মা কালীর বিসর্জন

in hive-120823 •  13 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।

IMG-20241105-WA0031.jpg

কালীপূজা দেখতে দেখতে কেটে গেল ।আবারো একটা বছরের অপেক্ষায়। পুজোর কটা দিন বেশ খুব আনন্দে কাটিয়েছি। সমস্ত কিছুই আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। পুজোর দিনটি সারা রাত জেগে মায়ের পূজো দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছিল। আর পরের দিন সারারাত জেগে ঠাকুর দেখতে দেখতে সেই দিনটি কেটে গিয়েছিল। যেহেতু প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা মায়ের পুজোতে অংশগ্রহণ করেছিলাম এই প্রথমবার বরের ইচ্ছা মায়ের পুজোতে অংশগ্রহণ করবে। আমাদের বাড়ির সামনে পাড়ার মোড়ে পূজা হয় কিন্তু সেই পুজোতে আমার পর অংশগ্রহণ করতে চাই না। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে মা আগুনেশ্বরী পূজা হয়। সেখানকার পরিবেশ এমনকি মানুষজন দেখে ওর সবকিছুই ভালো লেগেছে। তাই ঠিক করেছে এই বছর থেকে নাকি ওখানে পূজা করবে।

IMG_20241105_182941.jpg

ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া

মায়ের বিসর্জনের দিন আমার একদমই যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না ।কারণ বাড়ি থেকে প্রায় অনেকটা হেঁটে তবে পৌঁছাতে হয় কৃষ্ণনগর কদমতলা ঘাটে। ইচ্ছে ছিল মায়ের বিসর্জন দিয়ে আসার পর আবার বাড়িতে খানিকক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবারো বিসর্জন দেখতে যাব। প্রাণের ঠাকুর টি যখন বিসর্জন দিতে যায় ।তখন বাজে রাত সাড়ে আটটা। বাড়ি থেকে কদমতলা ঘাটে খুব সুন্দরভাবে মাকে নিয়ে পৌঁছেছিলাম। তখন বাজে রাত সাড়ে দশটা। ঘাটের ধারে নিয়ে যাওয়া মাত্রই সকলে মিলে মায়ের গয়না খুলতে শুরু করল। আস্তে আস্তে সবকিছু খোলার পর। কৃষ্ণনগর পৌরসভা কর্মীরা আমাদের মা কালী প্রতিমাটি আস্তে আস্তে নদীর ধারে নিয়ে চলে গিয়েছিল। এবারে আমাদের প্রচুর প্রশাসন ব্যবস্থা ছিল ।তাই ঠাকুর বিসর্জনের সময় বাইরের বেশি মানুষজনকে নদীর পাড়ে যেতে দিচ্ছিল না।

IMG_20241105_183127.jpg

তাই আমাদের প্রতিমা টি নিয়ে যাওয়ার পর আমি আর নদীর পাড়ে যেতে পারিনি। বেশ খানিকক্ষণ নিচে একা একা অপেক্ষা করছিলাম। আমাদের প্রতিমা টি বিসর্জন হয়েছে তখন প্রায় রাত ১১ টা বেজে গিয়েছিল। প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে আসার পর আমার বর আর ঠাকুর দেখতে যেতে চাইছিল না। সারাদিন ঠাকুরের কাছে অনেক পরিশ্রম করেছে। আবার হেঁটে হেঁটে অনেকটা পথ যেতে হয়েছে তাই আর রাতে ঠাকুর দেখতে যাওয়া হয়নি। কিন্তু আমি আমার বড় মামা আর মামীর সাথে রাত্রি বেলায় ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলাম। আমার রাত্রে কাঁধে করে ঠাকুর নিয়ে যাওয়া দেখতে খুব ভালো লাগে। রাতের বেলায় আবহাওয়াটা বেশ সুন্দর ছিল। মানুষের ভিড়ও খুব কম ছিল।

IMG-20241105-WA0017.jpg

প্রায় রাত তিনটে পর্যন্ত ঠাকুর বিসর্জন দেখে বাড়ি ফিরছিলাম ।তখনও কিন্তু কৃষ্ণনগরের সমস্ত ঠাকুর বিসর্জন হয়নি। সমস্ত ঠাকুর বিসর্জন হতে হতে প্রায় সকাল সাড়ে আটটা বেজে গিয়েছিল।তবে দ্বিতীয় দিন ও বেশ কয়েকটা ঠাকুর ছিল ।দ্বিতীয় দিন আর ঠাকুর বিসর্জন দেখতে বের হয়নি। কারণ পরপর তিনদিন রাত জেগে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। ঠাকুর বিসর্জনের ভিডিও লিংক দেওয়া আছে ।আপনারা চাইলে লিংক এর মাধ্যমে বিসর্জন দেখতে পারেন। অন্যান্য বছরের মত এ বছরে আমি প্রচুর ঠাকুর দেখেছি। এবছরের আনন্দটা যেন একটু অন্যরকমই ছিল।

IMG-20241105-WA0020.jpg

আজ এখানেই শেষ করছি। আবার পরবর্তী কোন গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

খুব ভালো কথা। একা একা অনেক আনন্দ করছো। বিসর্জন দেখতে গিয়েছো । খুব মজা করেছো। কিন্তু এই ননদিনী বাদ দিয়ে। একবারের জন্যও আমার কথা মনে পড়ছে না। ঠিক আছে।
একা একাই ঘোরাঘুরি করো।

বিসর্জনে গিয়ে অনেক কাণ্ড ঘটে গেছে সবই তোমার সাথে পরে শেয়ার করে নেব। একজন দেখতে বেরিয়ে আমি তোমাকেই খুঁজছিলাম।

অনেকটা হেঁটে যাওয়াটা একটু কষ্টকর তবে ঠাকুর দর্শেন মূহুর্তে যেন সেট কষ্ট বিলীন হয়ে যায়। আমাদের পাড়াতে একটাই পূজো হয় প্রতিবছর এবং আপনাদের মতো পূজোর পরেই গঙ্গাতে দেওয়া হয় না। যদিও বিসর্জন হয়েছিল কিন্তু মায়ের প্রতিমা মন্দিরেই রাখা হয়েছিল।

মানুষের ঠাকুর পরিদর্শনের যে টান টান উত্তেজনা সেখানে ভীড় হবে এটাই স্বাভাবিক। এতো আয়োজন করে মাকে আবাহন এবং পূজোর পরে বিসর্জনের কথা ভাবলেই ভীষণ কষ্ট হয়।

আমার মনে হয় প্রাশাসনিক ব্যবস্থা থাকাটা গুরুত্বপূর্ণই ছিল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মায়ের বিসর্জন সম্পর্কে এই লেখাটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।