বাবার জন্মদিন - ১ম পর্ব

in hive-120823 •  17 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি কিছু সুন্দর মুহূর্ত।
কিছুদিন আগেই আমি একটা হোয়াইট চকলেট কেক রেসিপি শেয়ার করেছিলাম। আমি জানিয়েছিলাম হোয়াইট চকলেট কেক রেসিপিটি আমার আগে জানা ছিল না। একেবারেই প্রথমবার ওই কেকটা আমি বানিয়েছি। সাথে আমি বলেছিলাম কেকটা আমার বাবার জন্মদিন উপলক্ষে বানানো। যাই হোক ভাবলাম এবার বাবার জন্মদিনের সেলিব্রেশন টা নিয়ে আজকে আপনাদের সকলের সাথে মুহূর্তটা ভাগ করে নিই।

1000189547.jpg

আসলে আমাদের মা-বাবার সময়ে এই জন্মদিন নিয়ে এত মাতামাতি ছিল না।। বলতে গেলে হয়তো একটু বাড়িতে পায়েস রান্না করে দেয়া হতো অথবা পাঁচ বছরে কিছু কিছু বাড়িতে বেশ সুন্দরভাবে রান্নাবান্না করে দেয়া হতো।। কিন্তু এখন জন্মদিন নিয়ে যে মাতামাতিটা আমাদের সকলের মধ্যে রয়েছে সেটা কিন্তু আগেকার যুগে থাকত না। ছোটবেলা থেকে আমার বাবাও সেরকম মহল পায়নি।

1000189541.jpg

ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে শুনেছি , দাদু পুলিশের চাকরি করতো। আর বাড়িতে যেহেতু বাবারা ছিল দুই ভাই আর চার বোন, সে কারণে সকলকে একসাথে ট্যাকেল করা খুবই অসুবিধার ছিল। বাবার কাছ থেকেই শুনেছি ছোটবেলায় দাদুর বড় প্যান্ট কেটে হাফ প্যান্টের মতো বানিয়ে বাবা পড়তো। এমনকি দাদুর জামাকাপড় সেলাই করেও পড়তে শুনেছি বাবাকে। এতগুলো ভাই বোন মিলে বেশ ভালোভাবেই বাবার ছোটবেলা কেটেছে। বাড়িতে হয়তো আর্থিক দিক দিয়ে সেই সচ্ছলতা ছিল না। কিন্তু তারপরেও আনন্দ ছিল।

1000189544.jpg

যবে থেকে আমি একটু বড় হয়েছি। নিজে কিছুটা টাকা নিজের জন্য জমাতে শিখেছি। তবে থেকেই বাবার জন্মদিনে ছোটখাটো করে আয়োজন করার চেষ্টা করি। আমার মনে আছে প্রথমবার যখন বাবার জন্য আয়োজন করেছিলাম। বাবা এত ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিল, খেতে বসে রীতিমত বাবার চোখ দিয়ে জল পড়ছিল। কারণ ছোটবেলায় বাবা এসব কিছুই পায়নি। আমার ঠাকুমা জন্মদিনে কারোর জন্য পায়েসও তৈরি করেনি। ওই যে বললাম তখনকার দিনে এসব নিয়ে মাতামাতি ছিল না।।

1000189550.jpg

কিছু কিছু মা-বাবা আছে তারা এখনও, নিজেদের জন্মতারিখ বা সাল ঠিকঠাক বলতে পারেনা। এমনকি আমার ঠাকুমা দাদুর ক্ষেত্রেও অতগুলো ছেলে মেয়ের জন্ম তারিখ আর সাল মনে রাখা সম্ভব ছিল না।। আমি যখন জিজ্ঞেস করতাম, তখনো ওরা সঠিক না বলে কোনরকম একটা সময় বলতো। মাস না বলতে পারলেও বলতো ,বর্ষার সময় হয়েছে। অথবা বলতো পূজোর সময় অথবা শীতের সময়।

যাইহোক এই ব্যাপারগুলো আগে ছিল না বলেই, কখনো আমার বাবাও জন্মদিনের অনুষ্ঠান নিয়ে মাতামাতি করেনি। কিন্তু যবে থেকে আমি বড় হয়েছি আমি সমস্ত রকম আয়োজন করি। ঠাকুরমা এতদিন দেয়নি তো কি হয়েছে, প্রথমবার আমি মাকে বলেছিলাম পাঁচ রকম পদের রান্না করে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে বাবাকে খেতে দিতে জন্মদিনের দিন। সাথে পায়েশ। এর সাথে কেক। আমার মনে আছে এখনো প্রথমবার বাবা এসব পেয়ে ভীষণ ভীষণ খুশি হয়েছিল। আর বলেছিল আমি ছোটবেলা থেকে কখনো এরকম পাইনি।।

IMG-20241225-WA0033.jpg

যাই হোক এখন ঠাকুমা নেই। আমি তো আছি। মা আছে ভাই আছে। এই ছোটখাটো আনন্দ গুলো অনেক ম্যাটার করে। এই আনন্দগুলো আরেকবার আমাদের কাছের মানুষ গুলোকে বুঝিয়ে দেয় যে সে একা নয়। তার ফ্যামিলি আছে। তার ছোটখাটো সংসারে দুটো সন্তান আছে। স্ত্রী আছে। সে কোথাও একা নেই। সুখে দুঃখে তার পরিবার তার সাথে সময় আছে। আমার মনে হয় আমাদের পরিবারের আমাদের বাবা-রা যে পরিমাণে নিজেদের ভূমিকা দিয়ে থাকেন, তাদের জন্য এটুকু করা যেতেই পারে।

যাইহোক, আজকে এখানে শেষ করছি। পরবর্তী পোস্টে বাকিটা শেয়ার করব।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...
Loading...

Avengers_Allies_Team._2.png

আমার তরফ থেকে কাকুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়নি। এই প্লাটফর্মের মাধ্যমেই জানালাম জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা। আগের বছর এই দিনটাকে খুবই মাতামাতি করেছিলাম কিন্তু এই বছরে ব্যস্তই থাকার কারণে একদমই মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল যখন রাতের বেলায় খাবার দিতে গেছিলে তখন মনে পড়েছিল আজকে কাকুর জন্মদিন ছিল। যাইহোক পরের বছর আবার সকলে মিলে কাকুর জন্মদিন সেলিব্রেট করব। তোমার বানানো কেকগুলো খুব সুন্দর হয়েছিল।

@isha.ish জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা এবং প্রণাম জানাই তোমার বাবাকে।
একজন পিতার সবচাইতে বড় পাওনা হল যদি সন্তান মানুষের মতো মানুষ হয়, আর সেদিক থেকে উনি পিতা হিসেবে স্বার্থক।

আর একজন সন্তানের সবচাইতে বড় পাওয়া তার পাশে থাকা তার মা বাবার অবস্থান।
বাকি পাওয়া না পাওয়ার খেদ চিরদিন মানুষের সঙ্গে ছিল এবং থাকবে।

তোমার বাবার জন্য একজন যোগ্য কন্যার যে ভূমিকা তুমি পালন করেছো সেটা আমার মন ছুঁয়ে গেছে।

চিরদিন পরিবারের প্রতি তোমার দায়বদ্ধতা এবং ভালোবাসা অক্ষুন্ন থাকুক এই কামনা করি।