কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য জগদ্ধাত্রী বুড়িমা

in hive-120823 •  10 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা সকলে কেমন আছেন আশা করছি সকলেই খুব ভালো আছেন। আজকে নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করি সকলেই খুব ভালো লাগবে।

IMG20241107212752.jpg

দেখতে দেখতে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়ে গেছে। দুদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় কৃষ্ণনগরে ঠাকুর দেখার ধুম। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শহর কৃষ্ণনগর সেজে উঠেছে আলোক সজ্জায়। সমস্ত কৃষ্ণনগরবাসী গোটা একটা বছর অপেক্ষায় থাকে এই জগদ্ধাত্রী পুজো জন্য। এই জগদ্ধাত্রী পুজো তে ঘিরে অনেকের অনেক আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আজকে আমি আমার পাড়ার পুজো সম্পর্কে কিছু বলছি না ।অন্য আরেকটি পোস্টে আমার পাড়া পুজো সম্পর্কে আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। আজকে শেয়ার করব আমাদের কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত বলতে পারেন কৃষ্ণনগরের রাজরানী বুড়িমা প্রতিমার গল্প। এক কথায় চাষাড়া বারোয়ারি বুড়িমা প্রতিমা বললে সকলে চেনেন।

IMG_20241109_011912.jpg

ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া

আমি প্রায় দুদিন ধরেই বুড়িমা প্রতিমা দর্শন করতে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন দেখেছিলাম প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে গেছে তখন সদ্য মাটির কাজ চলছিল। দ্বিতীয় দিন গিয়ে দেখেছিলাম মাটির কাজ শেষ হয়ে গেছে রংয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এখানে দুদিন আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়। যেহেতু নামকরা পুজো, তাই বহু ভক্তের আনাগোনা হয়। চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজা হলেও আমাদের কৃষ্ণনগরেই প্রথম শুরু হয়েছিল মা জগদ্ধাত্রী পূজা। কৃষ্ণনগর মৃৎশিল্পী শহরে জগদ্ধাত্রী পূজার শিকড় ছড়িয়ে রয়েছে।

IMG20241106215751.jpg

কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পূজা সূত্রপাত হয় কৃষ্ণনগরে রাজবাড়ী থেকে ।ঠিক সেই রকমই কৃষ্ণনগরের প্রত্যেকটা পূজা বাড়ি একটা করে অতীতে ইতিহাস রয়েছে। তবে সব চাইতে এদের মধ্যে বেশি ইতিহাস এবং ঐতিহ্যশালী পূজা কমিটি হলো চাষাপাড়া বারোয়ারি। তাদের মা জগদ্ধাত্রী বুড়িমা চাষাপাড়া বারোয়ারীর বুড়িমা প্রতিমা টির নামকরণ এর পিছনেও একটি ইতিহাস নাকি জড়িত আছে ।কথিত আছে যে যেখানে বারোয়ারি মন্দিরটি স্থাপিত সেখানে নাকি অতীতে কয়েকজন চাষী অর্থাৎ শ্রমজীবী মানুষরা বসতেন তো ওইখানে নাকি একজন পুরা বৃদ্ধা বুড়ি তিনিও আসতেন । তাদের সাথে খাবার ও অন্যান্য কিছু সামগ্রী ভিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করতেন।

IMG20241106215941.jpg

পরবর্তীতে রাজবাড়িতে যখন মায়ের আরাধনা শুরু হয় তারপর থেকে তারাও নাকি সেখানে জগদ্ধাত্রী মায়ের আরাধনা শুরু করেন। যেহেতু শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষরা সেখানে পূজাটা শুরু করেছিলেন ।তার জন্য বারোয়ারি আর এলাকার নামটি হয়ে যায় চাষাপাড়া বারোয়ারি। ওই বুড়ি বয়স্ক বৃদ্ধার নাম অনুসারে প্রতিমার নাম দেয়া হয় বুড়িমা। অনেকেই বলেন মা নাকি সেই তখন থেকেই ভীষণ জাগ্রত। পূজা এলেই তার কাছে যে যার মনস্কামনা চেয়ে বসে এই মনষ্কামনায় নাকি মা পূরণ করেন। এর ফলে মাকে সকলে খুশি হয়ে প্রচুর অলংকার, কাপড় ও আরো কত কি দিয়ে যান পূজা কমিটির কাছে। মাকে বেনারসি পড়ানো হয় এবং ডাকের সাজে সাজানো হয়। বর্তমানে বুড়ি মাকে এ বছর ১০ কেজির উপরে সোনার বিভিন্ন রকম অলংকার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পরিয়ে সাজানো হয়েছে। মায়ের পূজা অর্ঘ্য দেওয়ার জন্য এবং মায়ের পায়ে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য প্রচুর প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়।


কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রি পুজো নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে। সবকিছুই আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো।আজ এইখানেই শেষ করছি। পরবর্তী আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমি মনে করি আপনাদের রীতি অনুযায়ী ১২ মাসে ১৩ পূজা বললে ভুল হবে কেননা এটা হয়তোবা ভুল পরিচালিত একটি শব্দ আমার মনে হয় আপনাদের প্রত্যেক মাসে দুই থেকে তিনটে করে পূজা থাকে তাই যেকোনো পূজা হোক না কেন।

যাইহোক কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য জগদ্ধাত্রী বুড়িমা‌ পূজার উৎসবগুলো খুব ভালোভাবে আমাদের কাছে উপস্থাপনা করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ উৎসবের আনন্দ গুলো আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ভালো থাকবেন।

Loading...

প্রকৃতপক্ষে স্থান বা কোন কিছুর নামকরণের পেছনে এইরকম কোনো না কোনো ইতিহাস লুকিয়ে থাকে। ঠিক যেমনটা আপনি লেখাতেও উপস্থাপন করেছেন। জগদ্ধাত্রী পুজো আমি কখনো উপভোগ করার সুযোগ পায়নি।

পাশাপাশি আপনার লেখা থেকে কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত জগদ্ধাত্রী পূজা সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলাম। এমনকি আপনার লেখাটা পরিদর্শনের পরে আরো কৌতুহল কাজ করছে। অজানা অনেক তথ্য আপনার পরবর্তী লেখাতেও দেখতে পারবো। ধন্যবাদ দিদি, এই বিষয়টি আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।