চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন (Chittagong Armoury Raid)

in hive-120823 •  last year  (edited)

সকল সদস্যকে জানাই নমস্কার 🙏🏾

সূর্য সেন-এর নেতৃত্বে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল ছিল সংঘটিত কয়েকজন স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীর প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ পুলিশ ও সহায়ক বাহিনীর চট্টগ্রামে অবস্থিত অস্ত্রাগার আক্রমন।

Surya_Sen_before_1934.jpg
উইকিপিডিয়া

সূর্য সেন ছাড়াও এই দলে ছিলেন গণেশ ঘোষ, নরেশ রায়, লোকনাথ বল, ত্রিপুরা সেনগুপ্ত, নির্মল সেন, অনন্ত সিং, অপূর্ব সেন, অম্বিকা চক্রবর্তী, মতিলাল কানুনগো, বিধুভূষণ ভট্টাচার্য, শশাঙ্কশেখর দত্ত, মধুসূদন দত্ত, অর্ধেন্দু দস্তিদার, হরিগোপাল বল, প্রভাসচন্দ্র বল, তারকেশ্বর দস্তিদার, জীবন ঘোষাল, আনন্দ গুপ্ত, নির্মল লালা, জিতেন দাসগুপ্ত, পুলিনচন্দ্র ঘোষ, সুবোধ দে, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এবং কল্পনা দত্ত। মোট ৬৪ জন বিপ্লবী এই আক্রমণে অংশ গ্রহণ করেন।

এই আক্রমণের উদ্দেশ্য অস্ত্রাগার লুঠ এবং তার যোগাযোগ ও রেলপথ বিচ্ছিন্ন করা।

ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি দল তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে অস্ত্রাগার দখল, তার ও বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং রেল লাইন ভেঙ্গে ফেলতে সফল হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোন গোলাবারুদ স্টোর সনাক্তকরণের অসমর্থ হন। তিনটি দল অস্ত্রাগারে সমবেত হয়ে মাষ্টার দাকে মিলিটারি সেলুট প্রদান করে । সূর্যসেন পতাকা উত্তোলন করেন এবং অস্থায়ী স্বাধীন সরকার ঘোষিত হয়। বিপ্লবীরা সেই রাতে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চট্টগ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান।

২২ এপ্রিল জালালাবাদ আশ্রিত বিপ্লবীদের কয়েক হাজার বৃটিশ সৈন্য ঘিরে ফেলে। প্রচন্ড যুদ্ধে প্রায় ১০০ জন বৃটিশ সৈন্য ও ১৪ জন স্বদেশী বিপ্লবী মারা যান। বাকিরা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পাশের গ্রামে গা ডাকা দেন। ১৯৩২ সালে এদের কয়েক জন কলকাতায় চলে আসে এবং বিপ্লব চালিয়ে যান।

চট্টগ্রামের_জালালাবাদ_যুদ্ধের_শহীদবৃন্দ.jpg উইকিপিডিয়া
চট্টগ্রামের জালালাবাদ যুদ্ধের শহীদবৃন্দ

ব্রজেন সেনের নিজের ভাই নেত্র সেনের বিশ্বাসঘাতকতায় সূর্য সেন ও ব্রজেন সেন পুলিশের হাতে সশস্ত্র ধরা পরেন।

সূর্য সেনের শেষ আদেশ তার ভাই ও বিপ্লবী জওয়ানদের উদ্দেশ্যে

"আমিও ফাঁসি চাই। আমার ফাঁসি হবে। তোমরা রইলে। জেল থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করবে। ধলঘাটের বিশ্বাসঘাতকতা নিরক্ষর গ্ৰাম্য লোকের দ্বারা হয়েছিল বলে ক্ষমা করেছি। এবারের বিশ্বাসঘাতকতা যেন কিছুতেই ক্ষমা না পায়। আমাদের দুর্বলতা যেন প্রকাশ না পায়। এতে বিপ্লবী কাজের খুব ক্ষতি হবে। "

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ১২ জানুয়ারি ১৯৩৪ সূর্য সেনের ফাঁসি হয়।

Hangplatformstone.jpg উইকিপিডিয়া
সুর্য সেন কে ফাঁসি দেয়ার স্থানের স্মৃতিফলকের চিত্র

কলকাতায় পরবর্তী কালে গনেশ ঘোষের একান্ত প্রচেষ্টায় 'বিপ্লব তীর্থ চট্টগ্রাম স্মিতি সংস্থা' ও 'সূর্য সেন ভবন' প্রতিষ্ঠা হয়। দীর্ঘ দশ বছরের
কেস চলার পর বাংলাদেশ কোর্ট সূর্য সেনকে ন্যাশনাল হিরো ঘোষণা করে তার বাড়ি দখল মুক্ত করে। সূত্র মাস্টারদার ভিটা উদ্ধারে মামলা চালিয়েছি : বিনোদ বিহারী

আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্ট টি পরে, অনেক অজানা তথ্য যানা গেল ।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Loading...

আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর পরিবার ও নিজের খেয়াল রাখবেন।

আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

ছোট বেলায় মাস্টারদা সূর্য সেন নিয়ে একটা বই পড়েছিলাম আজ আর সেই বইয়ের নামটা মনে নেই।তাকে নিয়ে এত সুন্দর একটা লেখা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আমার পোস্টটা আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।