বোনেদের সাথে ঠাকুর দেখতে যাওয়া

in hive-120823 •  9 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন আশা করছি সকলেই ভাল আছেন আজকে আবারো নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনাদের মাঝে আশা করি সকলেই খুব ভালো লাগবে।

IMG20241109190423.jpg

আপনারা কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পূজার সম্পর্কে হয়তো অনেক কিছুই শুনেছেন। কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো খুবই বিখ্যাত। কৃষ্ণনগরের পুজো দেখতে বহুদূর থেকে মানুষ জগদ্ধাত্রী প্রতিমা দর্শন করতে আসে। ঠিক তেমনি আমাদের কৃষ্ণনগরে প্রত্যেক বাড়ি বাড়িতে সকলেরই আত্মীয়-স্বজন পূজোতে আনন্দ করার জন্য আসেন। আমার মামার বাড়ি যেহেতু আমার বাড়ির কাছেই। তাই আমার মা ,বোন সকলেই মামার বাড়িতে এসেই থাকেন। আমার বাড়িতে সচরাচর কেউ আসতে চায় না। কিন্তু মামার বাড়িতে থাকলেও মা ,বোনেদের সাথে আমাকে সঙ্গ দিতে হয়। আজ বিকেল বেলাতেই মা আর দুই বোন বোনের মেয়ে সকলে এসেছে জগদ্ধাত্রী পুজোতে আনন্দ করবে বলে।

IMG_20241110_004513.jpg

ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া

কিন্তু বোনেদের সমস্ত বায়না দিদিকে ঘিরে। বোনেরা বিকেল বেলায় বায়না করলো, তারা নাকি নতুন জামা কিনতে যাবে। জামা কিনে নিয়ে এসে তবেই ঠাকুর দেখতে বেরোবে। যাইহোক দুই বোনের সাথে আমি বেরিয়েছিলাম বিকেল বেলায় বোনেদের জামা কিনবার জন্য। পুজোর সময় রাস্তাতে প্রচন্ড গাড়ি-ঘোড়া মানুষের ভিড়। আমাদের কৃষ্ণনগরে অলিতে গলিতে সমস্ত জায়গাতেই জগদ্ধাত্রী পূজা হয়। বোনেদের জামা কেনা হয়ে গেলে আমরা তিনজনেই হাইস্ট্রিটে বেশ অনেকগুলোই ঠাকুর দেখেছিলাম। আমাদের কৃষ্ণনগরের সবথেকে বিখ্যাত পুজো চাষা পাড়া বুড়িমার।

IMG_20241110_004705.jpg

ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া

বুড়িমা প্রতিমার গল্প আপনারা হয়তো আগের পোস্টে পুরোটাই পড়েছেন। বুড়িমা প্রতিমা দর্শন করতে হাজারো ভক্তের ভিড় ঠেলে তবেই ঢোকা সম্ভব হয়ে ওঠে। কারণ ওখানে সবসময়ই প্রচুর ভক্তের আনাগোনা লেগেই থাকে। আমরাও তিনজন মিলে ভিড় ঠেলতে ঠেলতে পৌঁছেছিলাম আমাদের কৃষ্ণনগরের রাজরানী বুড়িমার দর্শন করতে। তখন বহু ভক্ত মায়ের কাছে পুজো দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দেওয়ার জন্য ব্যস্ত। আবার আমাদের বুড়িমা প্রতিমাকে দশ কেজি সোনার গহনা পড়ানো হচ্ছে। কিছুক্ষণ তিন জন মিলে মায়ের গহনা পড়ানোর দৃশ্য দেখেছিলাম।

এরপরেই পাশেই দেখলাম ওখানে নৃত্যানুষ্ঠান হচ্ছে। বেশ তিন থেকে চার দিন ধরেই ওখানে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা সেই অনুষ্ঠান বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। যেকোনো নাচের অনুষ্ঠান দেখতে আমার তো বেশ ভালোই লাগে। ওখান থেকে আবার খানিকটা গিয়েই আরো একটা ঠাকুর সেখানে বেশ ভালোই মেলা বসে। সেই প্রতিমাটি দর্শন করলাম আমার বোনেরা মেলায় ঘুরে ঘুরে কিছু জিনিসপত্র কেনাকাটা করল। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে আবার পাশে আরেকটি ঠাকুর সেটাকে দর্শন করে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিলাম।

এরকমই কৃষ্ণনগরে একের পর এক ঠাকুর যা দেখে শেষ করা যাবে না। একেক জায়গায় একেক রকম প্যান্ডেল করা হয়েছে। আবার একেকটা বারোয়ারি ক্লাবে বিভিন্ন রকম লাইটিং এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছে। এইসব দৃশ্য নিজের চোখে না দেখে কখনোই বোঝা যাবে না। কৃষ্ণনগরে এই জগদ্ধাত্রী পুজো বাঙ্গালীদের আবেগ। এই ঐতিহ্যপূর্ণ পুজোর অপেক্ষায় আমরা বসে থাকি গোটা একটা বছরের অপেক্ষায়। যাইহোক বিকেল বেলায় কয়েকটা প্রতিমা দর্শন করে এসেছিলাম ।ইচ্ছা আছে রাতের খাবার শেষ করে আবার প্রতিমা দর্শন করতে বেরোনোর। জগদ্ধাত্রী পুজোতে বাড়িতে একদমই মন বসে না চারি দিকেই মাইকের শব্দ , ঢাকের আওয়াজ এছাড়াও বিভিন্ন বাজনার শব্দে মনটা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। কখন ছুটে যাব মায়ের মন্ডপে।


আজ এখানেই শেষ করছি। আবার পরবর্তী গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে। সবাই ভাল থাকবেন ।সুস্থ থাকবেন। সকলকে জানাই জগদ্ধাত্রী পূজার অনেক অভিনন্দন এবং আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সর্বশেষ কবে এভাবে বোনদের সাথে বা ভাই-বোনদের সাথে ঠাকুর দেখেছি মনে নেই। তবে এটা বেশ মনে আছে শৈশবে সকলে মিলে একসাথে পুজোতে অনেক আনন্দ করতাম। যদিও ভারতের মতো এত প্রতিমার দর্শন পাওয়া আমাদের দেশে সম্ভব না তবুও সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব।

ঠাকুর দেখার স্মরণীয় ঘটনা যেটা শৈশবে বাবা-মায়ের সাথে একবার ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলাম এবং বড় ধরনের একটি বাস দুর্ঘটনা হতে যাচ্ছিল। হয়তো মায়ের কৃপায় সেই যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিলাম।

এই বছর বাৎসরিক পুজোতে ঢাকের আওয়াজ বাড়ি থেকে শোনার সৌভাগ্য হয়নি। এমনকি অন্যান্য বছরের মত পুজো মন্দিরে ভিডিও দেখতে পারিনি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে লেখাটি উপস্থাপন করার জন্য।

muzack1.gif

Loading...

muzack1.gif

পুজোর সময় ভাই-বোনদের নিয়ে ঠাকুর দেখা একটি আনন্দের বিষয়। এবং আপনাদের যখন পূজা শুরু হয় তখন বাসায় অনেক আত্মীয়-স্বজন আসে । তাদের সাথেও ঠাকুর দেখতে যাওয়ার আনন্দ আসলেই অন্যরকম লাগে। যাইহোক ভাই-বোনদের সাথে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।