নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আমাদের কমিউনিটিতে আবারো একটা দুর্দান্ত কনটেস্টের আয়োজন করা হয়েছে। অক্টোবর কনটেস্ট এর নতুন থিম আমাকে ভীষণভাবে খুশি করেছে।। যেখানে ঘোরাঘুরি। সেখানেই আমি। আমার পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সবাই জানতে পেরেছেন এতদিনে যে আমি ঘুরতে কতটা বেশি ভালোবাসি। তাই অক্টোবর কনটেস্ট দেখে আমি নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলাম না। আমি এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে একদম স্বেচ্ছায় বাধ্য।।
আমার করা ক্যালিওগ্রাফি
প্রথমত এখানে বলা হয়েছে যদি আমাদের কোন ট্রিপ স্পন্সর করা হয়। সব থেকে বড় কথা, স্পন্সর তো অনেক কিছুই করা যায়, কেউ যদি ট্রিপ স্পন্সর করে। আশা করছি আমার মতন এই প্লাটফর্মের আরও বাকি ইউজাররা প্রচন্ড পরিমাণে খুশি হয়ে উঠবে। আমার তো মাঝেমধ্যেই মনে হয় যদি আমি আমার কিছু জন স্টিমিয়ান বন্ধুদের সাথে কোথাও একটা ঘুরতে যেতে পারতাম। অথবা কোথাও একটা গেট টুগেদার করতে পারতাম। যাইহোক আর বেশি কথা না বাড়িয়ে এবার কনটেস্টে দেওয়া প্রশ্নগুলির উত্তর দিই।
প্রথম প্রশ্নই কত দুর্দান্ত! আমি কার সাথে এই ট্রিপটি এনজয় করতে চাই। যেহেতু স্টিমিয়ান বন্ধুকেই নিতে হবে, আমার আপাতত সবথেকে কাছের বন্ধু বলতে আমার মৌসুমী বৌদি । আমি মৌসুমী বৌদিকেই @mou.sumi আমার সাথে এই ট্রিপে নিয়ে যেতে চাই।
শুধু এই ট্রিপ বলে নয়, কৃষ্ণনগর অর্থাৎ আমার শহরে আমার কোন জায়গায় যেতে হলে আমার ওকেই প্রথমে লাগে। সেটা মার্কেটে যাই কিংবা অন্য জায়গায়, আমি ওকেই আমার সাথে যাবার জন্য রিকোয়েস্ট করি। যেহেতু আমাদের মধ্যে বয়সের সেরকম গ্যাপ নেই। বলতে গেলে একটা দিদি বোনের সম্পর্ক। তাই আমার ওর সঙ্গ খুবই পছন্দ। আমি যেমন ,ও ঠিক তার উল্টো। আমি ছটফট করি। আর ও শান্ত থাকে। আমার মনে হয় এই জুটিটা সবথেকে বেশি জম্পেশ হয়। দুজনে যদি একই রকম হতাম তাহলে হয়তো এতটা দারুন সম্পর্ক হতো না।
এই ছবিটি এর আগেও আমি একটিবার ব্যবহার করেছিলাম।
আমি ঠাকুর দেখতে যাই, বাজার করতে যাই, আমার মন খারাপ থাকলে কখনো ঘুরতে বার হতে ইচ্ছা হলে, সব সময় আমি প্রথমেই ওকে ডাকি। আর এর জন্য ও একদম বিরক্ত হয় না। ও নিজেও বাড়িতে সারাক্ষণ থাকে। তাই ওর বোরিং লাগে। আমার সাথে ও ঘুরতে খুবই ভালোবাসে। তাই আমার আমার মনে হয় দুজন যেহেতু খুব ভালো অ্যাডজাস্ট করে থাকতে পারি, তাই মৌসুমী বৌদি আমার ট্রিপ পার্টনার হিসেবে সঠিক একজন।
আমরা মাঝেমধ্যে বসে বসেই কত কত জায়গায় যাওয়ার কথা ভাবি। সেরকম সুযোগ পরিস্থিতি থাকতো তাহলে হয়তো দুজন মিলে কত জায়গা ঘুরতে পারতাম। কিন্তু দুটো মেয়েকে একা একা বাড়ি থেকে স্বাভাবিকভাবে কেউ ছাড়তে চায় না। আশেপাশে ঘোরাঘুরি করি , এটুকুই । তবে আমরা দুজন খুব ঘুরতে ভালবাসি। ওর অনেক জায়গায় যাওয়ার ইচ্ছা। আমি যতটা ঘুরেছি, ও ততটা ঘোরেনি। তাই আমারও মনে হয় ওকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাই।
যদি জিজ্ঞেস করা হয় জায়গার কথা, তবে আমি চোখ বুঝে পাহাড় সবসময় সিলেক্ট করি। আমার পাহাড় ভীষণ পছন্দ। পাহাড়ে গিয়ে আলাদা একটা শান্তি লাগে। আমাদের বাড়ি থেকে পাহাড় বেশ অনেকটাই দূর। যদিও সেটা আমাদের রাজ্যের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু তাও আমার পাহাড় চাই। আপনারা বুঝতেই পেরেছেন আমি পাহাড় বলতে আমাদের রাজ্যের একটি অন্যতম বিখ্যাত স্থান, বিখ্যাত হিল স্টেশন দার্জিলিং এর কথা বলছি।
কাশ্মীরি কে যেমন ভূস্বর্গ বলা হয়, দার্জিলিং তেমনি আমাদের পশ্চিমবঙ্গের ভূস্বর্গ। আমি একবার দার্জিলিং গিয়েছি, তখন আমি গ্রাজুয়েশন করছি। তাই দার্জিলিং আমার বেশ বড় বয়সেই দেখা। তবে দার্জিলিঙে বেশিদিন থাকিনি। ওখান থেকে চলে গিয়েছিলাম সিকিমে।
আমার ভীষণ ইচ্ছা আছে প্রপার দার্জিলিঙে গিয়ে মোটামুটি চার পাঁচ দিন কাটিয়ে আসার। বৌদি যদিও পাহাড় সেরকম পছন্দ করেনা। কিন্তু ও যদি একবার পাহাড়ে যায়, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি ও পাহাড় ভালবেসে ফেলবে। পাহাড়ের মধ্যে যে নিস্তব্ধতা আছে, যে শান্তি আছে। তা মনে হয় আর কোথাও নেই।
দার্জিলিং একটা বিরাট বড় হিলস্টেশন। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মানুষজন নয় , বিভিন্ন রাজ্য থেকে এমনকি বিদেশ থেকেও প্রচুর মানুষ এই জায়গা দেখতে আসে। এই জায়গার ঐতিহ্য কাঞ্চনজঙ্ঘা । দার্জিলিং থেকে প্রপারলি কাঞ্চনজঙ্ঘা খুব সুন্দর দেখতে পাওয়া যায়। যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে।
তাছাড়াও দার্জিলিং এ প্রচুর ঘোরার জায়গা আছে। দার্জিলিং এর আশেপাশে কার্সিয়াং এবং কালিম্পং নামক জায়গা আছে।
দার্জিলিঙে গিয়ে আমি বৌদির সাথে বাতাসিয়া লুপ এ যেতে যাই। এছাড়াও ওখানে অনেক বৌদ্ধ টেম্পেল আছে। সে জায়গাগুলো দর্শন করতে চায়। ওখানে চা বাগান আছে প্রচুর। চা বাগানে গিয়ে আমরা প্রচুর মজা করতে চাই আর অনেক অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি তুলতে চাই। দার্জিলিংয়ে পিস পাগোডা বলে একটি মন্দির আছে সেখানে ওকে নিয়ে যেতে চাই। এছাড়াও চিড়িয়াখানা রয়েছে। সে সমস্ত জায়গা ওর সাথে আমি ঘুরতে চাই।
আমি কখনোই টয় ট্রেনে চড়িনি। আমার ইচ্ছা আছে ওর সাথে আমি দার্জিলিঙে গিয়ে টয় ট্রেন চড়বো। দার্জিলিং থেকে কিছুটা দূর এই রয়েছে কার্শিয়াং। সেখানকার ডাউহিল নামক জায়গাটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ওখানে প্যারানোমাল অ্যাক্টিভিটি করার জন্য আসে। জায়গাটা রীতিমত ভুতুড়ে জায়গা বলে সবাই বিশ্বাস করে। তাই বৌদির সাথে ওরকম একটা রোমাঞ্চকর জায়গায় আমারও খুব যাওয়ার ইচ্ছা।
এই সবকিছুর মাঝে এমন কোন একটা হোম স্টে চুস করব, যেটা শহরের ব্যস্ত পূর্ণ জীবন থেকে একদমই আলাদা জায়গায় থাকবে। হোমস্টের পাশ দিয়ে নদী বয়ে যাবে। হঠাৎ করেই অবসর পেয়ে বৌদির সাথে এরকম কোন একটা জায়গায় থাকবো। যেখান থেকে অনেক অনেক এনার্জি সঞ্চয় করে আবার ফিরে আসতে পারবো নিজের শহরে।
আমার মনে হয় ঘুরতে যাওয়া একটা বড় এনার্জি আমাদের সবাইকে দেয়। তাই মাঝে মধ্যে সময় করে অবশ্যই ঘুরতে যাওয়া উচিত। আর সাথে যদি মন মত পার্টনার থাকে ,তাহলে ঘুরতে যাওয়া আরো মজার হয়ে যায়।
এখানে যদি আরো আমার কিছু স্টিমিয়াম বন্ধুদের নিয়ে যেতে পারতাম, তাহলে আমার প্রিয় আরো কিছু বন্ধুদের আমি এই লিস্টে অ্যাড করতাম। যাইহোক এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমার নিজের খুবই ভালো লাগলো। লাস্ট হয় তো সব থেকে বড় ট্রিপ করেছি কাশ্মীরে। সেটাও একটা আমার কাছে অ্যাডভেনচারস ছিল। তারপর কতদিন হয়ে গেল,ঘুরতে যাওয়া হয় না।
ঘোরাঘুরির কথা শুনলে তাই খুবই খারাপ লাগছে বিগত কিছুদিন হল। আসলে কিছুদিন আগে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হচ্ছিল সেটা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্টপ হয়ে গেল। যাই হোক আমি সবশেষে এই কনটেস্ট টি আয়োজন করার জন্য, কমিউনিটিকে ধন্যবাদ জানাই।
আমি এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য @pinki.chak,@jisnu.ishan,@sampabiswas কে আমন্ত্রণ জানালাম।
তুমি আমাকে নিয়ে পাহাড়ে যেতে চাও জেনে খুব ভালো লাগলো। তোমার সাথে যেখানেই যায় না কেন সেটাই আমার ভালো লাগে ।সেটা পাহাড় হোক কিংবা সমুদ্র। কিন্তু আমরা দুজনে কবে একসাথে বেড়াতে যাব সেটা আমরা নিজেরাই জানিনা। আমার কৃষ্ণনগরে যত জায়গায় ঘুরেছি সবই তোমার সাথে। আশা করছি তোমার সাথে কোনদিন না কোনদিন দিঘা কিংবা পাহাড়ে একবার যাবোই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit