যাক বাবা অবশেষে বিয়েটা হল এবং বিয়া করেই বাহির হলাম। আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানীতে এবং বড় ভাই সবুজের উসিলায় কিছু টাকা বেঁচে গেলো। কারণ বড় ভাই (সবুজ) আমাকে টাকা দিতে দিলেন না। এবার কাজী অফিসের নিচে নেমে দাঁড়ালাম। ওর রাগ এখন পুরোপুরি শেষ, তবে মনটা যে খুব বেশি খুশি তাও কিন্তু না। আমার কাছে পুরো বিষয়টাই রহস্যের চাদরে ঢাকা, এমতাবস্থায় বেশি কথা না বাড়ানোই উত্তম আমার কাছে মনে হল।
এখন দুজনেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি কাজী অফিসের নিচে হুট করে বলে বসলেন বড় ভাই এখন কি করবা ঠিক করেছো
বড় ভাইয়ের কথার উত্তর দিল ও আপাতত তেমন কিছু ভাবছে না তবে নিজের বাড়িতে যাব না এটা সত্যি ও সিওর।
বড় ভাই বলল তো কোথায় যাবা এখন?
কোথায় যাবেন কি যাবেন না সেটা হবে পরে চলেন তো আগে আপনাদের বিবাহর খানা খাওয়াই আমি!
তালতলা মার্কেটে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানকার খাবার গুলো খুব ভালো, তবে দাম বেশি হওয়ার কারণে সেখানে কোন সময় পেট ভরে খাওয়া হয়নি,,, আজ পকেটে টাকা আছে মনটাও বেশ ভালো আছে চলেন যাই পেট ভরে খাবো আপনাদেরকেও খাওয়াবো।
: আমি বললাম আচ্ছা ভাইয়া চলো তাহলে ওকেও জিজ্ঞাসা করলাম যাবা ও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।
পাশে আমার বন্ধু ইমরান বলে বসলো আপনারা যান আমি যামু না বাসায় যাওন লাগবো আমার। বউ কল দিচ্ছে বারবার!
: বড় ভাই বলল তো কি হইছে ভাই বিয়েটা খেয়ে তারপরে যান।
এত খাওয়া ভালো না আর এমনিতেও হোটেলের লোকেদের রান্না খাব না,,, যার বিয়ে তার বউয়ের হাতের রান্না খাওয়ালে তবেই খাবো!
এই বলেই ইমরান চলে গেল,,, বড় ভাই গাড়ি নিয়ে এসেছেন আর তার গাড়িতে চড়ে আমরা রেস্টুরেন্টের দিকে রওনা হলাম। বড় ভাই ড্রাইভার এর পাশে বসে আছে পেছনে আমি আর ও চুপচাপ বসে আছি।
রেস্টুরেন্টে এসে সবার কর্নারে একটি টেবিল দখল করলাম। বড় ভাই রেস্টুরেন্টে ঢুকেই বলল তোমরা অর্ডার দাও আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসছি। আমি বুঝতে পারলাম বড় ভাই আমাদেরকে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য একটু দুহাত দেখালেন।
এই বলে বড় ভাই চলে গেলেন আমি আর ও বসে ওয়েটারকে ডেকে মেনু কার্ড দেখে পছন্দ মতো খাবার অর্ডার করলাম।
আমাকেই নীরবতা ভাঙাতে হলেও প্রথমে কথা বলে,,,
বড় ভাইয়ের আচরণটা ও বুঝতে পেরে ছে তাই তোমাকে বলল দেখছো ভালো মানুষদের একটি গুণ কি সুন্দর একটি অজুহাত দেখিয়ে আমাদেরকে কথা বলার সুযোগ করে দিল।
: আমি বললাম দেখেছি তো।
: এই শোনো, তোমার কী মন খারাপ?
: না, একটু চিন্তায় আছি।
: তোমার বিষয়টা আমি বুঝতে পারছি। এখন তুমি কী করতে চাও?
: ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না, তবে চিন্তা করছি বাসায় তো যেতে হবে বাবা-মাকে জানাতে হবে। শুনি আমরা কি বলে!
: তা তুমি খারাপ বলনি, ঠিক বটে!
: আমি দোয়া করছি বাসায় খারাপ কিছু যেন না হয়ে যায়, এই মার খেতে তোমার আপত্তি নেই তো এই বিয়ের জন্য?
(চিন্তা আরো বেড়ে গেলো, বিয়ের দিনে ও মাইর খেতে হবে!)
: না না একদমই না, তোমার জন্য মার খাওয়া এ আর এমন কী? তোমার জন্য এর আগে কত কথা শুনেছি বাইরের যেতে তো তাও কম ছিল না, তোমাকে না মারলেই হলো....
: আমি আমাকে না, সত্যি কথা বলতে আমি তোমাকে নিয়েই চিন্তিত।
: হুম তা কেন!
(এরই মধ্যে বড় ভাইয়ের আগমন)
: বড় ভাই এসেই বলতে লাগলেন, তোমরা এখনো অর্ডার দাও নি? যাক ভালই করেছ, আমি দিচ্ছি।
বড় ভাই অর্ডার দিলেন এবং আমাদের দিকে মুখটি খুব ভর করে তাকাবেন।
শোনো তোমাদের বলছি খাবার অর্ডার তো দিলাম কিন্তু আজকে কিছু সময় লাগবে এর মধ্যে তোমাদের সাথে কিছু কথা বলিনি। বিয়ে তো করেছ যেভাবেই হোক আর এটা নিয়ে কোন মন্তব্য করব না আমি। প্রথম রাত কোথায় কাটাবা কিছু ভেবেছো বৌমা তোমাকে জিজ্ঞাসা করি তুমি বলো।
বড় ভাই রাগান্বিতভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন পারমিশন ছাড়া তুমি কোন কথা বলবা না।
আমি ঠিক করেছি তোমরা তোমাদের প্রথম বিয়ের রাত আমার বাসায় কাটাও আমি আসার আগেই তোমার ভাবির সাথে এই বিষয়ে আলাপ করে নিয়েছি।
ইতিমধ্যে তোমার ভাবি ও তার দুই বোন মিলে তোমাদের ফুলশয্যা সাজানোর প্ল্যান করছে। তো আমি আশা করছি তোমাদের প্রথম রাত আমার বাড়িতেই কাটাচ্ছো কি ঠিক তো।
এবার বল তোমাদের বাড়িতে বিয়ের বিষয়ে কে কিভাবে জানাবা ঠিক করেছো।
বড় ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলল তুমি আগে উত্তর দাও।
আমার প্ল্যান বাসা থেকে এমনিতেই বেরোতে হবে আর সেটা আমার বাসার সবাই জানে তা নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই,,, তবে এই সময় কোথাও বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না এটা তো ঠিক তাই না ভাই তাই আমি ভাবছি কিছুটা দিন হোটেলে কাটাবো আর যেহেতু হোটেলেই কাটাতে হবে তাহলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যায় যেমন আমরা কোথাও যেতে করতে যাই হানিমুন ট্যুর হিসেবেও হয়ে গেল।
বড় ভাই বলল বা তোমার বুদ্ধি তো খারাপ না গল্প বানাতে তোমার তেমন একটা কোন কষ্টই হবে না, এবার বৌমা তুমি বলো?
ও বলল আমি আজই বাসায় গিয়ে আমাদের বিয়ের বিষয়টা বলে দিব।
বড় ভাই ওকে জিজ্ঞাসা করল তুমি এখান থেকে গিয়েই কি বলে দিবে।
ও বলল, জ্বি!
বড় ভাই বলল যাক ভালো শোনো আমি আমার গাড়ি দিয়ে যাচ্ছি আর ড্রাইভারকে বলেও রেখেছি ঢাকার ভিতরে সব জায়গায় তোমরা যেতে পারবে বৌমা তোমার কি মনে হয় বাসায় যে কথা বলে ফিরে আসতে কত সময় লাগবে এখনই বলে রাখি আমি আশা করছি না তারা তোমার ব্যাপারটা খুব সহজভাবে নিবে।
: ও শর্টকাট করে উত্তর দিল ভাইয়া দু'ঘণ্টার বেশি লাগবে না ।
বড় ভাই আমাকে ইঙ্গিত করে বলল আচ্ছা ঠিক আছে আমি দু'ঘণ্টা পরেই ওর নাম্বারে কল দিব ওকে।
ইতিমধ্যেই খাবার চলে এসেছে তাই আমরা তিনজন এবার খাবারের দিকে মনোযোগ দিলাম।
খাবার খাচ্ছি ,,, আর এখানেই আজকের মত বিদায় নিচ্ছি বাকি অংশ নিয়ে আসবো আগামী পর্বে ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন । আল্লাহ হাফেজ।
সত্যিই হঠাৎ করে বিয়ে করার পর বাসায় কিভাবে বলবে বা মেনে নেবে। এই বিষয়টা অনেক ভাবার বিষয়। তারপরেও যেহেতু বৌমা রাজি হয়েছে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য। এরপরে কি হবে সেটা নিয়েই অনেক বেশি আতঙ্কিত আছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি গল্পের আগামি পর্ব আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit