আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন ।সুস্থ আছেন ।আমিও ভালো আছি। সুস্থ আছি। আজ আমি একটা নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রত্যেক বছর আষাঢ় মাসে ৭ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত অম্বুবাচী পালন করা হয়। যাদের স্বামী মারা যায় তারা সাধারণত এই দিনগুলি পালন করে। যেহেতু আমার দাদু জীবিত নেই। তাই দিদা পালন করে। কেন পালন করা হয় তা আমার জানা নেই। এই দিনগুলি ফল আর মিষ্টি খেয়ে থাকতে হয়। এছাড়া এই দিন কোন টাটকা খাবার খাওয়া যায় না। জলটাও পর্যন্ত বাসি খেতে হয়। এই দুই দিন কোন গরম জিনিস খাওয়া যায় না। এমনকি আগুনের কাছে যাওয়া যায় না। গরম জিনিস ছোঁয়া যায় না ।আরো অনেক নিয়ম কারণ আছে। এছাড়া ও এই দুইদিন পূজা করেন না। বাড়িতে কালী ঠাকুরের ছবি থাকলে সেগুলো উল্টে রাখে বা ঢেকে রাখতে হয়।
এই তিন দিন নাকি কালি ঠাকুরের মুখ দেখতে নেই। কিন্তু কামাখ্যায় মা কালীর মন্দিরে অনেক ভক্তদের ভিড় হয়। যারা অম্বুবাচী পালন করে তাদের ফল কিনে দিতে হয়। আমাদের বাড়ি যিনি কাজ করেন তিনিও অম্বুবাচী পালন করে। তাকে শাশুড়ি মা টাকা দিয়েছিল। ফল কিনে খাওয়ার জন্য। আর আমাকে বলেছিল দিদাকে ফল কিনে এনে দেওয়ার জন্য। দিদা যেহেতু একদিন অম্বুবাচী পালন করে ।তাই আগের দিন ফল কিনতে গিয়েছিলাম ।কিন্তু সকাল থেকেই খুব বৃষ্টি ।যাইহোক বিকেল বেলায় বৃষ্টি পড়ছিল না। তাই আমি আর বোন দুজনে মিলে বেরিয়ে পড়েছিলাম ফল কেনার উদ্দেশ্যে।
বোন দিদার বাড়ী এসেছিল ।কারণ দিদা যেহেতু রান্না বা কোন কাজ কিছু করতে পারবে না। তাই কাজে সাহায্য করার জন্য বোন এসেছিল। আমি গিয়ে দিদার বাড়ি থাকতে পারবো না । আমার বাড়িতে অনেক কাজ রয়েছে। আমার গিয়ে থাকা সম্ভব না।তাই মা বোনকে পাঠিয়েছিল। সেই দিন সন্ধ্যা বেলায় আমি আর বোন রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম আকাশে পূর্ণিমার গোল চাঁদ। আকাশটা দেখতে বেশ ভালোই লাগছিল। আমরা দুজনে মিলে সন্ধ্যেবেলায় হেঁটে হেঁটে বেরিয়ে পড়েছিলাম।
শহরের রাস্তা গাড়ি ঘোড়া তো হবেই। সেদিন ফলের প্রত্যেকটি দোকানে খুব ভিড় ছিল। ফলের দামটাও খুব বেশি ছিল। দিদার জন্য কিছু আম ,কলা ,শসা এই সব ফল নিয়েছিলাম। কারণ দিদা বলেছিল বেশি কিছু আনতে হবে না। দিদা তো একদিন পালন করে তাই।
একটা মজার ঘটনা হলো আমার দাদু যে বছর মারা গিয়েছিল।সেই বছর অম্বুবাচীর দিনে দিদার জন্য দই, মিষ্টি এনে দিয়েছিল। কারণ দাদু জানতো না যে স্বামী বেঁচে থাকলে অম্বুবাচী পালন করতে নেই। দিদা যখন যে কোন পুজোর উপোস করলে দাদু দই ,মিষ্টি কিনে এনে দিত। সেই দিন মিষ্টির দোকানে খুব ভিড় দেখেছিল ।তাই দাদু ভেবেছিল হয়তো আজকে কোন পুজো আছে। তাই দিদার জন্য দোকান থেকে দই, মিষ্টি কিনে এনেছিল। বাড়িতে এসে তো আমরা কি মজাই না করেছিলাম। দাদু তখন বলেছিল আমি কি অত জানি? আমি ভাবলাম হয়তো দিদার উপোস করেছে ।তাই এগুলো কিনে এনেছিলাম
যাই হোক সেই বছরেই দাদুমারা গিয়েছিল। সেই থেকেই আমার দিদা অম্বুবাচী পালন করে আসছে। ফলের দোকান থেকে ফল কেনার পর বোন বলল একটা ঘড়ি কিনব ।বোন আর আমি দুজনেই চলে গেলাম ঘড়ির দোকানে। আসলে বোন যে ঘড়ি গুলো চাইছিল ।সেই ঘড়িগুলো দোকানে ছিল না। দোকানদার বলছিল ওই ঘড়িগুলো নাকি এখন ভালো হচ্ছে না। তাই দোকানদার বোনকে নিতে বারণ করছিল ।তাই সেইদিন আর ঘড়ি কেনা হলো না ।
আবার দুই বোন মিলে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরে আসলাম। দুইজনে মিলে গল্পে গল্পে খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেলাম বাড়ি। অম্বুবাচীর দিন সকলকে আম ,দুধ খেতে হয়। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠতেই শাশুড়ি মা বাটি করে আম দিয়ে দুধ খেতে দিয়েছিল।
আজ এই পর্যন্তই থাক আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। পরের দিন আবার নতুন কোন গল্প নিয়ে হাজির হব।
যাইহোক আজকে যে পোস্টটি আপনি শেয়ার করেছেন, সেটি আসলে অনেক সুন্দর ছিল আপনি আমার বোনের সাথে যে বাইরে কোথাও ঘুরে করতে গিয়েছিলেন এবং ঘড়ি কিনতে গিয়েছিলেন সেটাও অনেক ভালো ছিল। আর যদি কোন অনুষ্ঠান হয় সেদিনকে এমনিতে ফলের দোকানে ফলের দামটা একটু বেশি থাকে এটাই স্বাভাবিক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার পোস্টটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অম্বুবাচী পালন সম্পর্কে আগে কোন ধারণাই ছিল না। এ বিষয়টি এই প্রথম শুনলাম।ধর্মীয় অনেক রীতিনীতির মধ্যে এটি একটি। যাদের স্বামী থাকে না তাদের এটা পালন করতে হয়। আপনার দাদু বেঁচে থাকা অবস্থায় দিদার জন্য অম্বুবাচীর দিন দই মিষ্টি নিয়ে এসেছিল। আসলে সবাই সকল ধর্মীয় রীতি-নীতি সম্পর্কে অবগত নয়। এজন্যই মাঝে মধ্যে এমন ভূল হয়। ফল কেনার পর বোনের সাথে ঘড়ি কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভালো ঘড়ি না থাকায় কিনতে পারননি। যাহোক নতুন কিছু জানতে পারলাম আপনার পোস্ট থেকে। ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রত্যেক হিন্দুদের ই সব কিছুতেই ধর্মীয় রীতিনীতি লেগেই রয়েছে। আমার পোস্টটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি সনাতন ধর্মের সম্পর্কে অনেক অজ্ঞ।। যদি স্বামী মারা যায় তাহলে অম্বুবাচী করতে হয়, এছাড়া টাটকা খাবার খাওয়া যায় না এটা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে প্রথম জানলাম।।
আজ দুই বোনে বাজারে গিয়েছিলেন ফল কিনার সাথে ঘড়িও কিনতে চেয়েছিলেন।। যেমনটা চেয়েছিলেন তেমনটা না পাওয়ায় ঘুড়ি আর কেনা হলো না।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আগেকার দিন থেকেই এইসব নিয়ম গুলো চলে আসছে। তাই মানুষ কোন সেই আগেকার নিয়ম গুলোই পালন করছে। আমার পোস্টটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা একদম সঠিক বলেছেন পূর্বপুরুষেরা যেরকম করেছে এখনকার মানুষও সেই ভাবেই চলে থাকে, শুধুমাত্র তাদের কে সম্মান দেখিয়ে।।। যেটা আমার কাছে মনে হয়।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit