রথযাত্রা

আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে আমি একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

প্রথমে সকলকে জানাই শুভ রথযাত্রার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাঙ্গালীদের ১২ মাসে ১৩ পার্বণ লেগেই থাকে। তার মধ্যে অন্যতম আষাঢ় মাসে রথযাত্রা উৎসব। ভারতবর্ষে সারা বছর ধরেই নানান রকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত হয়। ভারত বর্ষ হল উৎসবের দেশ। পুরী, মহেশ ,ইসকন ইত্যাদি জায়গায় খুব ধুমধাম করে রথযাত্রা পালন করা হয়। এছাড়াও যেখানে জগন্নাথ দেব রয়েছেন ।সেখানে রথযাত্রা পালন করা হয়। পৌরাণিক গল্পে আছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তন কে স্মরণ করেই রথযাত্রা পালন করা হয়।

আষাঢ় মাসের শুক্লা পক্ষের তৃতীয়া তিথিতে রথে চড়ে দাদা বলরাম এবং সুভদ্রা কে দেখতে যান জগন্নাথ দেব। এই যাত্রা কি বলে সোজা রথ। আমাদের বাড়ির কাছেই রথযাত্রা পালন করা হয়। প্রত্যেক বছর আমরা সেখানেই রথ দেখতে যাই। এছাড়া কৃষ্ণনগরের আরো বিভিন্ন জায়গায় রথযাত্রা উপলক্ষে মেলা বসে। আমাদের পাড়ায় বাড়ির সামনে দিয়ে ছোট বাচ্চারাও ছোট ছোট রথ টেনে বেড়ায়। রথ গুলোকে খুব সুন্দরভাবে সাজাই।

কিন্তু আমাদের এখানে যে বড়ো রথটা হয় । সেই রথটা বড়োরা করে। রথ টাকে ভালো করে রং করে সাজায় । বড়ো রথ অনেকটা দূর পর্যন্ত ঘোরানো হয়। প্রত্যেক বছর রথ ঘোরাতে আমার বড় মামা যায়। কিন্তু এবারে মামা বলছিল রথের চাকা অর্ধেক রাস্তায় ভেঙ্গে গিয়েছিল ।আবার কাঠের মিস্ত্রি ডেকে রথের চাকা সারিয়ে ।তারপরে রথ টেনে আনা হয়েছে। সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ছটা নাগাদ। যেখানে রথের মেলা হয়। সেইখানে রথ এনে রাখা হয়েছে। প্রত্যেক বারের মতো এবারেও রথে খুব ভিড় হয়েছিল। কিন্তু ছোটবেলায় রথের দিন খুব বৃষ্টি হতো। এখনো রথের সময় মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়। এ বছরে রথের দিন একদম বৃষ্টি হয়নি । সকাল থেকেই ছিল প্রচন্ড রোদ আর গরম।

আমি মামার মেয়ে দুজনে মিলে গিয়েছিলাম রথের মেলা দেখতে। মেলা দেখতে গিয়ে আগেই মামার মেয়ে আর আমি দুজনে মিলে রথের দড়ি টানলাম। রথের পাশেই জগন্নাথ দেবের ভোগ বিতরণ করা হচ্ছিল ।প্রতি বছর ভোগ বিতরণ করা হয় । রথের মেলা মানে পাপড় ভাজা। যেহেতু রথটা বাড়ির কাছেই হয়। তাই অনেক চেনা মানুষের সাথে দেখা হয়। মেলায় আমরা বেশিক্ষণ ছিলাম না।তাড়াতাড়ি রথে দড়ি টেনে বাড়ি চলে এসেছিলাম। এবারের রথের মেলা থেকে কিছু খাওয়া হয়নি। কারণ রাতের বেলায় আমাদের নিমন্তন্ন ছিল ।কিন্তু মেলা থেকে ঘুরে আসার পর বাড়িতে এসে দেখি আমার বর এসেছে। বর আবার বায়না ধরল মেলা দেখতে যাওয়ার জন্য। ওর সাথে আবার গেলাম রথের দড়ি টানতে। ও রথের দড়ি টেনে জগন্নাথ দেবকে প্রণাম করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে এসেছিলাম। কারণ মেলায় অনেক ভিড় ছিল। যেহেতু মেলাটা রাস্তার উপরে হয় তাই প্রচন্ড জ্যাম ছিল।

---

আজ এই পর্যন্তই থাক আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে ।পরবর্তী কোন গল্প নিয়ে আবার হাজির হব আপনাদের মাঝে।