মাকে নার্সিংহোমে দেখতে যাওয়া আসার পথে ঘটে যাওয়া দুটি দুর্ঘটনা

in hive-120823 •  20 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই ভালো আছেন ।আজকে নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।

IMG20250107101722.jpg

কিছুদিন আগে আপনাদের মাঝে আমার মায়ের অসুস্থতা শেয়ার করেছিলাম। এই চারদিন ধরে সকালে বিকেলে দুই বেলাতেই মাকে দেখার জন্য নার্সিংহোমে যেতে হচ্ছে। গত তিনদিন ধরে একেবারেই খুবই অসুস্থ ছিল। আজকে একটু ভালো আছে। প্রত্যেকদিন আমি আর ছোট মামা দুইজন মিলে মাকে দেখার জন্য নার্সিংহোমে যাই ।কিন্তু আজকে ছোট মামা না থাকায় সকাল বেলাতে আমি একা একাই চলে গিয়েছিলাম মাকে দেখার জন্য। প্রথমে ভেবেছিলাম সকালবেলা উঠে হয়তো যেতেই পারব না। আবার না গেলে নার্সিংহোমে যারা ভর্তি রয়েছে আশেপাশে সকলের বাড়ির লোক যাই ।মায়ের সাথে দেখা করার জন্য যদি কেউ না যায় মায়ের মনটা খারাপ হয়। তাই সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে বাড়ির কাজকর্ম সেরে বেরিয়ে পড়েছিলাম মায়ের সাথে দেখা জন্য।

IMG20250107163421.jpg

বাড়ি থেকে বেরোতেই অনেকটা দেরি হয়ে গিয়ে ছিল। রাস্তায় বেরিয়ে কোন টোটো যেতে চাইছিল না। কারণ টোটো ওয়ালারা একজনকে কোথাও নিয়ে যেতে চায়না। খানিকক্ষণ হাঁটার পর একটা টোটো ওয়ালা যেতে রাজি হল ।তাও আবার বেশি ভাড়া চাইছিল ।কিন্তু কিছু করার নেই বাধ্য হয়ে যেতে হল। সকালবেলার টাইমে রাস্তায় এত জ্যাম হয় যে ১০ মিনিটের রাস্তা কুড়ি মিনিট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে যেতে হয়। কারণ সকালবেলায় মেন রাস্তা দিয়ে বেশিরভাগ টোটো ওয়ালাদের যেতে দেওয়া হয় না। যাই হোক প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ পৌঁছে গিয়েছিলাম মায়ের কাছে ।দেখার সময় দশটা থেকে ১১ টা। প্রথমেই আজকে গিয়ে দেখি নার্সিংহোমে যেন মাছের বাজার বসেছে ।এক একটা পেসেন্টকে দেখার জন্য প্রায় পাঁচ থেকে সাতজন করে এসে ভিড় জমিয়েছে।

IMG20250107164103.jpg

কিছুক্ষণ পর দেখি একটা পেসেন্টকে দেখতে এসেছে তার বাড়ির লোক সেই নিজেই অসুস্থ হয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গেল ।তাকে আবার খানিকক্ষণ সেবা সুশ্রূষা করে আমার মা যে বেডে ছিল সেখানেই তাকে বসিয়ে রাখা হলো। সকাল বেলাতে নার্সিংহোমে এত পরিমাণে ভিড় আমি নিজেও অস্বস্তি বোধ করছিলাম। অসুস্থ রোগীদের কাছে এত পরিমাণে ভিড় করলে তো সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়বে, যাই হোক যিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তিনি খানিকক্ষণ পর সুস্থ হয়ে উঠেছিল। এবারে বলি বিকেলে দেখতে যাওয়ার ঘটনা বিকেলবেলায় আমি আর বোন মিলে দুজনে গিয়েছিলাম মায়ের সাথে দেখা করবার জন্য। বিকেল বেলাতে মাত্র ৩০ মিনিট দেখতে দেওয়া হয়।

IMG20250107164614.jpg

বিকেল বেলায় তেমন কোন ভিড় ছিল না। মায়ের সাথে দেখা করার পর দুই বোন মিলে কিছুটা পথ হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। তার মাঝেই ঘটে গেল আর একটি ঘটনা। কৃষ্ণনগরে গ্রীন সিগনাল আর রেড সিগন্যাল কিছুদিন হল চালু করা হয়েছে। শহরের রাস্তাঘাট প্রচণ্ড ভিড় হয়। তারই মধ্যে চারটের পর সমস্ত অফিস ,স্কুল, কলেজ সব কিছুরই ছুটি র সময় তাই রাস্তাঘাটে আরও বেশি পরিমাণে ভিড় হয়। তারই মধ্যে নিজেদের চোখের সামনে ঘটে গেল একটা দুর্ঘটনা ।একটা মেয়ে স্কুটি নিয়ে এমন জোরে যাচ্ছিল। হঠাৎই সজোরে ছিটকে গিয়ে গাড়ির সামনে পড়ে গেল। কিন্তু সামনের গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে পড়েছিল তাই নইলে আজকে হয়তো মেয়েটাকে গাড়ির নিচে পড়তে হতো। তবে রাস্তায় গাড়ির সামনে ছিটকে পড়েছে প্রচন্ড ব্যথা হয়তো পেয়েছে। কিন্তু আমার দাঁড়িয়ে দেখার একদমই সময় ছিল না।

কারণ বিকেল বেলায় আমার পড়ানো থাকে তাই আরো হুটো পাটা করে আমায় চলে আসতে হয়েছে। এই ছিল আজকে মাকে নার্সিংহোমে দেখতে যাওয়া আসার পথে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা।


আজ এখানে শেষ করছি। আবারো নতুন কোন গল্প নিয়ে হাজির হব। আপনাদের মাঝে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বেশ কয়েকদিন ধরে আমার আম্মারও শরীর অনেক অসুস্থ, আম্মাকে নানান জায়গায় ডাক্তার দেখাইতাছি। আপনার পোস্টটি পরে জানতে পারলাম। কাকিমা হসপিটালে ভর্তি তার জন্য দোয়া রইল সৃষ্টিকর্তা যেন খুব দ্রুত ভাবে তাকে সুস্থতা দান করে। আপনার পোস্টটি পরে জানতে পারলাম,রোগীর কোন এক আত্মীয় হসপিটালে গিয়েছিল সে অজ্ঞান হয়ে গেছে, রোগীর সাথে অভিভাবকরাও মাঝে- মাঝে রোগী হয়ে যায়, আপনার পোস্টটি পরে আরেকটি বিষয় জানতে পারলাম। একটা মেয়ে স্কুটি চালিয়ে এক্সিডেন্ট করত, কিন্তু অল্পের জন্য সে বেঁচে গিয়েছে। এই রকম একটি ভিন্ন বিষয়বস্তু আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দিদি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Loading...

দুর্ঘটনা জীবনে একটা ভয়ংকর রুপ নেয়, এক মিনিটের একটা দুর্ঘটনা হতে পারে সারা জীবনের কান্না, এরকম দুর্ঘটনা স্বীকার যেন কখনোই কেউ না হয় সে প্রার্থনা করছে।
আমি গত পোস্টে করেছি আপনার মা অসুস্থ আর আজ আপনি গিয়েছিলেন আপনার মাকে দেখতে, প্রার্থনা করছি আপনার মা যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক মা অসুস্থ হলে সন্তানের মন যে কেমনটা করে সেটা কিছুটা হলেও বুঝি।

এটা একেবারেই ঠিক অসুস্থ মানুষকে যখন বাড়ির লোক দেখতে যায় না বা তার সন্তান দেখতে যায় না তখন কিন্তু তার বেশি কষ্ট লাগে আপনার মা যেহেতু অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই আপনারা তাকে দেখতে গিয়েছেন কিন্তু সেখানেও আপনাদের সামনে একটা ঘটনা ঘটে গেছে আসলে আমাদের মানুষের সাথে কখন কি হয় সেটা আমরা কেউ জানি না তাই আমাদের অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

আসলে অতিরিক্ত জোরে গাড়ি চালানো মোটেও ঠিক না যখন বিশেষ করে বিকেল বেলায় স্কুল ছুটি হয় অফিস ছুটি হয় সেই সময়টাতে অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত সামনের গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে ছিল তা না হলে মেয়েটার কি অবস্থা হতো সেটা একটু হলেও ধারণা করা যাচ্ছে ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার ভাবে আপনার লেখা উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবেন।