Photo edited by canva
প্রিয় বন্ধুরা, আজকে আমি একদম অন্যরকম একটা পোস্ট লিখলাম কেন জানিনা লিখতে খুব ইচ্ছা করছিলো আর সেই ভাবনা থেকে লেখা, একজন গর্ভধারণের মা কত জল্পনা কল্পনা থাকে তার কি বাবু হবে, ছেলে নাকি মেয়ে, ছেলে হলে কি নাম রাখা যায় মেয়ে হলে কি নাম রাখা যায় কতশত প্রশ্ন যে মায়ের মনে ঘুরতে থাকে তার কোন শেষ নেই।
সত্যি কথা বলতে এমন প্রশ্ন আমার মাঝেও ছিল তবে, আমি আমার মেয়ে বাবুর ক্ষেত্রে যত বেশি আগ্রহ ছিলাম। এবার কেন জানি খুব একটা ইচ্ছা হয়নি, জানার জন্য আর তাছাড়া আমি যেহেতু বিজি হসপিটালে প্রথম থেকে ডাক্তার দেখিয়েছি সেখানে একদমই কোন টেস্টের রিপোর্ট দেখে ডাক্তাররা বলতে চায় না আর আমিও শোনার জন্য খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করিনি কখনোই,,,।
![]() |
---|
তবে মায়ের মন বলে কথা তো কিছু না কিছু তো প্রশ্ন থাকে,বাবু পেটে থাকতে আমি কোরআন শরীফ খতম দিয়েছিলাম এবং সেখানে একটা সূরা আছে,সূরা আরাফ সুরাটার অর্থ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিলো তখন, নিজের অজান্তেই তখন মুখ দিয়ে বলে ফেলেছিলাম যদি ছেলে বাবু হয় তাহলে আরাফ নামটি রেখে দিবো,,।আমি ওই পর্যন্তই ছিলাম এর বেশি খুব একটা জল্পনা-কল্পনা করিনি কারণ যখন এটা তখন দেখা যাবে কোন কিছু নিয়েই বেশি আশা করতে নেই যেটা আমার মনে হয়।
তবে, আমার শ্বশুর মারা যাওয়ার আগে যখন বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন হলো অন্য কাহিনী, কে জানত সে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে বলেই এমনটা বলেছিলো,আমাকে খুব করে বলতো একটা ডাক্তারের কাছে গিয়ে একটা আলতা করানোর জন্য তার জানার খুব ইচ্ছা ছিলো, কি বাবু হবে প্রথমে আমি বেশ কয়েক দিন না করেছি যেহেতু আমি সুস্থ ছিলাম,,।তবে এতবার বলছিল যে আমি আর না করতে পারিনি।
![]() |
---|
আমিও ডাক্তারের কাছে গেলাম এবং এসে শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে বিষয় টা বললাম, আমার শ্বশুর তো ভীষণ খুশি ছিলো তার এত বড় সংসারে এই প্রথম একটা ছেলে বাবু আসবে আমি ওই পর্যন্তই রেখে দিয়ে ঢাকায় চলে আসি,,,কারণ আমার কথা ছিল ছেলে মেয়ে যেটাই হোক সৃষ্টিকর্তা যেন আমাকে একটা সুস্থ বাচ্চা দান করেন।
আমি ঢাকায় পরে তিনি মারা যাওয়ার তিন দিন আগে নাকি আমার শাশুড়িকে বলছিলো,আমার যদি একটা ছেলে বাবু হয় তাহলে তার নাম রাখবে নাহিদ যেহেতু আমার হাজবেন্ডের নাম নজরুল তাই তার ছেলের সাথে মিলো রেখে নামটি সে পছন্দ করেছিলো, নাহিদ নামের অর্থ খুবই সুন্দর সফল বা বিজয়ী এ কথাটা আমি তখন জানতাম না পরবর্তীতে আমার শাশুড়ি মা বলেছে আমাকে ডেকে,,আমি তো শুনি আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি না জানি তার মনে আরো কত ইচ্ছাই বা ছিলো।
![]() |
---|
মানুষ মরণশীল সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে কিন্তু তার এমন মৃত্যু আমাকে ধীরে ধীরে অনেক কিছু ভাবায় শিখায়, আমি তখনই ঠিক করলাম তার দিয়ে যাওয়া আমাকে শেষ ভালোবাসা টুকু আমি অবশ্যই রেখে দিবো,,।
হয়তো বা তারে এই রেখে যাওয়া নামের মাঝেই তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে,,মূলত বাচ্চা জন্ম নেওয়ার সাত দিনের মাথায় তার নাম রাখতে হয়, আখিকা দিতে হয় এবং ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী সাত দিনের মাথায় চুল কেটে রূপা সোনা পরিমাণ সদকা দিতে হয় এতিমদের মাঝে, যেমন টা আমার মেয়ের বেলা করা হয়েছিলো।
কিন্তুু এখন ঢাকায় আছি আত্মীয়-স্বজন কেউ কাছে নেই, তাই আখিকা টা এখানে দেয়া হলো না বাড়িতে গিয়ে দিয়ে নিবো। আমার মনে মনে রাখা নামটার কথা হাজবেন্ড জেনে ছিলো আগে থেকে এই, তাই আমার শশুর এবং আমার নাম একসাথে করে বাবুর নাম রাখা হলো "আরাফ ইসলাম নাহিদ।"আর ইসলামটা যোগ করা হয়েছে আমার হাজবেন্ডের নাম নজরুল ইসলাম তাই তার ছেলের নামে সাথে ইসলাম টা রেখেছে ,, আমার নাহিদ বাবা টা জন্য সবাই দোয়া করবেন, যেন জীবনে একজন সৎ মানুষের সাথে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।
আজ আর লিখব না, এখানেই বিদায় নিবো সবাই ভাল থাকবেন এবং আমার এই ছোট্ট পরিবারের জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ হাফেজ।
