নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। কমিউনিটিতে আমাদের দিদি এত সুন্দর একটা কনটেস্টের আয়োজন করেছে, কনটেস্ট এর টপিক দেখার পর আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। যেদিন কে দেখেছি সেদিনকেই ব্রাশ পেন আর খাতা নিয়ে বসে পড়েছিলাম।
আমার খুব ইচ্ছা ছিল আরো অন্যভাবে নিজের ক্রিয়েশনটা তুলে ধরার। গ্লাস পেইন্টিং, জলরং, ফেব্রিক প্রিন্ট, অথবা অন্যান্য আরো কাজের মাধ্যমে।
কিন্তু সত্যি বলতে আমার এই শুক্রবার পরীক্ষা। যে নেট পরীক্ষা ক্যান্সেল হল, সেই পরীক্ষা আবার হতে চলেছে এই শুক্রবার।তাই অতটা সময় নিয়ে কাজ করতেই পারলাম না। কিন্তু আমি যে ছবিটি এঁকেছি সেটি আমার নিজের কাছে খুব পছন্দের হয়েছে।
সত্যি বলতে আমার পছন্দের রং হলো হলুদ এবং সবুজ। হলুদ রং আমি ভীষণ পরিমাণে পছন্দ করি। আমি হলুদ এবং সবুজ রঙের জামা কাপড় পড়তেও খুব ভালোবাসি। হলুদের মধ্যে যে আলোময় একটা ব্যাপার আছে, সেই ব্যাপারটাই আমার খুব পছন্দের। সবাইকে হলুদে খুব ভালো লাগে। আর হলুদ রং সবকিছুতেই যেন ফুটে যায়।
তাই আমি চেষ্টা করেছি আমার পছন্দের হলুদ রং এই ছবিতে সবথেকে বেশি হাইলাইট করার। আমরা কোন কিছু হাইলাইট করতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হলুদ রঙ ব্যবহার করি। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন পড়াশোনার ক্ষেত্রে বইয়ের কোন লাইন হাইলাইট করতেও আমরা এই হলুদ ব্যবহার করি। তাই ছবিটিতে যে এই রংটা বেশি হাইলাইট হয়েছে সেটা হয়তো আপনারা বুঝতেই পারছেন।
শরৎ আসছে। আর শরৎ মানে বাঙালির পুজো,মা দুর্গার আগমন। আমরা বাঙালিরা প্রতিবছর এই সময়ের অপেক্ষায় বসে থাকি আর এখন দেশের যা পরিস্থিতি। আমি এই থিমটাকেই উপযুক্ত বলে মনে করেছি। মা হলেন শক্তি। এই শক্তি সারা ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে। শক্তি ছাড়া কোন কিছুই সম্ভব না। যেটাকে ইংলিশে বলে এনার্জি। আর এই এনার্জির প্রতীক হল মা। বিশ্বে মাতৃ শক্তিকে সব থেকে বড় শক্তি বলে মনে করা হয়। সমস্ত খারাপের বিনাশ করতেই আমরা মায়ের শরণাপন্ন হই। পুরান মতে যখন দেবতারা সকলেই হার মেনে নিয়েছিলেন, তখন এই মাতৃ শক্তি অসুর বধে সফল হয়েছিল। তাই আজ আমি মায়ের আলোকময় মূর্তি আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি হলুদ রং ব্যবহার করে।
আশা করছি আমি আপনাদের বোঝাতে পেরেছি, কেন আমি এই ছবিটি আঁকলাম, এবং সাথে হলুদ রঙের সামঞ্জস্য এর সাথে কেনই বা আসলো। চলুন তাহলে এইবার আপনাদের সাথে শেয়ার করি কিভাবে স্টেপ বাই স্টেপ আমি ছবিটি এঁকেছি।
প্রথম ধাপ
আমি একটি খাতা নিয়েছি, এই খাতাটি আমার বহুদিন ধরে সাথে রয়েছে। এর মধ্যেই আমি আমার সমস্ত আকিবকি করে থাকি অবসর সময়ে। সাথে নিয়ে নিয়েছি পেন্সিল এবং রবার।
দ্বিতীয় ধাপ
এবার আমি মায়ের মুখ আঁকা শুরু করলাম।
তৃতীয় ধাপ
মায়ের মুখের সাথে, প্রতিমার মাথায় যেমন মুকুট থাকে সেরকম এঁকে নিচ্ছি।
চতুর্থ ধাপ
এবার প্রতিমাটির বডির অংশটুকু আমি এঁকে নিচ্ছি।
পঞ্চম ধাপ
এই জায়গায় এসে আমি বুঝতে পারছিলাম না আমি এখানে পদ্মপাতা করব ,নাকি পদ্ম ফুল করব, নাকি কাশফুল করব। অবশেষে মনকে বুঝিয়ে আমি এখানে পদ্মের পাপড়ি এবং এর সাথে পাতাও এঁকেছি।
ষষ্ঠ ধাপ
এবার আমি আমার পছন্দের রং হলুদের মাধ্যমে, গয়নাগুলো আগে রং করে নেব। হলুদ রং দেওয়ার সাথে সাথে ছবিটা কি সুন্দর ফুটে উঠলো। আমি এখানে ব্রাশ পেন ব্যবহার করেছি।
মুখ এবং গলাটুকুও এভাবে হলুদ রং দিয়ে রং করে নিলাম।
সপ্তম ধাপ
এবার কমলা এবং বাদামী রঙের মাধ্যমে আমি গয়না গুলোকে একটু অন্যভাবে সাজিয়ে নিচ্ছি।
অষ্টম ধাপ
এবার চুলের রং কালো ব্রাশ পেন দিয়ে করে দেব।
নবম ধাপ
এবার পোশাকের রং লাল করে নেব।
দশম ধাপ
গোলাপি এবং সবুজ রং দিয়ে পদ্ম এবং পদ্মের পাতার রং করে নিলাম।
একাদশ ধাপ
আমার খুব ইচ্ছা ছিল কাশফুল আঁকার। যেহেতু এখানে সাদা সেভাবে ফুটবেনা।তাই আমি অন্য রং দিয়ে কাশফুলের মতন কিছু ফুল এঁকেছি।
দ্বাদশ ধাপ
প্রতিমার মুখের পেছনদিকে আলোর ছটা হলুদ রঙ দিয়ে করেছি।
তৈরি
এভাবেই তৈরি হয়ে গেছে এত সুন্দর একটা ছবি।
আশা করছি আমি আপনাদের সাথে সমস্ত প্রসেসটা শেয়ার করতে পেরেছি এবং আমার পছন্দের রং এই ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। পুরো কাজটা করতে পেরে আমার সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ছবিটির বিষয়বস্তু আমার নিজেরও খুব পছন্দ হয়েছে। এত সুন্দর একটা টপিক রাখার জন্য আমি দিদিকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমার মনে হয় এত সুন্দর কন্টেস্টের টপিক যেখানে, সেখানে সবার উচিত অংশগ্রহণ করা। আমি সকলকেই অনুরোধ করবো অংশগ্রহণ করতে। বিশেষ করে আমি আমার তিন বন্ধুকে @mou.sumi, @rubina203, @karobiamin71 অনুরোধ জানাচ্ছি অংশগ্রহণ করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
That's a great piece of art created by you. There is a feel of divinity in it 🙏.
Happy Janmashtami @isha.ish
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit