নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। বেশ এক মাস হল আমি বাড়িতে কেকের একটা ছোট বিজনেস শুরু করেছি। এতদিন নিজের জন্যই কেক বানাতাম এবং নিজেই কেক খেতাম। না না আমি এতটাও স্বার্থপর নই, সবাই মিলে মিশে ভাগাভাগি করে খেতাম।
কিন্তু হঠাৎ করে কিছু কাছের মানুষের আবদারে আমার এরকম একটা ছোট বিজনেস। আমি কখনোই ভাবিনি।এরকম কিছু করব। তবে ইচ্ছা ছিল যখন ভবিষ্যতে আরো ভালো জায়গায় পৌঁছতে পারবো, নিজের জমানো টাকা থেকে নিজের একটা বেকারি খুলবো।
এই মাসের মধ্যে মোটামুটি দশটা কেক বানিয়ে ফেলেছি। সবকটা কেকের ক্ষেত্রেই স্টেপ বাই স্টেপbছবি তুলে রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে প্রথমবার যখন অর্ডার পেলাম , আমি স্টেপ বাই স্টেপ সব ছবি তুলে রেখেছিলাম। শুধুমাত্র আপনাদের সাথে শেয়ার করবো বলে। কেক অর্ডার নেওয়ার কথা কখনও মাথাতেই আসে না কারণ সারাদিন এত ব্যস্ততা থাকে। তার ওপর পড়াশোনার চাপ।
তবে এখন থেকে ঠিক করেছি মাসে ৫-৬ টার বেশি কেক তৈরি করব না। কারণ কেক তৈরি করতে গেলে সমস্ত দিনটা নষ্ট হয়ে যায়। আমি যে কদিন কেক তৈরি করেছি আমার পক্ষে শোরুমে দেখাশোনা করা সম্ভব হয়নি। এমনকি আমার পড়ার ক্ষতি হয়েছে।
সেই সমস্ত কিছু মাথায় রেখে কেক অর্ডার পুরোপুরি ভাবে নেব না এটাই ঠিক করা হয়েছে। প্রথম অর্ডার আমাকে মৌসুমী বৌদি দিয়েছে। বৌদির মামার বাড়ি আমাদের কাছাকাছি। মামার বাড়িতে ওর মামার মেয়ের জন্মদিন ছিল। ও আমাকে বলেছিল দুই থাক অর্থাৎ টু টায়ার এর কেক করে দিতে। প্রথমে আমি ওকে বারণ করেছিলাম।
আমার পরিচিত অনেকেই এই বিজনেস করে ,তাদের হোম বেকারী রয়েছে। তাই আমি ভেবেছিলাম ওদের কাছ থেকে কেক তৈরি করে আমি বৌদিকে দেব। কিন্তু বৌদি তাতে রাজি নয়। আমাকেই বানিয়ে দিতে হবে। আর বৌদি জানে আমার কেক কতটা ভালো খেতে হয়। নিজের প্রশংসা নিজে করছি এটা নিয়ে কেউ খারাপ ভাববেন না।তবে আসলেই আমার হাতের কেক আমার নিজের তো খুবই পছন্দের।
বৌদির কথা ফেলতে না পেরে প্রথম কেক অর্ডার ধরলাম। আর কেক তৈরি করতে শুরু করে দিলাম। আমি কেকের সমস্ত প্রসেসটাকে তিন ভাগে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কেক কেমন করে তৈরি করলাম। তারপরে ডেকোরেশনের এবং ক্রিমের পরপর কাজগুলো দুটো পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করব। আসলে একটা পোস্টে এতগুলো ছবি দিয়ে শেয়ার করতে আমার নিজেরও ভালো লাগেনা।
তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করে দিই। এই কেক টার ক্ষেত্রে যেহেতু আমার দু পাউন্ডের ওপর হাফ পাউন্ডের কেক বসবে ,সেই অনুযায়ী আমি পরিমাপ রেখেছি। উপকরণগুলো সেই অনুযায়ী হয়েছে। যেহেতু দু পাউন্ড এবং হাফ পাউন্ড কেকের মিশ্রণটি একসাথেই তৈরি করেছি ,তাই সেই পরিমাণ মতনই আমাকে করতে হয়েছে।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | ময়দা | ৪৫০ গ্রাম |
২ | কোকো পাউডার | ৪ চামচ |
৩ | সাদা তেল | ৩/৪ কাপ |
৪ | দই | দুই চামচ |
৫ | দুধ | পরিমাণ মত |
৬ | গুড়ো চিনি | এক কাপ |
৭ | বেকিং পাউডার | ৩ টেবিল স্পুন |
৮ | বেকিং সোডা | ১/৪ টিস্পুন |
প্রথম ধাপ
প্রথম ধাপে একটা পাত্রে নিয়ে নিতে হবে ময়দা। আমি এখানে ৪৫০ গ্রাম ময়দা ব্যবহার করেছি। সাথে দিচ্ছি কোকো পাউডার।
দ্বিতীয় ধাপ
দ্বিতীয় ধাপে দিয়ে দিচ্ছি চিনির গুঁড়ো। এখানে আমার এক কাপ মত চিনির গুঁড়ো লেগেছে । ভালোভাবে সমস্ত কিছু মিশিয়ে নিলাম।
তৃতীয় ধাপ
৩/৪ কাপ সাদা তেল এবং তিন চামচ দই দিলাম। আবারো দই এবং সাদা তেলের সাথে শুকনো মিশ্রণগুলো মিশিয়ে নেব।
চতুর্থ ধাপ
এবার দুধ দিয়ে দিয়ে ব্যাটারটাকে পাতলা করে নেব। কতটা পরিমাণ দুধ লাগবে, তা আপনারা নিজেরাই বুঝে যাবেন। কেকের ব্যটার খুব পাতলা আবার খুব বেশি গাঢ় হয় না।
পঞ্চম ধাপ
এবার সবশেষে বেকিং পাউডার এবং বেকিং সোডা পরিমাণ মতন দেব। তারপর আবার ভালোভাবে মিশিয়ে নেব।
ষষ্ঠ ধাপ
দুটো কেক টিন সাদা তেল দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিতে হবে। তারপর কাগজ বসিয়ে দেব। কাগজের চারিদিকেও তেল মাখিয়ে নেব এবং তার মধ্যে কেকের মিশ্রণটা ঢেলে দেব
সপ্তম ধাপ
আমি এখানে আমার দুটো কেকটিনেই কেকের ব্যাটার ঢেলে নিয়েছি।
একটা দু পাউন্ডের জন্য ,একটা হাফ পাউন্ডের জন্য।
অষ্টম ধাপ
দুটো কড়াই ওভেনে দুদিকে বসিয়ে পাঁচ মিনিট লো ফ্লেমে প্রি হিট করে,তারপর পাত্র দুটো বসিয়ে দেবো কড়াইয়ের মধ্যে। একদম ধিমি আঁচে ৪৫ মিনিট রেখে দেব। বেক হবে ।
তৈরী
৪৫ মিনিট পর আপনারা আলাদাই একটা গন্ধ পাবেন। তখনই একটা কাঠি দিয়ে দেখে নেবেন কেকের ভেতর ঢুকিয়ে যে কোনরকম পাতলা তরল পদার্থ কাঠির গায়ে লাগছে কিনা। যদি না লাগে কাঠি শুকনো বার হয়ে আসে। জানবেন কেক রেডি হয়ে গেছে। তারপর কেক টিন থেকে কেকটা তুলে নেবেন। তুলে নেওয়ার সময়, চাকু দিয়ে চারিদিকটা একবার ছাড়িয়ে নেবেন।
আশা করছি আমি যেমন করে বুঝিয়েছি তাতে একটা টু টায়ার কেক আপনারাও তৈরি করতে পারবেন। হ্যাঁ অবশ্যই পরবর্তী পোস্টগুলো আপনাদের দেখতে হবে এই কেক সংক্রান্ত। আর আবারও বলছি আমি এখানে নিচের কেকটি জন্য দুই পাউন্ড এবং উপরের জন্য হাফ পাউন্ড রেখেছি। পরবর্তী ডেকোরেশনের পোস্টগুলি অবশ্যই ফলো করবেন ,আপনাদের ভালো লাগবে। সকলে ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার কেক রেসিপিটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। কেক বানানোর প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। যার মাধ্যমে আমরা যে কেউ খুব সহজে কেক তৈরি করতে পারব।
আপনার কেক তৈরির প্রক্রিয়াটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit