অন্যদিনের মত আজকেও সকাল সকাল ঘুম ভেংগে গেল, যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন তবে আজকে সকাল বেলা বাসার নীচের মাঠে ক্রিকেট ম্যাচ হবার কথা ছিল। অন্যদিনে তেমন প্লেয়ার পাওয়া যায় না, শুক্রবার আর শনিবার মাঠ ফাকা পাওয়া যায়না। আজকেও খেলা হলো না, কেননা মাঠে গিয়ে দেখি অলরেডি ফুটবল খেলা শুরু করেছে। কি আর করার আবারো বাসায় চলে এলাম। মেয়ে আর গিন্নীও ততোক্ষণে ঘুম থেকে ঊঠে পড়েছে। বাসায় এসে সকালের নাসতা করে নিলাম। আজকে বাসায় পরাটা আর ভুড়িভাজি হয়েছিল, দারুণ খেতে।
নাস্তা শেষে গিন্নি এক কাপ মালাই চা বানিয়ে দিল। অফিসে পাউডার দুধের চা খাওয়া হলেও বাড়ির এই গাভীর দুধের মালাই চা খাওয়া হয় মাসে এক দুই বার।
সকালের নাস্তা শেষ করে মেয়েকে নিয়ে চলে গেলাম ছাদে। বেশ কিছু গাছ লাগিয়েছিলাম, এর মধ্যে লাউ গাছ খুব দ্রুত বড় হয়ে ঝোপালো হয়ে গিয়েছে। মেয়েকে নিয়ে গাছ গুলোতে পানি দিলাম, নতুন করে কয়েকটা পুই শাকের বীচ লাগিয়ে দিলাম মেয়ের হাত দিয়ে। লাউ গাছ গুলো মেয়ের হাতেই লাগানো। নিজের হাতে লাগানো গাছ তার থেকেও কিভাবে এত তারাতারি লম্বা হয়ে গেল সেই প্রশ্নের উত্তর খুজছে মেহেক।
মেয়েকে নিয়ে সকাল সকাল ছাদে ঊঠার অবশ্য আরেকটা কারণ আছে, তা হল সকালের মিষ্টি রোদে তাকে যতক্ষন পারা যায় ছাদে রাখা। ভিটামিন ডি এর অভাব এই শহরের প্রতিটি মানুষের কম বেশি দেখা যাচ্ছে।
বাসায় এসে গিন্নিকে রান্না ও ঘর গুছানোর কাজে সাহায্য করলাম, এরই মাঝে মেয়ে ক্লে নিয়ে বসলো, ফুল বানাবে। তাকে ফুল বানাতে সাহায্য করলাম। সে খুব দ্রুত শিখে ফেললো।
মেয়েকে নিয়ে একটু বাহিরে বের হয়েছিলাম, দেখলাম বড় ভেড়া আর ছাগলের পাল ঘুড়ে বেড়াচ্ছে, ঢাকা শহরে এমন দৃশ্য খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না, মেয়ে একসাথে এত ছাগল আর ভেড়া দেখে খুব খুশি।
দুপুরে বাসায় এসে গোসল সেড়ে মসজিদে চলে গেলাম। জুমার দিনে যতটুকু পারি একটু আগেই মসজিদে যাবার চেষ্টা করি। মসজিদের খতিব আজকে খুতবায় নারীদের মর্যাদা বিষয়ের উপর খুব সুন্দর আলোচনা করলেন।
সারমর্ম ছিল নারীরা মেহমান হিসেবে পুরুষদের জন্যে এসেছে, তাই তাদের সাথে সেভাবেই আচরণ করা উচিত। প্রত্যেক পিতা তার মেয়েকে রাজকন্যার মত করে বড় করে বিয়ে দেয়, তাই সেই রাজকণ্যা যেন স্বামীর ঘরে এসেও রানীর মতই থাকতে পারে, তা প্রত্যেক পুরুষের নিশ্চিত করা উচিৎ।
সন্ধ্যেবেলা টুকটাক বাজার কেনার জন্যে বাজারে গিয়ে দেখলাম, ভ্যানগাড়িতে কদবেল বিক্রি হচ্চে। এ বছর খাওয়া হয় নি, তাই বড় দেখে দুইটা কদবেল কিনে বাসায় ফিরলাম। গিন্নি খুব সুন্দর করে সেগুলোর চাটনি বানালো। কদবেল মাখা দেখলেই অনেকের জিহ্বায় পানি চলে আসে। এটা দেখে কেউ নজর দিলেও লাভ নাই, কেননা আপ্নারা যখন পোস্ট পড়ছেন ততোক্ষণে তা হজম হয়ে গিয়েছে।
রাতের বেলা মেয়েকে পড়াতে বসালাম। যত বড় হচ্ছে ততোই চিন্তা বাড়ছে, আর এক বছর পরেই শুরু হবে ভরতি যুদ্ধ। কোথায় ভর্তি করাব তা নিয়ে এখন থেকেই চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে।
আজকের ছুটির দিনটি পুরোটাই আমার ছোট পরিবার নিয়েই কেটে গেল। দোয়া করবেন যেন এভাবেই সুন্দর দিন গুলো পার করতে পারি। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
Device name | Samsung M31 |
---|---|
Photographer | @mukitsalafi |
Location | Dhaka, Bangladesh |
</div