নিজেকে ফিট রাখতে চাইলে আমাদেরকে প্রতিদিন হাটতে হবে। বর্তমানে বহুল প্রচলিত কথা হচ্চে , নিজেকে ফিট রাখতে চাইলে দৈনিক ১০ হাজার কদম হাটুন। শুনতে খুব সহজ মনে হলেও ১০ হাজার পা ফেলা কিন্তু খুব সহজ কথা নয়। অনেকেই আমরা হাটি তবে তা ৩-৪ হাজার কদম। বিশেষ করে যারা অফিস বা ডেস্কে বসে কাজ করি তাদের জন্যে এর থেকে বেশি হাটা হয়ে ঊঠে না।
তবে আমরা যদি পরিকল্পনা করি যে আমি ১০ হাজার স্টেপ হাটবো তাহলে এই লক্ষ্য পূরণ সম্ভব। আজকের এই ব্লগটি আপনাকে সাহায্য করবে কিভাবে ১০ হাজার স্টেপের মাইলফলক অর্জন করবেন সে ব্যাপারে। আশা করি এটি সবার উপকারে আসবে। চলুন হাটার আগে জেনে আসি কেন আমাদের প্রতিদিন হাটতে হবে। হাটা এমন এক ব্যায়াম যা প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে, পাশা পাশি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ, ডায়বেটিস থেকে রক্ষা করা,কোলেস্ট্রেরল নিয়ন্ত্রণ সহ নানাবিধ সুফল ভোগ করতে পারবেন। গবেষণা বলে প্রতি সপ্তাহে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষকে গড়ে দের ঘন্টা হাটতে হয়। চলুন আজকে সেই কিভাবে সেই হাটার অভ্যাস গড়বেন তা নিয়ে কথা বলি।
প্রতিদিন সময় নিয়ে হাটুনঃ প্রতিদিন হাটার জন্যে সবার আগে যেটা দরকার তা হচ্ছে হাটার জন্যে আলাদা একটা সময় বের করা। অনেকেই আছেন যারা এই সময় বের না করে এক এক দিন এক এক সময় হাটতে চেষ্টা করে, এতে করে তারা একটা সময় হাটার অভ্যাস ছেড়ে দেয়। যদি আপনি হাটার জন্যে আলাদা একটা সময় বের করতে না পারেন, তাহলে যত চেষ্টা করুন আপনার হাটার লক্ষ্য পুরণ হবে না, হয়তো দুই একদিন পূরণ হবে, কিন্তু সব সময় হবে না। সকাল বা সন্ধ্যায় ১০-১৫ মিনিট সময় আলাদা করে বের করুন শুধু হাটার জন্যে, এবং এটা নিয়ম করে ফেলুন, যে এই সময় যত যাই হোক আমাকে হাটতে হবে। দেখবেন আপনার প্রতিদিনের হাটার লক্ষ্যমাত্রার একটা বড় অংশ পূরন হয়ে যাবে।
গন্তব্যে পোছানোর আগেই নেমে পড়ুনঃ ধরুন আপনি কোথাও যাচ্ছেন, হোক সেটা স্কুল, কলেজ বা অফিস। গন্তব্যে পছানোর আগের স্টপেজে নেমে পড়ুন। এবার সেখান থেকে হাটা শুরু করুন। আর রাস্তায় যদি জ্যাম থাকে তাহলে ম্যাপ দেখে আগেই হাটার পরিকল্পনা করে সেই অনুযায়ী হাটা শুরু করুন। এতে করে একদিকে জ্যামে বসে থাকার বিরক্তির হাত থেকে যেমন রক্ষা পাবেন অন্যদিকে আপনার দৈনিক হাটার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে।
লিফটের বদল সিড়ি ব্যাবহার করুনঃ আমাদের একটা কমন অভ্যাস অফিস, বাসা শপিং মল এ গিয়েই লিফট ব্যবহার করি। তবে যদি এই অভ্যাস ত্যাগ করে চেষ্টা করে সিড়ি বেয়ে ঊঠা নামা করি বিশেষ করে উপর থেকে নিচে নামতে সিড়ির ব্যবহার বেশি করি, তাহলে দেখা যাবে নিজের অজান্তেই হাটার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাদের হাটু বা পায়ে ব্যাথা আছে, তারা ভুলেও এটি করবেন না, এতে করে কিন্তু হীতে বিপরীত হয়ে যাবে।
হাটার জন্যে সঙ্গী খুজুনঃ প্রতিদিন নিয়ম করে হাটার জন্যে পারলে একজন সঙ্গী খুজুন। এতে করে দুজনে কথা বলতে বলতে হাটলে দেখবেন নিজের অজান্তেই অনেক দূর হেটে ফেলেছেন।
স্মার্ট ঘড়ি সাথে রাখুনঃ আপনি প্রতিদিন কত টুকু হাটছেন তার হিসাব রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে ভালো ব্রান্ডের মোটামুটি সঠিক স্টেপ কাউন্ট হয় এমন একতি ঘড়ি কিনে নিন। প্রতিদিনের হাটার রেকর্ড রাখুন, । প্রথমদন যদি ৫০০০ স্টেপ হাটেন, পরের দিন একটু বাড়ান, এভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে স্টেপ বাড়াতে থাকেন, দেখবেন একটা সময় অনায়াসে ১০ হাজার স্টেপ পূরন করতে পারবেন।
আজকের ব্লগটি সবাইকে হাটার ব্যাপারে সচেতনতার ব্যাপারে লেখা, এর মানে এই নয় যে আপনাকে প্রতিদিন ১০ হাজার স্টেপ ই হাটতে হবে। আপ্নি আপনার সুবিধেমতো লক্ষ্য নির্ধারণ করুণ, প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনার বয়স, শরীরের ওজনের ওপরে কতটুকু হাটবেন না নির্ধারণ করে। সবাই বেশি বেশি হাটুন, সুস্থ থাকুন। অন্যকে হাটার ব্যাপারে উৎসাহ দিন।