জীবন (ছোট গল্প পর্ব ২ )

in hive-120823 •  5 days ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম। আশাকরছি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ইন্ডিয়ান বাসী, বাংলাদেশ বাসী,ও ইনক্রিডিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটির সবাইকে জানাই, আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সবার প্রতি আমার ভালবাসা রইল।


অতীতে আমারা পড়ে ছিলাম, শ্রাবন্তী তার স্বামীকে বলছে;মেয়েদের শরম নারীদের অহংকার। এই কথা তার নানী বলেছে!

  • এই কথা শুনে মনু মিয়া,
    তখন হা, হা, করে হাসতে থাকে! বলে পাগলী এটা তোর জামাইয়ের ভালোবাসা। এইভাবে তাদের সুখের সংসার চলতে থাকে! সম্পদ ও রত্না ভাই-বোন দুজনে বড় হতে থাকে। মনু মিয়ার আর শ্রাবন্তীর সুখের সংসার, এই ভাবে দিন যায়, আর মাস যায়, বছর যায়!

1000006664.jpg
Source

হঠাৎ করেই শ্রাবন্তীর নানি মারা গেল! এই পৃথিবীর বুকে শ্রাবন্তীর নানী ছাড়া আর কেউ ছিল না।শ্রাবন্তীর এখন শুধু আছে মনু মিয়া,
শ্রাবন্তী অনেক কান্নাকাটি করে তার নানির জন্য। প্রায় দুই তিন দিন ধরে শ্রাবন্তী খাওয়া বন্ধ করে দিছে। মনু মিয়া কয়েকদিন ধরে কাজে যায় না, বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে হয় , শ্রাবন্তীর নানী মরে যাওয়ার পর থেকেই, শ্রাবন্তীর কোন কিছুই ভালো লাগেনা। এভাবে আর কতদিন শ্রাবন্তীকে সবসময়ই মনু মিয়া দেখাশোনা করবে।

1000006665.jpg
Source

তাই একদিন মনু মিয়া বলো দূর পাগলী, মানুষ মরে গেলে পচে যায় আর বেঁচে থাকলে বদলায়! বুঝলি শ্রাবন্তী। এই পৃথিবীর বুকে আমি শুধু তোর আর তুই শুধু আমার এই বাচ্চাগুলো তোর আর আমার ভালোবাসার উপহার।

ঐদিন ছিল শনিবার মনু মিয়া কাজের জন্য বাইরে যায়। শ্রাবন্তী, মনু মিয়াকে বাসা থেকে সকালবেলা বিদায় দেয়! মনু মিয়া কাজে যাওয়ার আগে বলল, তুই শ্রাবন্তী বাজারে যাইস কিছু বাজার কইরা আনিস আমি কাজে গেলাম।


1000006666.jpg
Source

শ্রাবন্তী দুই বাচ্চা কে নিয়ে সকাল ১০ টার দিকে বাজারের উদ্দেশ্য রওনা দিল, হঠাৎ করে কোথায় থেকে জানি রাস্তায় একটা প্রাইভেট কার এসে শ্রাবন্তীকে জুড়ে ধাক্কা মারে! সঙ্গে-সঙ্গে শ্রাবন্তী ওইখানে মারা যায়, আর বাচ্চাগুলো রাস্তার পাশে বসে কান্নাকাটি করছিল। সঙ্গে-সঙ্গে রাস্তার মানুষরা শ্রাবন্তীকে হসপিটালে নিয়ে যায় এবং মনু মিয়াকে খবর দেওয়া হলো। ডাক্তার শ্রাবন্তীকে দেখে বলে শ্রাবন্তী মরে গেছে! এই কথা শুনে মনু মিয়ার আকাশ ভেঙ্গে মাটিতে পরলো, এই দুইটা বাচ্চা নিয়ে এখন মনু মিয়া কি করবে।


মনু মিয়া শ্রাবন্তীকে কবর দেওয়ার পর, ওই কবরের পাশেই বাচ্চাদের নিয়ে বসে থাকে! সারাদিন, সারারাত, আশেপাশের মানুষ মনু মিয়াকে বলে। তুই কি পাগল হয়ে গেছোদ! এই দুইটা বাচ্চাদেরকে নিয়ে তুই কবরের পাশে বসে থাকোস। মনু মিয়া কিছুই বলে না, বাচ্চারা কান্নাকাটি করে খাবারের জন্য, আশেপাশের মানুষ তাদেরকে খাবার দিয়ে যায়।

1000006667.jpg
Source

এই ভাবে চলতে থাকলো ১০-১২ দিন হঠাৎ করে মনু মিয়া পাগল হয়ে গিয়েছে! বাচ্চাদের কে, সে চিনি না, মনু মিয়ার, বাচ্চারা খাবারের যন্ত্রণায় পথ শিশুর মতন মানুষের কাছ থেকে চেয়ে খাবার খায়!
একদিন হঠাৎ করে মনু মিয়াও এক্সিডেন্টে মারা যায়, আশেপাশের মানুষ, মনু -কে শ্রাবন্তীর পাশেই কবর দিয়েছে! শ্রাবন্তীর আর মনু মিয়ার ভালোবাসার উপহার সম্পদ, ও রত্না, এই পৃথিবীর বুকে রেখে যায় সাক্ষী হিসেবে আমাদের মাঝে!

1000006668.jpg
Source

যাদেরকে আমরা বলে থাকি পথশিশু! দোয়া করি পৃথিবীর সকল পথ শিশুর জন্য। হাজারো, সম্পদ, রত্না, রাস্তায় এই ভাবে ঘুরে বেড়ায় আমাদের আশেপাশে!


( গল্প সমাপ্ত )

প্রথম পর্ব

কিছু কথা

আমার যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।


JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7yctNbUfy3Svm873NHceMEBkiU7QugfFD3RdWkWB8D5Nn71Vnqc38zTwcdMtsxGBY9bLpzWCxcXrK7yhhF5vsc2ofGXjYS.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



৭ /জানুয়ারি/ ২০২৫

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

Loading...

পড়তে পড়তে কেন জানি নিজের অজান্তে চোখের কোনে একটু পানি চলে আসলো হয়তো এটা গভীর ভালোবাসা থেকে কিবা অন্য কিছু, হতে পারে আমার একটু মায়া বেশি সরল মনের মানুষ,তাই কি না। কিন্তুু এটা বাস্তব সত্যি কথা আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।

তাদের মাঝে কত ভালোবাসা ছিলো,এই পৃথিবীতে দুজন দুজনের ছাড়া আর কেউ ছিল না , আর তাদের ভালোবাসা বাচ্চা দুটো আর একটা সময় তারাও এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল কিন্তু রয়ে গেল তাদের এই ভালোবাসা আর আমরা কিনা তাদেরকে কত অবহেলা করি।

আমাদের সমাজের আমাদের রাষ্ট্রের উচিত পথ শিশুর দিকে একটু হাত বাড়ানোর, ওরা বাবা-মায়ের ভালোবাসা না পেলেও যাতে ওর একটা সুন্দর জীবন পেতে পারে সেই সু ব্যবস্থা করা উচিত।

সত্যিই আপনার মন্তব্য মন ছুয়ে যাওয়ার মতো! আমার পড়ে অনেক ভালো লাগছে, কেননা। এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। সত্যিই আমাদের সরকারের এই পথ শিশুদের জন্য একটা ব্যবস্থা করা দরকার, হয়তো আশায় আছি, সরকার ভবিষ্যতে কোন একটি প্রকল্প হাতে নেবে! এই পথ শিশুদের জন্য। আমিও আপনার মতন নরম মনের মানুষ, আশেপাশে এই সব খারাপ কিছু দেখলে, মাঝে-মাঝে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাই না নিজের কাছে। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ,আল্লাহ হাফেজ।

যদিও আপনার গল্পের প্রথম পর্ব আমি পড়িনি কারও কিছুক্ষণ পরে এগিয়ে পড়বো এবং আপনাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবো আসলে সত্যি কথা বলতে মনু মিয়া এবং শ্রাবন্তীর সংসার এভাবে এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে আমি বুঝতে পারিনি।

একটা সংসার গড়ে ওঠে দুইজন মানুষের ভালবাসার কারণে আর তাদের ভালোবাসা এই পৃথিবীতে রয়ে যায় তারা যদি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় হঠাৎ করে তাদের দুজনের মৃত্যু হওয়া তাদের ভালবাসা এই পৃথিবীতে ছেড়ে যাওয়া সবকিছুই একটু তাড়াতাড়ি ঘটে গেল তারপরেও তারা ভালো থাকো যারা বর্তমান সময়ে পথশিশু রয়েছে।

আমি প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই, আপনি আমার লেখার গল্পে কমেন্ট করার জন্য, আমি গল্পের শুরুতেই বলেছি, এই গল্পটা আমি এক থেকে দুই পর্বে শেষ করবো, আমি ইচ্ছা করলেই এই গল্পটি পাঁচ, ছয়, পর্বে নিতে পারতাম। আমার এই গল্পতে আমি অসহায় শিশুদের জীবন চক্র নিয়ে একটি থিম কাজ করার চেষ্টা করেছি।
আমাদের সমাজব্যবস্থার কথা, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির কথা! আমার এই গল্পের মাঝে আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা বেশিরভাগ মানুষ যাদেরকে টুকাই বলে থাকি! রাস্তার শিশু বলে থাকি, জারজ সন্তান বলে থাকি! তাদের কষ্ট জীবনের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি! আপনি হয়তো বা খুব ভাল বুঝতে পারবেন, যদি আমার গল্পের প্রথম পর্ব টা আপনি পড়েন, আমি আশায় আছি আপনি অতি শীঘ্রই আমার গল্পের প্রথম পর্বটা আপনি পড়বেন। এবং পরবর্তীতে আমাকে কমেন্টের মাঝে জানাবেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ। এছাড়াও যদি আপনি বড় গল্প পড়তে পছন্দ করেন তাহলে, ( আমরা পাঁচ বন্ধু )আমার একটি গল্প আছে আপনার ইচ্ছা হলে এই গল্পটি পড়তে পারেন। আমি আশা করছি গল্পটি আপনার কাছে অনেক ভালো লাগবে।