Better Life With Steem | The Diary Game |3 February2025

in hive-120823 •  28 days ago  (edited)

1738590967213.jpg

ছাদ বাগানের ফোঁটা জবা ফুল

বিবাহিত জীবনের ১৩ তম বছর চলছে। বিবাহিত জীবনের নয় বছরের বেলায় আমার স্বামী মারা যান।আমার স্বামী ছিল পরিবারের বড় ছেলে । ও ছিল খুব দায়িত্ব ও কর্তব্য পরায়ন একজন মানুষ । ও সব সময় পরিবারের কর্তব্যকেই প্রাধান্য দিত। পরিবারের বড় ছেলে ও বড় ছেলের বউয়েরা দিনশেষে পরিবারের লোকদের কাছ থেকে একটা কথাই শুনতে হয় ,তোমরা কি করেছো? কিছুই করনি তোমরা !এ কথাটাই শুনতে হয়। শুধু বড় ছেলে বা ছেলের বউ নয় সংসারে যারা সবার জন্য নিঃস্বার্থভাবে করে যায় তারাই দিন শেষে একটা কথাই শুনে যে, তুমি কিছুই করনি। কি করেছো তুমি আমাদের জন্য ?এ কথাটা আমি আগে লোকের মুখে শুনতাম। আর এখন আমি এই কথার বাস্তব প্রমাণ।এতগুলো বছর একসাথে কাটানো পর শশুর বাড়ির লোকদের কটাক্ষ কথাগুলো শোনার পর স্তম্ভিত হয়ে গেলাম । আসলে এই সংসারটা হচ্ছে স্বার্থময়।এই সংসারে কেউ কারো আপন নয়। স্বার্থ ময় এই সংসারে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই পাওয়ার নেই ।

1738590967202.jpg

বাস্তবতা খুব কঠিন। যতই দিন যাচ্ছে ততই নতুন নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছি। আর নতুন কিছু শিখছি, জানছি ।যেসব কর্তব্য পরায়ন মানুষেরা সারাটা জীবন দায়িত্ব ও কর্তব্যের মাঝে ডুবে থাকে তারাই দিনশেষে শুধু লাঞ্ছিত হয় আর দুঃখই পায়। আর দিন শেষে ভালো থাকে তারাই, যারা স্বার্থপর। তারাই সকলের কাছে ভালো থাকে। যাইহোক, এখন চলে যাই আবার দিনলিপিতে।

আমার দিনটি যেভাবে শুরু হয়েছে

1738590967231.jpg

1738590967221.jpg

কদিন যাবত সকালবেলা যদিও খুব বেশি কুয়াশা পড়ে কিন্তু শীতের পরিমাণটা খুব কম। তেমন একটা শীত লাগে না ।ছাদে পূজার ফুল তুলতে গিয়ে আজও অনেকটা সময় ছাদে কাটিয়েছি। সকাল বেলা পূজার ফুল তুলতে আমার অনেক ভালো লাগে।মনে হয়ে যেন, গাছগুলো যদি আমার সাথে কথা বলত আমার অনেক ভালো লাগতো। সমস্ত জবা গাছেএখন ফুল ফোটা শুরু হয়েছে । গাছে গাছে নতুন কুড়ি মেলছে।এই দৃশ্য গুলো দেখতে কি যে ভালো লাগে!যাইহোক অনেকটা সময় কাটানোর পর পূজার ফুল তুলে ঘরে চলে আসলাম। ঘরে এসে সকালে কাজকর্মগুলো সেরে সকালে নাস্তা তৈরি করতে চলে গেলাম রান্না ঘরে। আজ সকালে নাস্তার জন্য তৈরি করছি সাদা রুটি আর আলু ভাজি।আজ অনেকদিন পর আলু ভাজি দিয়ে রুটি খেলাম। নতুন আলোর ভাজি দিয়ে রুটি খেতে আজ ভালই লাগলো।

1738590967190.jpg

1738590967178.jpg

সকালের নাস্তা খাওয়া পর ছেলের স্কুলের টিফিনের জন্য তৈরি করলাম চিকেন চাপ আর পরোটা। ছেলে অনেকদিন যাবত বায়না করছিল মা আমাকে চিকেন চাপ তৈরি করে দাও। সময়ের অভাবে করতে পারি না । আজ তৈরি করে দিলাম। এগুলো তৈরি করার পর ছেলেকে নিয়ে স্কুলে চলেগেলাম। দুপুরে রান্না করিনি স্কুল থেকে এসে তারপরে রান্না করবো।

এই জগত সংসারে আমার আমিত্বকে ত্যাগ করতে পারলে আমরা সকলেই প্রকৃত সুখী হতে পারব। আমার আমিত্বকে ত্যাগ করতে পারলে আমাদের কারো প্রতি কোন অভিযোগ থাকবে না। যখন কারো প্রতি কারো কোনো অভিযোগ থাকবে না ,অসন্তুষ্টতা থাকবে না তখনই একজন মানুষ সুখী মানুষে পরিণত হতে পারে ।সংসারে আমার বলতে কিছুই নেই আমারই দেহটাই তো আমার নয়! কখন যে পাখি খাচা ছেড়ে নিজের অজান্তে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবে, আমরা কেউবলতে পারি না। তাই আমি মনে করি সংসারের প্রত্যেকটা ব্যক্তি আমার আমিত্বকে ত্যাগ করতে পারলেই সুখী হওয়ার সম্ভাব।

বন্ধুরা আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি । সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন । শুভরাত্রি।

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আপনার পোস্টটি পড়ে মন ছুঁয়ে গেল। বাস্তবতার কঠিন দিকগুলো খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। সত্যিই, সংসারে যারা নিঃস্বার্থভাবে দেয়, তাদেরই বেশি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তবু জীবন এগিয়ে যায়, অভিজ্ঞতা আমাদের আরও শক্তিশালী করে।

ছাদের জবা ফুলের সৌন্দর্য ও প্রকৃতির প্রশান্তি সত্যিই অনন্য। ছেলের জন্য ভালোবাসা দিয়ে খাবার তৈরি করার অনুভূতিও সুন্দর। ছোট ছোট সুখের মুহূর্তই জীবনের আসল সম্পদ।

আপনার অভিজ্ঞতা ও ভাবনা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

আপু, সবার প্রথমে একটি কথা না বললেই নয়, আর সেটি হল আপনি খুব সুন্দর করে কমেন্ট করতে পারেন।আপনার কমেন্টগুলো সব সময় মাধুর্যময় হয়ে থাকে।
আমার পোস্টটি পরিদর্শন এবং খুব সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ । আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

পোস্টটা পড়ার শুরুতে খারাপ লাগলো তবে জানেন তো এটাই বাস্তবতা, এই সংসার ধর্ম একবার ধরলে ছাড়া বড় কষ্ট, আর যতদিন পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে ততদিন পর্যন্ত মানুষের কাছে কটু কথা, নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে সংসারের কাজে নিয়োজিত রাখা এগুলো যেন একটা নারীর ধর্ম হয়ে গিয়েছে, সংসার জীবনে।।

তবে আমি দেখেছি এই কঠিন বাস্তবতা ভিতর দিয়ে নিজেকে একবার যদি দাঁড় করানো যায় নিজেকে একটা পর্যায়ে নেয়া যায় তাহলে দিনশেষে কোথাও গিয়ে যেন স্বস্তি মেলে সেটা অন্যের কাছে না হলেও নিজের কাছে,, কারণ আমার কাছে মনে কারো মুখে আমার প্রশংসা সোনার চাইতে নিজেকে কিছুটা ভালো রাখা সবচেয়ে জরুরী।

ঠিক বলেছেন আপু ,সংসার ধর্ম একবার ধরলে, তা ছাড়া দুষ্কর।অন্যের মুখে নিজের প্রশংসা শোনার চাইতে নিজেকে ভালো রাখাটা জরুরী ,আপনি একদম ঠিক বলেছেন !কিন্তু বাস্তবে এটা সবার পক্ষে করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।সংসারে সবাই তো আর কর্তব্য থেকে দূরে থাকতে পারে না!

যাইহোক, আমার পোস্ট পরিদর্শন করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

পরিবারের বড় ছেলেদের দায়িত্ব থাকে অনেক বেশি সেই সাথে পরিবারের বড় ছেলের বউয়ের দায়িত্ব যারা পালন করে তাদের জীবনটা অবশ্যই অনেক কঠিন কেননা বাস্তবতার সম্মুখীন হতে গেলে বোঝা যায় পারিবারিক সম্পর্ক গুলো টিকিয়ে রাখার জন্য তারা সহস্র চেষ্টা করলেও তাদেরকে দিন কেটে এই কথাটাই শুনতে হয় আমাদের জন্য কি করেছো।

আপনার ছেলের ইচ্ছে পূরণ করেছেন দেখে ভালো লাগলো আসলে ছোট বাচ্চাদের বায়না গুলো আমরা যখন পূরণ করি তখন তারা অনেক বেশি খুশি হয় আমার আমিত্বটাকে আমরা কখনোই গ্রহণ করতে পারবো না জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেটাকে ত্যাগ করতেই হবে কারণ আমরা অন্যের জন্য বেঁচে থাকি নিজেদের জন্য নয় তার পরেও বলব দিন থেকে নিজেকে কিছুটা সময় দেন অন্ততপক্ষে ভালো থাকতে পারবেন।