অসহায় বাঙালি

in hive-120823 •  4 months ago 

আজকে সারাদেশের মানুষ অঝোরে কাঁদতেছে ঘরের কোণে বসে। শত শত মা তার সন্তানকে হারিয়েছে। শত শত মায়ের বুক খালি করে আজ তারা কবরে শুয়ে আছে। চারিদিকে শুধু গুলির শব্দ, একদিকে নেতাকর্মী আরেক দিকে ছাত্র,অসহায় মানুষ। পুলিশের গাড়ি আসলেই মানুষের দৌড়াদৌড়ি, কে কোথায় গিয়ে লুকায়।

1000038303.jpgফেসবুক থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া একটি ছবি।

সারা দেশের মানুষ কাঁদতেছে কেন?

আমাদের দেশে স্টুডেন্টরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য দাঁড়ালে ১০০ % এর ৪৬ % চাকরি নিশ্চয়তা দিয়েছে আর বাকি ৫৪% দিয়েছে যাদের সরকারিভাবে কোটা রয়েছে। আমাদের দেশে আন্দোলন চলতেছে এই কোটা নিয়ে। আন্দোলন এইজন্য হচ্ছে যে আমরা এই যে -২৬ ২৮ বছর পড়াশোনা করে যদি আমাদের চাকরি নিয়ে নিশ্চয়তা ৪৬ % থাকে তাহলে এতদিন পড়াশুনা করে আমাদের লাভ কি হল।

1000038306.jpgকোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের ছবি, ফেসবুক থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে।

আর যাদের সরকারিভাবে কোটা রয়েছে তাদের নিশ্চয়তা ৫৪%। এই কোটা হল আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল ১৯৭১ সালে যারা এই দেশ স্বাধীন করেছিল তাদের ছেলেমেয়ে অথবা নাতি-নাতনিরা এই কোটার অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে কোটা বাতিল করার জন্য এই আন্দোলন হচ্ছে । আমি যতটুকু জানতে পারলাম বর্তমানে আবার নতুন করে আইনি নোটিশ এসেছে। আদালতে শুনানি রায় ঘোষণা হয়েছে। ৯৩% শিক্ষার্থীদের চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। আর ৫% দেওয়া হয়েছে যাদের কোটা রয়েছে। আর বাকি ২% অন্যান্য।

1000038305.jpgকোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের একটি ছবি, ফেসবুক থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে।

এই আন্দোলনের পেছনে আরও ইতিহাস রয়েছে।এই আন্দোলন করতে গিয়ে শত শত ভাই বোন শহীদ হয়েছেন। আমি রংপুর বিভাগের একজন নাগরিক। আমাদের রংপুর বিভাগের অনেক ভাই বোন শহীদ হয়েছেন। তাদের মধ্যে দৃষ্টান্তভাবে শহীদ হয়েছেন, শহীদ আবু সাঈদ। রংপুরে একটি পার্ক রয়েছে সেই পার্কের মোর এর নাম বদলিয়ে নতুন রূপে নাম দেওয়া হয়েছে শহীদ আবু সাঈদ চত্বর।

ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার আগে কিছু ফুটেজ ভাইরাল হয়েছিল। সেই ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে আবু সাঈদকে কিভাবে পুলিশ গুলি করে। পুলিশের সামনে আবু সাঈদ বুক পেতে দেয়। আর পুলিশ তাৎক্ষণিক তার গুলিতে আবু সাঈদকে আহত করে দেয়। আর তার কিছুক্ষণ পরেই আবু সাঈদ পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় দুইদিন যাবত ফেসবুক ইউটিউবে শুধু এই নিউজ ছড়াছড়ি। তারপরে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

1000038307.jpgশহিদ আবু সাঈদের ছবি, শহীদ হওয়ার কিছুক্ষণ আগের একটি ছবি, ফেসবুক থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে।

ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার আগে আমরা আরও একটি ভাইরাল ভিডিও দেখতে পেয়েছিলাম। আমরা দেখতে পেয়েছি একটি হলের ভিতরে স্টুডেন্টদেরকে ধর্ষণ করতেছে কারা যেন। ভিডিওটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। শুধু চিৎকারের আওয়াজ আর বলতেছে আমাকে ছেড়ে দেন, আমার জীবন এভাবে নষ্ট করেন না।আরো অনেক কিছু বলেছিল।

এগুলো দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। আমরা এমন এক দেশে বসবাস করি আমাদের জীবনের কোন মূল্য নেই। আমরা এমন এক দেশে বসবাস করি আমাদের মা-বোনদের নারীত্বের কোন মর্যাদা নেই। জানিনা এসব কিছু কবে ঠিক হবে।

1000038304.jpgনারীদেরকে নির্যাতন করার একটি ছবি, ফেসবুক থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে।

আরো অনেক শত শত ভাই-বোন শহীদ হয়েছেন। আসলে মূলত গত ৭-৮ দিন যাবত ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। যার জন্য মূলত আমরা এই নিউজগুলো দেখতে পারিনি । শুধু যে শহীদ হয়েছেন তা নয় শত শত বোনেরা নির্যাতিত হয়েছেন। শত শত বোনেরা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এইজন্য মানুষ ঘরের কনে বসে কাদতেছে।

আসলে আমার এই কথাগুলো যারা এই কাজগুলোর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তাদের ভালো লাগবে না।আর আমার এই লেখাগুলো পোস্ট করা ঠিক হলো কিনা আমি জানিনা। যদি এই পোস্টটি করা ঠিক না হয় তাহলে আমাকে অবশ্যই জানিয়ে দেবেন আমি পোস্টটি ডিলিট করে দেব। আর আমি যেই কথাগুলো লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করেছি এগুলো একদম বাস্তব কথা বা ঘটনা। এজন্যই আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।

আরো অনেক ইতিহাস রয়েছে আজকে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

এই কোটা আন্দোলনের কারণে কত মানুষ বিনা কারণে প্রাণ হারিয়েছে। এই আন্দোলনে ঘটনা গুলি শুনে আমার ইতিহাসের পাতায় সব আন্দোলনের কথা মনে পড়ে গেল। কোটা আন্দোলনে ইতিহাসের পাতায় স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে। এখনকার দিনে বেশিরভাগই মানুষ পড়াশোনা করে চাকরি পায় না। সেটা বাংলাদেশ বলে নয়। আমাদের দেশেও এমনটাই হচ্ছে। আরো ইতিহাস জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।