নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই ভালো আছেন ।আজকে নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আশা করছি সকলেরই খুব ভালো লাগবে।
পুঁইশাক খেতে অনেকেই ভালোবাসে। পুঁই শাক সাধারণত গরম কালে সকলেই খায়। পুঁইশাকের অনেক উপকারিতা যেমন আছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। গ্রামের মানুষ কিংবা শহরের মানুষ সকলেই বাড়িতে ছোটখাটো জায়গা থাকলেই সেখানেই পুঁই গাছ লাগিয়ে রাখে। বাড়িতে লাগানো পুঁইশাক খেতে খুব ভালো লাগে। তবে আশ্বিন মাসে পুঁই গাছের নাকি আশি ডগা বের হয়। এটা সত্য কিনা আমার জানা নেই। তবে মা দিদার মুখ থেকে শোনা কথা। পুঁই গাছ যেখানে সেখানে কোন রকম যত্ন ছাড়াই জন্মায়। শীতকালে পুঁই গাছে ফল হয়। সেটাকেই বলা হয় পুঁই মুচুরি। পুঁই মুচুরি কাঁচা অবস্থায় সবুজ হয় আর পাকলে নীলচে কালো রঙের হয়। তবে সবজির মধ্যে অতি পরিচিত হলো পুঁই মুচুরি।
পুঁইশাকের ফল খেলে বিভিন্ন রকম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পুঁইশাকের ফল থেকে বিভিন্ন রকমের ঔষধ তৈরি হয়। পুঁইশাকের বীজ খেলে ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এছাড়াও রক্তে ফ্যাট বাড়ার আশঙ্কা কমে যায়।পুঁই শাকের বীজ খেলে বহু রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি অপকারিতা ও পাওয়া যায়। যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের পুঁই শাকের সমস্ত জিনিস খাওয়া নিষিদ্ধ। আজকে আমি কাঁচা পুঁই মুচুরি, বিভিন্ন রকমের সবজি দিয়ে যেমন মিষ্টি কুমড়ো ,আলু ,শিম, বেগুন , মটরশুঁটি, এবং চিংড়ি মাছ দিয়ে চচ্চড়ি। একদমই কুচো চিংড়ি চিংড়ি মাছগুলোকে বলা হয় ভাতি চিংড়ি। এগুলো সমুদ্রের চিংড়ি মাছ। চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁই মুচুরি চচ্চড়ি রেসিপি আজকে শেয়ার করব।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | পুঁই মুচুরি | ৩০০ গ্ৰাম |
২ | মাঝারি সাইজের আলু | ২ টো |
৩ | বেগুন | ১ টা |
৪ | মটরশুঁটি | ১০০ গ্ৰাম |
৫ | শিম | ১০০ গ্ৰাম |
৬ | মিষ্টি কুমড়ো | ২০০ গ্ৰাম |
৭ | চিংড়ি মাছ | ৪০০ গ্ৰাম |
৮ | কাঁচা লঙ্কা | ১০ টা |
৯ | আদা | ৫০ গ্ৰাম |
১০ | রসুন | ৫ কোয়া |
১১ | জিরে | ১ চামচ |
১২ | টমেটো | হাফ |
১৩ | মিট মসলা | ১ চামচ |
১৪ | সাদা তেল | ৭৫ গ্ৰাম |
১৫ | শুকনো লঙ্কা | ১ টা |
১৬ | পাঁচফোড়ন | সামান্য |
১৭ | লবণ | আড়াই চামচ |
১৮ | হলুদ | দেড় চামচ |
প্রথম ধাপ
প্রথমেই পরিমাণ মতো কাঁচা পুঁই মুচুরি নিয়েছি আর সমস্ত রকম সবজি রেডি করে নিয়েছি।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর সমস্ত সবজি গুলো সাইজ করে কেটে নিয়েছি। আর পুঁই শাকের ডাল থেকে পুঁই মুচুরি গুলো ছাড়িয়ে নিয়েছে। সমস্ত চিংড়ি মাছ ভালো করে বেঁচে নিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে লবণ, হলুদ মাখিয়ে রেখে দিয়েছি। এছাড়াও সমস্ত মসলা রেডি করে নিয়েছি। একদমই ছোট ছোট চিংড়ি মাছ ছিল। আপনারা চাইলে একটু বড়ো চিংড়ি মাছ দিতে পারেন।
তৃতীয় ধাপ
এবারে গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াই গরম হলে পরিমাণ মতো সাদা তেল দিয়েছি ।তেল গরম হলে চিংড়ি মাছগুলো ভালো করে ভেজে নিতে হবে। ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে একটা পাত্রে তুলে রেখে দিতে হবে।
চতুর্থ ধাপ
এরপর আরো খানিকটা তেল এড করে তেল গরম হলে তেলের মধ্যে শুকনো লঙ্কা আর পাঁচফোড়ন দিয়ে দিয়েছি।
পঞ্চম ধাপ
এবারে ওই তেলের মধ্যে সমস্ত সবজিগুলো দিয়ে দিতে হবে। সবজির মধ্যে আমি পরিমাণ মতো লবণ ,হলুদ অ্যাড করে দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে। নাড়াচাড়া করে খানিকক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে।
ষষ্ঠ ধাপ
খানিকক্ষণ পর ঢাকনা খুলে দেখা যাবে সমস্ত সবজি ভাজা ভাজা হয়ে গেছে। এমনকি সবজি থেকে জল বের হয়েছে। সবজির জল শুকিয়ে আসলে পেস্ট করে রাখা সমস্ত মসলা দিয়ে দিতে হবে। মশলা তে আমি এখানে কাঁচালঙ্কা, আদা, রসুন, জিরে, টমেটো পেস্ট করে নিয়ে পরিমাণ মতো মিট মসলা মিশিয়ে নিয়ে ব্যবহার করেছি।
সপ্তম ধাপ
সমস্ত মসলা দেওয়ার পর সবজি গুলো ভালো করে নাড়াচাড়া করে কষিয়ে নিতে হবে। খানিকক্ষণ কষানোর পর পরিমাণ মতো জল দিয়ে আবারো ঢাকা দিয়ে দিতে হবে।
অষ্টম ধাপ
সমস্ত সবজি যখন ভালো হবে সিদ্ধ হয়ে যাবে তখনই ভেজে রাখা চিংড়ি মাছগুলো দিয়ে দিতে হবে। চিংড়ি মাছগুলো কড়াইতে দিয়ে আবারো খানিকক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে।
নবম ধাপ
এরপর খানিকক্ষণ ঢাকনা খুললেই তৈরি হয়ে যাবে চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁই মুচুরি চচ্চড়ি। তরকারি ঝোল আপনারা আপনাদের পরিমাণমতো রাখবেন।
এরকম ঘরোয়া পদ্ধতিতে চচ্চড়ি তৈরি করে খেতে অসাধারণ লাগে ।আসলে আমাদের বাড়িতে আমার শ্বশুর মশাই চচ্চড়ি খেতে খুবই পছন্দ করেন ।উনার জন্য প্রায়ই আমাদের বাড়িতে যেকোনো ধরনের চচ্চড়ি তৈরি করতে হয়। আজকে আপনাদের মাঝে খুব সুন্দর একটা চচ্চড়ি শেয়ার করলাম। আমাদের মত প্রত্যেক ঘরে ঘরে চচ্চড়ি ছাড়া হয়তো ভাত খাওয়া হয় না। অনেকে ঝামেলার জন্য হয়তো চচ্চড়ি রান্না করে খাই না। তবে এই পদ্ধতিতে পুঁই মুচুরি চচ্চড়ি তৈরি করে খেলে সত্যি খুব ভালো লাগবে। বিশেষ কিছু উপাদান ব্যবহার করিনি। আপনারা আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সবকিছু ব্যবহার করবেন।
আজ এখানে শেষ করছি। আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
আপনার শেয়ার করা পুঁই মুচুরি চচ্চড়ির রেসিপি দারুণ লেগেছে! সুন্দরভাবে প্রতিটি ধাপ বর্ণনা করেছেন, যা একজন নতুন রাঁধুনির জন্যও সহজবোধ্য। পুঁই শাকের পুষ্টিগুণের পাশাপাশি চচ্চড়িতে চিংড়ি মাছের সংযোজন তরকারিটিকে আরো সুস্বাদু করেছে। ছবিগুলোর মাধ্যমে পুরো রান্নার প্রক্রিয়া স্পষ্ট হয়েছে, যা রেসিপিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
এভাবে ঘরোয়া রেসিপি আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং পরিবারের সবার মন জয় করে। পরবর্তী রেসিপির অপেক্ষায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit