দুর্ঘটনার করুণ চিত্র শেষ পর্ব।

in hive-120823 •  14 days ago 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

শুভ রাত্রি,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমার নাম মোঃ শাহিন আপনাদের সাথে যুক্ত রয়েছি মালয়েশিয়া থেকে।‌ আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপনা করব দুর্ঘটনার করণ চিত্র শেষ পর্ব। প্রথম পর্ব যেখান থেকে শেষ করেছিলাম ঠিক সেখান থেকেই শুরু করতে যাচ্ছি।

accident-4860938_1280 (1).jpgsource

দুর্ঘটনার পর জাগায় চারজন মারা যাওয়ার পর কয়েক গ্রামের লোক সেখানে উপস্থিত হয়ে যায়। সাথে সাথে থানা থেকে পুলিশ চলে আসে। রক্ত দিয়ে সমস্ত রাস্তা ভরে গিয়েছে চারজনের ভেতরে একজনের মাথা ফেটে মাথার মগজ আলাদা হয়ে গিয়েছে ভয়াবহ দৃশ্যটি অনেকেই দেখতে পারি নাই কেননা এগুলো দেখার জন্য অনেক সাহসের প্রয়োজন হয় আমি নিজেও দেখতে যাই নাই।

তবে যারা সেখানে দেখতে গিয়েছিল তাদের মুখ থেকেই এগুলো শুনছি। আপনারা অনেকেই জানেন যে এমন দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেলে তাদের লাস্ট পোস্টমডাম করা হয় আমার মামি কোনরকম আমার মামার লাশ পোস্টমডাম করতে দিবে না । তার পরেও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছে আমার মামী বাধা দেওয়া সত্ত্বেও কোন কাজ হয় নাই।

accident-2161956_1280.jpgsource

আমার এখনো ভালো মনে পড়ে বর্ষার সময় আমার মামাদের চারজনের লাশ আমাদের প্রাইমারি স্কুল মাঠে নিয়ে আসে দুই তিন গ্রামের লোক তাদের দেখার জন্য উপস্থিত হয়। প্রচন্ড বৃষ্টি হওয়ার কারণে মাঠের মধ্যে তাদের লাশগুলো রাখা হয় নাই স্কুলের বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছিল। বৃষ্টি থামার পর তাদেরকে মাঠের মধ্যে নিয়ে আসা হয়।

আমার মামার সহ সকলের মাথায় আমি সেলাই দেখেছিলাম কালো সুতা দিয়ে সেলাই করেছিল চোখ দুটো মার্বেলের ছিল তাদের অরিজিনাল চোখ ডাক্তারের রেখে দিয়েছিল। এছাড়াও এ ধরনের এক্সিডেন্ট করার ব্যক্তিদের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্গান রেখে দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে তাদের লাশ দেখার মত অবস্থা ছিল না। হঠাৎ যে কেউ দেখলে ভয় পাবে যাদের হার্ট শক্তি দুর্বল তারা কখনোই এমন দৃশ্য দেখার সাহস হবে না।

skiing-accident-6933839_1280.jpgsource

আমি এই লেখাটি লিখছি এবং আমার চোখের সামনে সেই দিনগুলো যেন আবার পুনরায় ভেসে উঠেছে। যদিও অনেক দিন আগের ঘটনা তবুও চোখ বন্ধ করলে আমি স্পষ্ট দেখতে পাই সেই দিনের কথা।‌ যাইহোক পরবর্তীতে স্কুল মাঠ দিয়ে যেতে আমারও যেন গায়ের ভেতরে কেমন ভয় ভয় লাগত ঠিক ওই রাস্তা দিয়ে আবার বাজারে যেতে হয় ।‌আবার ফিরতে হয় স্কুলের ওই মাঠের রাস্তা দিয়ে। আশেপাশে কোন ঘর বাড়ি নাই। স্কুলের সাইট দিয়ে বেত্রাবতি নদী বয়ে গিয়েছে এবং পেছনের দিকে ঘন বাস ঝড়ে সব মিলিয়ে আতঙ্কের একটি জায়গা তৈরি হলো।

sad-4209944_1280.jpgsource

বাজার থেকে দুই তিনজন একসাথে না হয়ে কেউ বাড়ি ফিরত না সন্ধ্যার পর সেই স্কুল মাঠের ওই জায়গাটা অনেকটাই আতঙ্কের জায়গা হয়ে উঠলো। গ্রামের এমন কোন মানুষ নাই এই দৃশ্য দেখি নাই তাই তাদের মনেও একই রকম ভয় লাগা শুরু করলো। এভাবে প্রায় ২-৩ মাস পার হয়ে যায় তারপর থেকেই অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে এখন সেই স্কুলের আশেপাশে অনেক ঘর বাড়ি হয়ে গিয়েছে।

তো বন্ধুরা এই ছিল দুর্ঘটনার করুণ চিত্রের শেষ পর্ব আজকের মত আমি আমার লেখা এখানেই শেষ করছি । সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি। আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...