সকল সদস্যকে জানাই নমস্কার 🙏🏾
ধৌলি শান্তি স্তূপ ভারতের ৭ টি স্তূপের মধ্যে আরেকটি, দয়া নদীর তীরে ধৌলি পর্বতের উপরে অবস্থিত। ধৌলি পর্বত কলিঙ্গ যুদ্ধ ক্ষেত্র (২৬১ খ্রীষ্ট পূর্ব ) বলে চিহ্নিত। এই স্তূপটি ১৯৭২ সালে কলিঙ্গ যুদ্ধের স্মরণে জাপানি বুদ্ধ সংঙ্ঘ ও কলিঙ্গ নিপ্পন বুদ্ধ সংঙ্ঘের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়। লম্বা আকৃতির ডোম আকারে এই উজ্জ্বল সাদা স্তূপটি তৈরি করতে সময় লেগেছিলো দুই বছর। এটি ভুবনেশ্বর শহরের দক্ষিণে আট কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। বৌদ্ধ পূর্ণিমা তিথিতে এখান অনেক পর্যটক প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আগমন হয়।
এই স্তূপে পাথরে খোদাই করা বুদ্ধের নানা ভঙ্গিতে চারটি বিশাল মূর্তি আছে। বুদ্ধের পায়ের ছাপ ও বুদ্ধ গাছ দেওয়ালে খোদাই করা আছে এবং একটি বুদ্ধের মূর্তির পাদদেশে অশোক তার তলোয়ার রেখে দন্ডায়মান যা কিনা অশোকের অহিংস মননশীল ভাব প্রকাশ করে।
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে তিন দিন ব্যাপী কলিঙ্গ ধর্ম মহোতসব হয়। লেজার রশ্মি দ্বারা একটি ৪৫ মিনিটের শোতে কলিঙ্গ যুদ্ধে বিবরন দেখানো হয়।স্তূপের ঠিক পিছনে একটা শিব মন্দির আছে।
কলিঙ্গ যুদ্ধের পর মর্মান্তিক রক্তপাত, মৃত্যু ও দুর্দশায়, সম্রাট অশোকের গভীর অনুশোচনা হয়। তিনি বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন ও বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক হন। সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ধর্ম প্রচারের ব্যবস্থা করেন। চন্দ্র অশোক ধর্ম অশোকে রুপান্তরিত হন। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক নিজেও অনেক স্তূপ তৈরি করেছিলেন যার ধংসাবশেষ দেখা যায়।
স্তূপে উঠার রাস্তায় অনেক শীলা আদেশ আছে যেগুলি সম্রাট অশোকের মানসিক পরিবর্তনের জীবন্ত শাক্ষ্য। পাথর খোদাই করা হাতিটি উড়িষ্যার প্রাচীনতম ভাষ্কর্য। অশোক কর্মকর্তাদের জন্য নির্দেশাবলী পাথরে খোদাই করেছিলেন, জনসাধারণের জন্য দন্ডনীতির মূল নীতিগুলোকে ব্যাখ্যা করেছিলেন। সম্রাট আশোকের ঘোষণাগুলি দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে ধৌলির পাথরে প্রাকৃত ভাষায় লিপিবদ্ধ করা রয়েছে।
ধৌলি পাহাড় থেকে একটি পাখির চোখের দৃশ্য দেখা যায় ভুবনেশ্বর শহরের ও দয়া নদীর।
যদিও বুদ্ধ উড়িষ্যার কোনদিন পদার্পন করেনি তবুও এখানে ২০০ বৌদ্ধ দর্শনীয় স্থান আছে। ভদ্রক ও বালাশোরে অনেক ছোট ছোট বুদ্ধ মূর্তি ও শীলা আদেশ পাওয়া যায়। ধৌলির পর গ্যাঞ্জাম জৌগদা পাহাড়েও অশোকের অনেক শীলা আদেশ পাওয়া যায়।ললিতাগিরি,উদয়গিরি, রত্নগিরি ও বৌদ্ধ স্থান হিসেবে প্রসিদ্ধ।
গত অক্টোবরে ধৌলি শান্তি স্তূপের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি শান্তি পদ যাত্রা আয়োজন করা হয় তাতে প্রায় একশ বৌদ্ধ সাধু সন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ গ্রহন করে। শান্তি স্তূপটি রক্ষার জন্য উড়িষ্যার সরকার ₹১৮৭ লক্ষ অর্থ ধার্য করেছিল।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Dhauli
আমার ব্লগটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ