আপনারা সকলে কেমন আছেন ?আশা করি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি । আজকে আমি আপনাদের কাছে একটা নতুন পোস্ট শেয়ার করব।
আপনারা সকলেই জানেন কৃষ্ণনগরে মাটির পুতুল বিখ্যাত। এই শহরে প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে কমবেশী বিভিন্ন ধরনের মাটির পুতুল তৈরি হয়। এখনকার বাড়ির বউ রাও বসে থাকে না ।সংসারের কাজকর্ম সেরে তারাও মাটির কাজ করে। আপনারা সকলেই হয়তো জানেন । প্রথম পোস্টে আমি জানিয়েছিলাম আমিও মাটির কাজ করি। ছোট থেকেই দেখতাম মামারা মাটির কাজ করতো ।আমার সেখান থেকেই টুকটাক কাজ শেখা। মাটির কাজ করতে আমার ভালো লাগে।
তবে আপনার হয়তো শুনেছেন ঈশার বাবা একজন শিল্পী। ঈশার বাবা বড় বড় মডেল তৈরি করে। কিন্তু আমরা যে কাজগুলো করি সেগুলো ছোট ছোট পুতুল। পুতুলগুলি বিভিন্ন রকমের হয়। আমাদের কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। আমি পাশের বাড়ি একটা কাকার কাছে কাজ করি। কাকাদের কিছু অসুবিধার জন্য বেশ কয়েক দিন কাজ বন্ধ রেখেছিল। এখন আবার পুনরায় কাজ শুরু করেছে। তাই আমিও কাকাদের সাথে কাজ শুরু করেছি। আমি পুতুলের কাঁচা অবস্থায় হাত আর পা তুলে দিয় । তারপর পুতুলগুলি পোড়ানোর পর আমি রঙের কাজ গুলো করি। রঙের অধিকাংশ কাজই আমি পারি ।যে যে কাজগুলো আমি পারি সেইগুলো কাকা আমাকে দিয়ে করায় । আসলে আমি বাড়িতে একা থাকি। তাই সময় কাটতে চাই না । নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য সব সময় কাজ নিয়ে থাকি।আসলে আপনারা পুরো রেডি করা পুতুল দেখেছেন।
কিন্তু কিভাবে আমরা পুতুল তৈরি করি সেটাই আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। প্রথমে আমরা মাটিগুলো কিনে নিয়ে আসি।
আমাদের এখানে এক বস্তা মাটির দাম প্রায় ষাট
টাকা। এরপর আগের দিন মাটিগুলি জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হয়।পরের দিন মাটির পা দিয়ে ছানতে হয়। মাটিগুলি ভালো করে মেখে মাটির মধ্যে থাকা কাকড় গুলো বাঁছতে হয় ।না হলে মাল পোড়ানোর সময় পুতুলগুলি বাস্ট করবে ।মানে আগুনের তাপে কাকড় গুলি বাস্ট করলে পুতুলগুলি ভেঙ্গে যায়।
কাকড় গুলি বেছে নেওয়ার পর মাটিতে তুলো মেশাতে হয়। মাটিতে তুলো না মেশালে মাটির পুতুল গুলো যখন শোকাবে তখন ফেটে যাবে। এছাড়া মাটিতে তুলো মেশালে পুতুল তুলতে খুব সুবিধা হয়।
পরের দিন কাকা আমাকে মাটি মেখে,পায়ের তার কেটে ,কিছু পা তুলতে দিয়ে গেছে। পায়ের তার গুলো সাইজ করে কাটতে হয় ।আমি পুতুলের পা কিভাবে তুলি সেটাই আপনাদের শেয়ার করছি।
প্রথমে ছাঁচে দেওয়ার জন্য পরিমাণ মতো মাটি নিয়ে তারপরে মাটিটা দুই হাতের মাধ্যমে সরু করে নিয়েছি।সরু করে নেওয়া মাটিটা ছাঁচের মধ্যে দিয়ে আঙুলের সাহায্যে ছাঁচ সমান করে মাটি দিয়েছি। দুটো ছাঁচেই মাটি দেওয়ার পর আমি তারটাকে ছাঁচের মধ্যে দিয়ে দিয়েছি। এরপর আঙুলে করে জল নিয়ে দুটো ছাঁচে মাটিতে লাগিয়ে নিয়েছি। মাটিতে জল লাগিয়ে নেওয়ার পর দুহাত দিয়ে ছাঁচ দুটো একসঙ্গে জোড়া লাগিয়ে নিয়েছি।
এরপর ছাঁচ থেকে একটা পাট খুলে নিলেই আমার তৈরি হয়ে গেল পুতুলের পা। পুতুলের পা তৈরি করার পর ওগুলোকে আবার একটা বাসের চেয়ারির সাহায্যে সারতে হয়। আমরা এই ভাবেই ছাঁচে মাল তুলে থাকি ।পুতুলের প্রত্যেকটা জিনিস ছাঁচে এই ভাবেই তোলা হয়। প্রতিটি জিনিসের আলাদা আলাদা ছাঁচ তৈরি করা থাকে। আমি আমার কাজ টাকে আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। একটা পুতুল তৈরি করতে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আপনাদের যদি ভালো লাগে আমি পরবর্তী স্টেপ তুলে ধরার চেষ্টা করবো।আজ এই পর্যন্তই থাক।
আমাদের এলাকাতে আমি পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে ছোট ছোট মাটির পুতুল দেখতাম, কিন্তু এখন আর সেগুলো দেখা যায় না। সংসারের পাশাপাশি কোন কাজ করা ও থেকে বেনিফিট পাওয়াটা সবথেকে উত্তম আমার কাছে মনে হয়।
আমাদের কোম্পানিতে যেগুলো বিদেশি পুতুল হয় বা শোপিস থাকে সেগুলো আপনারদের মতোই প্রায়ই প্রায়ই তৈরি করা হয় ওটার মধ্যে শুধু উন্নত জাতের কাঁচামাল এবং ভালো করে ফায়ারিং ফিনিশিং করে গ্লেজ করে ফাইন করা হয় কালার করা হয়।
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো প্রাচীন যুগের কাজটি ধরে রাখার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের বিদেশি পুতুল বা শোপিস তৈরি হয়। আপনাদের ওখানে পাঁচ ছয় বছর আগে পুতুল তৈরি হতো কিন্তু এখন দেখা যায় না। কিন্তু আমাদের এখানে আমি এই ছোট থেকে দেখে আসছি একই ভাবে এখনো চলে আসছে পুতুলের কাজ। পুতুলের কাজ করে এখনো অনেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। আমার পোস্টটিতে এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ইশা দিদির পোস্টে জানতে পেরেছিলাম ওনার বাবা খুব বড় একজন শিল্পী। তবে আজকে আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে ওনার বাবা সম্পর্কে আরো অনেকটাই ক্লিয়ার হলাম। আসলে মাটি দিয়ে অনেক ধরনের জিনিস তৈরি করা হয়। সেটা আমি জানতাম আপনারা মাটি দিয়ে পুতুল তৈরি করেন। আজকে তার কিছু বর্ণনা আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি কথা বলতে কাজটা এতটা সহজ নয়, যতটা সহজ ভাবে আপনি আমাদের সাথে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ মাটি দিয়ে তৈরি করার পুতুল সম্পর্কে আমাদের সাথে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
নিজে চোখের সামনে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না যে পুতুলের কাজে আমরা কত পরিশ্রম করি। সব কাজে পেছনেই পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু পুতুলের পিছনে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মাটির কাজ কতটা নিখুঁতভাবে করতে হয় সেটা আমি অনুমান করতে পারি। কেননা আমরা নিজেরাও ঘর এবং আমাদের চুলা তৈরি করার ক্ষেত্রে, এই মাটির কাজ করে থাকি, আর পুতুলের জন্য তো আরো বেশি পরিশ্রম করতে হয়। কেননা প্রত্যেকটা আকৃতি অনেকটা নিখুঁতভাবে দিতে হয়। তা না হলে তার সৌন্দর্য বেড়ে ওঠে না। একদমই ঠিক বলেছেন অনেকেই চোখের সামনে না দেখলে বিশ্বাস করবে না। তবে আমি আপনার কথা অবশ্যই বিশ্বাস করি আপনাকেও ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে একটা সময় ছিলো আমি দেখেছি মাটির তৈরি অনেক জিনিস কিন্তু যতো দিন যাচ্ছে আমাদের দিকে মাটির জিনিস গুলো খুব বেশি দেখা যাচ্ছে না।
যে কোনো একটি হাতের কাজ যেনে রাখা এবং কোন একটি শিল্প কাজ শিখে রাখা অনেক ভালো। এবং মাটি দিয়ে অনেক কিছু তৈরি হয় এটা আমরা সবাই কম বেশি জানি। কিন্তু আপনারা যে মাটি দিয়ে এতো সুন্দর করে পুতুল তৈরি করেন এটা আমি আজকে জানলাম। এবং আপনাদের দিকে বিখ্যাত এটা জানতে পেরে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি কৃষ্ণনগরে আসলে মাটির পুতুল দেখতে পাবেন। আমাদের ঐদিকে হয়তো মাটির জিনিস দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু আমাদের এদিকে যত দিন যাচ্ছে কাজের প্রেসার আরো বেড়ে যাচ্ছে। চেষ্টা করব পুরো পুতুলটা আপনাদের সামনে তুলে ধরার। তাহলেই বুঝতে পারবেন। এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে মাটির কাজ এই জিনিসটা অনেক সুন্দর মাটি দিয়ে যে সব ধরনের জিনিস তৈরি হয় এগুলো দেখতেও অনেক সুন্দর হয়। আমাদের বাড়ির ওখানে এক সময় পুতুল হাড়িকুড়ি অনেক কিছু বানাতক যেগুলো মেলায় বিক্রি হতো আসলে এ মাটির যেগুলো বানায় এগুলো যখন রং করা হয় তখন অনেক সুন্দর লাগে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম আপনি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আপনি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মাটি দিয়ে অনেক কিছুই তৈরি হয়। আমাদের এখানে মাটি দিয়ে শিল্পীরা অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরি করে থাকে ।চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
TEAM 7
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator09.Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দিদি আজ আপনি আমাদের সাথে দারুন একটি বিষয় ভাগ করে নিয়েছেন। আমরা অনেকেই মাটির পুতুল ব্যবহার করি কিংবা ছোটদের উপহার দিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা জানিনা কিভাবে এই মাটির পুতুল তৈরি হয়। আপনার লিখার মাধ্যমে আজ কিছুটা ধারণা পেলাম। পুতুল তৈরিতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিটা অঙ্গ প্রতঙ্গ তৈরি করতে আলাদা আলাদা পরিশ্রম করতে হয়।
আমার সবথেকে বেশি একটি বিষয় মনে হলো আর সেটি হলো ধৈর্য্য। ধৈর্য্য ছাড়া কখনই এই কাজ করা সম্ভব নয়। আপনি নিশ্চই অনেক ধৈর্য্যশীল একজন মানুষ। আপনার পুতুলের পা তৈরি করা দারুণ হয়েছে। ভালো থাকবেন দিদি। আপনার আগামী লিখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সব কাজই ধৈর্যের কাজ। পুতুল তৈরি করা আরও বেশি ধৈর্যের কাজ। অনেক সময় আমরা পুতুল তৈরি করতে করতে নিজেদের ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। আমার পোস্টে এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি এতো সুন্দর একটা কাজের সাথে জড়িত আমি আগে জানতাম না।আসলে শিল্পী হতে গেলে সুন্দর একটা মনের প্রয়োজন আছে।আপনি পুতুল বানানোর পর রঙের বিভিন্ন কাজ করতে পারেন।কিভাবে উত্তমরূপে একটা পুতুল বানিয়ে শুকিয়ে রঙ করিয়ে বাজারজাত করা যায় আপনি তার একটা সুষ্ঠু ধারা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।তাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সব কাজ করতে গেলেই একটা সুন্দর মনের প্রয়োজন হয়। তবে শিল্পী সত্তাকে জাগিয়ে তোলার জন্য মানুষের আরও একটি সুন্দর মন গড়ে তোলা দরকার। এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি কথা বলতে কি আমার এভাবে মাটির তৈরি কাজ করা কখনো সামনা সামনি দেখার সুযোগ হয়নি।
তবে হ্যাঁ! ইশা দিদির পোস্টে পড়েছিলাম ওনার বাবা একজন শিল্পী।
এই মাটি আমার একটি জিনিস যেটা দিয়ে বিভিন্ন রকমের জিনিস তৈরি করা যায়।
মাটি নিয়ে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit