নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই খুব ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আশা করছি সকলের খুব ভালো লাগবে।
শীতকালে চারিদিকে বিভিন্ন রকমের ফুল ফুটতে দেখা যায়। অন্যান্য ঋতুর তুলনায় শীতকালেই বেশি ফুল ফোটে। বিভিন্ন রকমের রংবেরঙের ফুল দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। রংবেরঙের ফুলের মধ্যে আমি আমার বাগানে একরকম ফুলে গল্প আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। ফুল সকলেরই ভীষণ প্রিয়। মাঝে মাঝেই অনেককেই দেখি বিভিন্ন রকমের ফুলের ছবি শেয়ার করতে। আমাদের বাগানে বিভিন্ন রকমের ফুল রয়েছে। ফুল আমি খুব ভালোবাসি। সেটা যে কোন ধরনেরই ফুল। তবে খুব প্রিয় ফুল হলো গোলাপ, জুঁই, বেলি। আরো অনেক ধরনের ফুল রয়েছে কিন্তু সেগুলোর নাম আমার জানা নেই। ছোট থেকেই ইচ্ছে করতো বিভিন্ন রঙের ফুল গাছ টবে লাগানোর জন্য। কিন্তু মামার বাড়িতে তেমন জায়গা ছিল না। সব সময় তিনতলায় ছাদে উঠে গাছে জল দেওয়া সেটাও সম্ভব হতো না। তাই সেভাবে কোনদিন গাছ লাগানো হয়নি।
বিয়ের পর যখন কৃষ্ণনগর শহরে বাড়ি কিনলাম বাড়িতে অনেকটাই জায়গা ফাঁকা ছিল। তখন সেই ফুল গাছ লাগানো কিংবা ফল গাছ লাগানো সমস্ত ইচ্ছেই পূরণ করেছি। তবে গ্রামের বাড়িতে আরো অনেক জায়গা রয়েছে। সেখানে যেহেতু থাকা হয় না। তাই শহরের বাড়িতেই যতো টুকুনি পারি গাছ লাগানোর চেষ্টা করি। বাড়ি কেনার সাথে সাথেই প্রচুর ফুল গাছ কিনেছিলাম ।সমস্ত ফুলগাছ লাগিয়ে ছিলাম। এমনকি সমস্ত ফুল গাছ লেগে গিয়েছিল। আমাদের বাড়ির বাগানের মাটি ভীষণ ভালো। কোন রকম ভাবে গাছটা লাগিয়ে দিলেই প্রত্যেকটা গাছ আপনা আপনি লেগে যায়। তেমন কোন যত্ম করতে হয় না।আজ পর্যন্ত কোন গাছ নষ্ট হয়নি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে কুন্দ ফুলের গল্প শেয়ার করছি। কমবেশি হয়তো সকলেই কুন্দ ফুল চেনেন। কুন্দ ফুল সাদা রঙের হয়। আবার হালকা গোলাপি রঙেরও হয়।
অনেকদিন ধরে এই গাছটা লাগিয়েছিলাম। বাগানে অনেক গাছের আড়ালে এই গাছটা একদম বেড়েই উঠছিল না। বেশ কিছুদিন আগে বাড়ির বাগানটা পরিষ্কার করা হয়েছিল এরপর থেকেই দেখলাম তর তড়িয়ে গাছটা মাথাচাড়া দিয়ে লম্বা হয়ে উঠলো। দেখে মনে হচ্ছিল যেন বাঁচার আশা খুঁজে পেল। তার কিছুদিন পরেই দেখলাম গাছটাতে এক গাছ ফুলের কুঁড়ি এসে ঢলে পড়েছে। কিন্তু গাছের পাশেই আমরা একটা তুলসী মন্দির স্থাপিত করেছি ।তখন মনে হয়েছিল গাছটা যেন কাটাই পড়ে যাবে। আমি প্রথম থেকেই মিস্ত্রিদের বলে রেখেছিলাম। এই গাছটা যেন কোন ক্ষতি না হয়। তাও গাছটার প্রতি ভালোই অত্যাচার হয়েছে তবুও কিন্তু গাছের কোন ক্ষতি হয়নি।
আমি বেশ কিছুদিন বাড়ি ছিলাম না মামার বাড়িতে ছিলাম। বাড়িতে ফেরার পর দেখলাম গাছে ফুলের কুঁড়ি গুলো বড়ো হয়েছে। ফুল গাছটা যেন নুইয়ে পড়ছে। ফুলের ভারে গাছের ডালগুলো মাটিতে ঠেকে যাচ্ছে। আজকে সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে দেখি সারা গাছটাই সাদা রংয়ের কুন্দ ফুল ফুটে আলোয় আলোকিত হয়ে রয়েছে। আমার দেখে তো মন ভরে গেল। গাছ ভর্তি ফুল দেখে আমার অশান্ত মন শান্ত হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে শাশুড়ি মাকে জিজ্ঞেস করলাম ফুল গুলো তোলার জন্য। আজকে বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবারে পুজো করতে অনেক ফুল লাগে। তাই আমি আনন্দ সহকারে সযত্নে সমস্ত ফুল একটা একটা করে গাছ থেকে তুললাম। ফুলগুলো তোলার সাথে সাথে চারিদিকে সুগন্ধ বেরোচ্ছিল। যখন সন্ধ্যা বেলায় ফুলগুলো ফোটে, তখনই চারিদিকে গন্ধে মম করে।
ফুল গুলো আকারে ছোট হলেও তার গন্ধে সারা বাড়ি ভরে যায়। এই ফুলগুলোর ছয়টি পাপড়ি হয়। অনেক কুন্দ ফুলের পাপড়ি গুলো সরু হয়। কিন্তু আমাদের বাড়ির ফুলের পাঁপড়ি গুলো একটু মোটা মোটা। আজকে প্রচুর ফুল ফুটেছে। কিন্তু গত কাল থেকে আকাশ মেঘলা করছে। শীতের শেষে বৃষ্টিতে যেমন চাষের ক্ষতি হয়। ঠিক তেমনি ফুল গাছের ক্ষতি হয়। আমার সাথে এইরকম অনেক বার ঘটেছে। শীতের বৃষ্টিতে আমার শখের ফুলগাছ নষ্ট হয়ে যায়।আবারো আগামীকাল ফুটবে। আমার বাগানের অন্যান্য ফুলগুলো আবার অন্য কোন পোস্টে শেয়ার করে নেব। আমাদের বাগানে কুন্দ ফুলগুলো আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
আজ এইখানেই শেষ করছি। আবার নতুন কোন গল্প নিয়ে হাজির হব আগামীকাল।