কুড়িয়ে পাওয়া ব্যাগ, প্রকৃত মালিকের সন্ধান ও আমার দুশ্চিন্তা - পর্ব-১

in hive-120823 •  25 days ago 

আপনি রাস্তা দিয়ে হাটছেন, হটাৎ দেখতে পেলেন একটা ব্যাগ সামনে পড়ে আছে। কি করবেন? ঠিক এমন এক ঘটনাই আমার সাথে ঘটে গেল কিছুদিন আগে। আমি সেই ঘটনাই শেয়ার করবো, সাথে থাকবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এক পর্বে পুরোটা শেষ করলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে, তাই আমি দুই পর্বে ভাগ করে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো। আজ তার প্রথম পর্ব।

pexels-recepcelikphoto-15432831.jpg

Pexels

অন্য দিনের মতই অফিসের উদ্দেশ্যে উত্তরবাড্ডা থেকে হেটে যাচ্ছিলাম। মেইন রাস্তা পার হয়ে গলি দিয়ে হাতিরঝিল লেকের দিকে যাচ্ছি। হঠাৎ দেখলাম একটা খালি রিক্সা আমাকে ওভারটেক করে যাচ্ছে। পাশ দিয়ে যেতেই রিক্সার পা দানীতে চোখ পড়লো। দেখলাম একটা ছোট ব্যাগ সেখানে পড়ে আছে। কোন বিলম্ব না করে রিক্সা দাড় করালাম

রিক্সা ওয়ালাকে জিগেস করলাম একটু আগে যে যাত্রীকে নামিয়ে এসেছে সে মহিলা কি না। সে জানালো সে একজন ছেলেকে এই মাত্র নামিয়েছে সবজি গলিতে। পরে তাকে দেখালাম যে এই ব্যাগ আপনার রিক্সায় কিভাবে এল। রিক্সাওয়ালাও অবাক। সেও এ ব্যাপারে কিছু জানে না। এমন অবস্থায় হুট করে ব্যাগ খুলতে যাওয়া উচিৎ নয়। কি আর করার আমি আশে পাশের দুজন মানুষকে ডাক দিলাম। এর পর সিদ্ধান্ত হলো ব্যাগের ভেতর কি আছে দেখা যাক। আমি ব্যাগ নিয়ে সবার সাম্নেই খুললাম। ব্যাগের ভেতরে ২ টা ক্রেডিট কার্ড, একটা জাতীয় পরিচয় পত্র, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, আর পাসপোর্ট সাইজের কিছু ছবি পাওয়া গেল।

20241128_094830.jpg

ব্যাগের ভেতরে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কার্ড, ছবি

প্রথমে ধারণা করলাম কোন বাচ্চা হয়তো জানালা দিয়ে ব্যাগ ফেলে দিয়েছে সেটা এসে রিক্সার উপর পড়েছে। কিন্তু মুশকিল হলো ব্যাগে কোন যোগাযোগের নাম্বার নেই, এমনকি আইডি কার্ড এও জরুরি প্রয়োজনে কল করার কোন নাম্বার নেই। কি করা যাবে, একবার ভাব্লাম থানায় যাই, কিন্তু এমন ক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এদিকে রিক্সাওয়ালা, ও অন্য দুজন আমাকে বল্লো দেখেন ব্যাগটা পৌছাতে পারেন কি না, বলে তারা তদের পথ এ হাটা দিল। এই শহরে কেউ ই বাড়তি ঝামেলা নিতে চায় না। ব্যাগের ভেতর নগদ টাকা বা গহনা থাকলে কিন্তু রিক্সাওয়ালা বা ওই দুই পথচারী এভাবে চলে যেত না। শুরু হলো আমার দু:শ্চিন্তা।

ব্যাগ নিয়ে অফিসে গেলাম, ব্যাগে পাওয়া কলেজ আইডি বের করে নাম দিয়ে ফেসবুক এ সার্চ দিলাম কিন্তু প্রকৃত মালিককে খুজে পেলাম না। আমাদের বেশিরভাগ মানুষের নিজের নামের সাথে ফেসবুক বা অন্যান্য স্যোসাল মিডিয়ার আইডির মিল থাকে না, ধরুন কারো নাম জরিনা, ফেসবুকে নাম দেই আঞ্জেল জলি। আমার মতে নিজের নাম সব যায়গায় একই রকম রাখা উচিৎ। যাই হোক সঠিক নামের মানুষ কে খুজে না পাওয়ায় স্মরণাপন্ন হলাম গুগল মামার। সেখান থেকে তেমন কিছুই পেলাম না, শুধুমাত্র তার কলেজের রেজালটেএ কপিতে তার নাম পেলাম।

স্ক্রিনশট নেয়া

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন কেন এত খোজাখুজি করছি, এর একটাই কারণ মনের মধ্যে তখন একটাই প্রশ্ন, ব্যাগ যদি কোন বাচ্চা বাসা থেকে ফেলে দেয় বা পড়ে যায়, তাহলে তো ব্যাগে অন্তত কিছু টাকা হলেও থাকবে, কোন টাকা নেই কেন? পকেটমার বা অজ্ঞান পার্টির কবলে পরে নি তো? আবার ভয়ের মাত্রা আরো একটি বেশি হয়ে মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে ব্যাগের মালিক জীবিত আছে তো?

ঢাকায় তো খুন, এক্সিডেন্ট হরহামেশাই ঘটে। এই ব্যাগ নিয়ে না জানি আবার কোন ঝামেলায় পরি। খুন বা অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে ব্যাগ হারালে তো এই ব্যাগের কারণে আমাকেও পুলিশি ঝামেলা ফেইস করতে হবে। এমন অজানা আশংকা,ভয় নিয়েই ব্যাগের প্রকৃত মালিককে খুজে পাওয়ার প্রচেষ্টা চলতে থাকলো।

প্রথমেই জানিয়েছিলাম এক পর্বে পুরোটা শেয়ার করলে অনেকের কাছে লেখাটা বড় মনে হবে, তাই আগামীকাল ২য় পর্বে বাকি ঘটনা শেয়ার করবো। আগামী পর্ব পাঠের আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...