ভয়াবহ দুর্ঘটনার গল্প। (প্রথম পর্ব)

in hive-120823 •  18 days ago 

শুভ সকাল

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমার নাম মোঃ শাহিন আপনাদের সাথে যুক্ত রয়েছি মালয়েশিয়া থেকে।‌ আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপনা করব আমাদের গ্রামের ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনা।

accident-4860938_1280.jpgsource

এই ঘটনাটি ঘটেছিল এখান থেকে ১২ বছর আগে আমার বয়স তখন আনুমানিক ১৫ থেকে ১৬ বছর। আমার বয়স অবধি এত বড় দুর্ঘটনা আমি আগে কখনোই দেখি নাই। প্রতিটি দুর্ঘটনার পিছনে আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সুপরিকল্পনা রয়েছে তা না হলে হঠাৎ মৃত্যু কিভাবে সম্ভব বাড়ি থেকে ভালো মানুষ রাস্তায় বের হয় তারপরে তার মৃত্যুর সংবাদ আমরা শুনতে পাই।

আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তা'আলা ভালো জানেন মূল রহস্য তবে আমরা এতটুকু জানি যে আল্লাহ যেটা করেন আমাদের ভালোর জন্যই করেন। যদিও আমাদের মেনে নিতে একটু কষ্ট হয় । তবে উত্তম পরিকল্পনাকারী একমাত্রই তিনি। যেটা ঘটে সেটা আমাদের মঙ্গলের জন্যই ।

accident-4713621_1280.jpgsource

যাই হোক মূল লেখাই ফিরে আসি, আমার পাড়া প্রতিবেশী মামা সম্পর্কে হয় তিনি অনেক আগে থেকেই ঘটকালি করতেন। অর্থাৎ ছেলে-মেয়ে দেখে বেড়াতেন গ্রামে, গ্রামে যারা মেয়ে বিয়ে দেবে তাদের জন্য ছেলে খুঁজতে আর যারা ছেলে বিয়ে দেবে তাদের জন্য মেয়ে খুঁজতেন। উভয়পক্ষ রাজি থাকলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতেন এটা তার পেশা ছিল না অনেকটাই শখের বসে পড়তেন। মূলত তিনি কৃষি কাজ করতেন আর মাঝেমধ্য এগুলো করতেন।

আমাদের গ্রামের রফিক ভাই বিয়ে করবে বলে আমার মামাকে বলে তারপর একটা মেয়ের সন্ধান দেয়। সেই মেয়ের বাসা আবার তিনটে ইউনিয়ন পরে গ্রামের নাম হারিখালি।আমাদের গ্রাম থেকে তাদের গ্রামে যেতে প্রায় ২ ঘন্টা সময় লাগে সাইকেলে করে। সেই সময় সাইকেলের যুগ ছিল। সব সময় সাইকেলেই মানুষ দূরের পথ যাতায়াত করত মোটরসাইকেলে ততটা চল ছিলনা।

যাইহোক মেয়ে দেখার জন্য বাড়ি থেকে সকাল দশটার সময় আমার মামা ও রফিকদের বাড়ি থেকে আরও তিনজন দুইটা সাইকেলে করে যাচ্ছিল দুই সাইকেলে দুই দুই চারজন খুব ভালোভাবেই যাচ্ছিল। আমাদের গ্রাম থেকে কাজিরহাট বাজারে যাই সেখানে গিয়ে মিষ্টি কিনার জন্য দোকানে কিছু সময় থামে। মিষ্টি কিনে তারপর আবারো তারা রওনা দেয় গন্তব্যে যাওয়ার জন্য।

accident-4860940_1280.jpgsource

কাজিরহাট বাজার থেকে আড়ি খালি রাস্তাটা অনেকটাই আঁকাবাঁকা হয়ে চলছে এই রাস্তায় আবার বাস , ট্রাক চলাচল করে তারা যেহেতু বাড়ি থেকে সাইকেলে গিয়েছে তাই আর বাসে উঠি নাই সাইকেলে করেই যাচ্ছিল কাজিরহাট কলেজ মোড়ের একটু সামনেই গিয়ে অনেকটাই বাকা রাস্তা সামনে থেকে কি আসছে সেটা সহজে দেখা যায় না । ঠিক এই জায়গাটাই প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে এর আগেও নাকি এখানে একটি বাস উল্টে গিয়েছিল।

আজও ঠিক ওই জায়গায় আবার দুর্ঘটনা আমার মামার সহ আরো যে তিনজন ছিল সবাই একসাথেই বাসের ধাক্কায় জায়গায় মৃত্যুবরণ করল। ওই চারজনের সাথে একজন ছোট বাচ্চা ছিল বয়স ১০ বছর মত হবে সাইকেলের সামনে থেকে সেই বাসাটি ছটকে গিয়ে একটি পচা খানার ভিতরে পড়ে তার লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না ১০-১৫ জন মিলে আধাঘন্টা খোঁজার পর অবশেষে পাই তবে সেও ইতিমধ্যে ইন্তেকাল করছে।

levitation-1374181_1280.jpgsource

দুর্ঘটনা স্থানের চিত্র দেখার মত ছিল না রক্তে পুরো রাস্তা লাল হয়ে গিয়েছিল এমন দুর্ঘটনা আমি কখনোই দেখি নাই। শুভ কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল সেই ব্যক্তিরা লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল। কার মৃত্যু কখন কোথায় লেখা আছে সেটা কেউ বলতে পারে না।

দুর্ঘটনার পরের ভয়াবহ চিত্র আগামী পর্বে উল্লেখ করবো আজকের মত আমি এখানে বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি । আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...