভালবাসি এবং খাওয়াতেও ভালোবাসি। এ কারণে সব সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার আমি তৈরি করার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন এলাকার নতুন নতুন খাবারের সন্ধান যদি পাই তাহলে আমি সবসময় তা নিজে তৈরি করার চেষ্টা করি। তবে এত খাবারের ভিড়ে আমার পছন্দের খাবার কিন্তু সেই আমার আঞ্চলিক খাবারই। শৈশব থেকেই এটি আমাদের নাস্তার প্রধান খাবার। আজও আমি এটি পছন্দ করি এবং খুব আনন্দের সাথে ঘরে তৈরিও করি। আজকে আপনাদের সাথে তাই শেয়ার করছি।

তবে মূল লেখায় যাওয়ার আগে আমি @yoyopk, @shasan795 এবং @sanaula আমার শ্রদ্ধাভাজন এই তিনজন স্টিমিয়ানদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনারা ও সর্বকালের প্রিয় খাবার সম্পর্কে নিজস্ব মতামত শেয়ার করুন।

😎আপনার সর্বকালের প্রিয় খাবার সম্পর্কে আপনার মতামত শেয়ার করুন।

[Picture taken by Vivo 19]

আমার সর্বকালের প্রিয় খাবার নিয়ে কথা বলার অনেক কিছুই আছে। এই খাবারটি আমার শৈশবের সাথে একেবারে মিশে আছে। প্রতিদিনই সকালবেলা মাটির চুলার পাশে গরম গরম পিঠা খাওয়ার যে স্মৃতি তা আজকাল শহরে ফ্ল্যাট বাসায় একেবারে খুঁজে পাই না। এ কারণে খাবার টি খেতে সুস্বাদু লাগলেও আগের মতো আনন্দ আর পাই না।তবে নিশ্চয়ই এই আনন্দ এখন আমার বাচ্চারা পেয়ে থাকে।

😎আপনার সর্বকালের পছন্দের তালিকায় সেই খাবারটি কেন? ব্যাখ্যা কর।

আমার সর্বকালের পছন্দের খাবারের তালিকা প্রথম খাবারটি হচ্ছে নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী খোলা জালি পিঠা।কারণ এটি মা বানাতেন।আর এজন্যই এর স্বাদ যেন অতুলনীয় ছিল। তবে এই পিঠাটি আমার বাবার বাড়ি নোয়াখালী থেকেও শ্বশুর বাড়ি ফেনীতে বেশি জনপ্রিয়। সেখানে এটাকে খোলাজা পিঠা বলা হয়। সাধারণত পিঠা শীতের সময় বানানো হলেও এই খোলাজালি পিঠাটি আমাদের নোয়াখালী, ফেনী অঞ্চলে প্রায় সারা বছরই তৈরি করা হয়।এটি মূলত সকালে নাস্তা হিসেবে খাওয়া হয়। এটি দেখতে কিছুটা পাটিসাপটা পিঠার মত। তবে পাটিসাপটা পিঠার মতো এই পিঠায় ভাঁজ করা হয় না। এটা বানানো খুব সহজ এবং একবার গোলা তৈরি করে তিন-চার দিন রেখে বানানো যায়। এটি রুটি বানানোর মতো কষ্টসাধ্য নয়। আর রুটির বানানোর যেমন অনেকগুলো ধাপ আছে এখানে এরকম ঝামেলা নেই। এটি চুলায় দিয়ে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যেই একটি পিঠা বানানো যায়।এ সকল সুবিধার কারণেই আমার রুটি, পরোটার চাইতে ও খোলাজালি পিঠা বেশি পছন্দের।

😎আপনার প্রিয় খাবারের পিছনে কোন গল্প থাকলে শেয়ার করুন।

[Picture taken by Vivo 19]

খোলাজালি পিঠা নিয়ে আমার জীবনে একটি অন্যরকম অভিজ্ঞতা আছে। বাবার বাড়িতে থাকতে খোলাজালি পিঠা আমি শুধু খেতেই পারতাম, বানাতে পারতাম না।কিন্তু বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে খোলাজালি পিঠা বানানোর দায়িত্ব একদিন আমার ওপর এসে পড়ল। আমি দক্ষ ছিলাম না বটে তবে মা কিভাবে করতো সেটা দেখেছিলাম। আমি সেভাবেই বানানোর চেষ্টা করছিলাম কিন্তু পিঠা বানানোর সময় কোনভাবেই পিঠাটি হচ্ছিল না। পরে জানলাম,আসলে খোলাজালি পিঠার গুড়ি গোলানোর মধ্যে রয়েছে যত রকমের দক্ষতা।

আমার মা সবসময় ভেজা গুড়ি দিয়ে এ পিঠাটি বানাতেন এ কারণে তার পিঠার মধ্যে ডিমের প্রয়োজন হতো না। পিঠার গুড়িকে খুব জোরে জোরে হাত দিয়ে ফেটে নিতেন। এতে খুব সহজেই পিঠাটি নরম হত এবং কাঙ্খিত সুন্দর জালি হতো।

[Picture taken by Vivo 19]

আর আমার শ্বশুর বাড়িতে এই পিঠা বানানো হয় শুকনো চালের গুড়ি ও হাঁসের ডিম দিয়ে। তবে ডিম দেওয়ার আগে তারা কুসুম গরম পানি দিয়ে খুব ভালো করে কয়েকবার ফেটে নিতো। এখানে তারা তিন রকম মাত্রার গরম পানি ব্যবহার করে যেটা আমি কখনো জানতামই না ফলে শুকনো গুড়ি আমি ঠান্ডা পানি দিয়ে গুলিয়ে ডিম ছাড়াই বানানোর বৃথা চেষ্টা করছিলাম।আর এ কারণে আমার পিঠাটি হচ্ছিল না। এটা নিয়ে বাড়িতে সবাই অনেক হাসাহাসি করেছিল।পরে আমার বড় ননাস আমাকে হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন এবং শিখিয়ে দিলেন কিভাবে আসলে চালের গুড়ির কারণে পিঠার গোলা বানানোর ধরন ভিন্ন হবে। এখন তো আমি শুকনো গুড়ি, ভেজা গুড়ি বা গ্যাসের চুলায় সব রকম ভাবে বানাতে পারি। আসলে সঠিক নিয়মকানুন না জানলে মানুষ অনেক সহজ কাজও করতে পারেনা। অন্তত এই জিনিসটা আমি খোলাজালি পিঠা বানাতে গিয়ে শিখেছিলাম।

😎 আপনি কি কখনও বাড়িতে আপনার পছন্দের খাবার তৈরি করার চেষ্টা করেন? আপনি আমাদের সাথে রেসিপি শেয়ার করতে পারেন (ঐচ্ছিক)

[Picture taken by Vivo 19]

আমি বেশ কিছুদিন আগেই খোলাজালি পিঠা তৈরি করেছিলাম। মাটির কড়াইতে এই পিঠাটি খুব সুন্দর ভাবে হয়। পিঠাটি আমি খেজুরের ঝোলা গুড়, সরিষা ভর্তা ও গরুর মাংসের সাথে বাসায় পরিবেশন করেছিলাম। খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করবো অবশ্যই রেসিপি অনুযায়ী বাড়িতে একবার চেষ্টা করে দেখবেন।

উপকরণ: চালের গুঁড়ি ২কাপ,ডিম ২টি, পানি+লবণ পরিমাণমতো।

১। প্রথমে চালের গুঁড়ি কুসুম গরম পানি দিয়ে মোটামুটি পাতলা গোলা তৈরি করে নিন। তবে তবে এর মধ্যে একবার খুবই সামান্য পরিমাণে টাটকা গরম পানি দিয়ে গুলিয়ে নিন। এতে করে পিঠাটি বেশ নরম হবে।

২।পিঠার গোলা ঘন মনে হলে অল্প অল্প করে পানি মিশিয়ে গোলাটা পাতলা করে নিবেন।

৩। পিঠার গোলা কিছুক্ষণের জন্য ঢেকে রেখে দিন। এরপর চুলায় মাটির খোলা গরম হতে দিন।

[Picture taken by Vivo 19]

৪। গোলার মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে দিন। এরপর একটি একটি করে ডিম দিন। তবে ডিম পুরোপুরি মিশিয়ে দেবেন না, হালকা করে ভেঙে দিন।

৫। খোলা ভালভাবে গরম হয়ে গেলে গরম খোলায় বড় চামচের দেড় চামচ গোলা দিয়ে খোলা ঘুরিয়ে পিঠা ছড়িয়ে দিন।

৬। এরপর ঢাকনা দিয়ে পিঠা ঢেকে দিন। ১০-১৫ সেকেন্ড পর ঢাকনা তুলে দিন। পিঠার চারপাশ খোলা থেকে উঠে আসা শুরু হলে পাতলা খুন্তি দিয়ে পিঠা তুলে নিন।

৭। এভাবে সবগুলো পিঠাগুলো তৈরি করে নিন। খেয়াল রাখবেন পিঠার গোলা যাতে ঘন না হয়ে যায়। পিঠা তৈরির সময় গোলা ঘন মনে হলে আবার অল্প করে পানি মিশিয়ে নিবেন।

৮।এই পিঠা মাংস, আলুভাজি বা ঝোলাগুঁড়, শুঁটকি ভর্তা, মরিচ ভর্তা ইত্যাদির সাথে খুবই উপাদেয়।

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য! এরপর দেখলাম আপনি আপনার পছন্দের খোলাজালি পিঠা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

আমি যখন আমার শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে যাই,, মাঝে মাঝে মা এই পিঠা তৈরি করে। এই পিঠা হাঁসের মাংস,, ভর্তা এবং নারিকেল দিয়ে খেতে,,অনেক বেশি মজা লাগে।

আজকে আপনি আমাদের সাথে এই পিঠা তৈরি করার রেসিপিটাও শেয়ার করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,,,,, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভালো থাকবেন।

আজকের এই প্রতিযোগিতায় আপনি আপনার প্রিয় খাবার নিয়ে লিখেছেন। সেখানে আপনি বলেছেন আপনার সবচেয়ে প্রিয় খাবার হল খোলাজালি পিঠা। যে পিটা আপনি শৈশব থেকে খেয়ে আসতেছেন আমাদের অঞ্চলে এই পিঠাকে বলা হয় চেতপিঠা।

আপনি এই পিঠা নিয়ে আরো অনেক বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং আপনার কিছু ঘটনাও শেয়ার করেছেন। এটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।

আপনার চিতল পিঠা গুলো দেখে আমার খেতে খুব ইচ্ছে করছে। এই চিতুল পিঠে আমার মাংস দিয়ে খেতে খুব ভালো লাগে ।ভর্তা দিয়ে ও বেশ ভালো লাগে।আমি প্রায় এটি বানিয়ে খাই। ধন্যবাদ আপু ।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।