Betterlife with steem ||The diary game|| 23 July, 2024

in hive-120823 •  3 months ago 
সবাইকে শুভেচ্ছা জনিয়ে শুরু করছি

20240723_175226.jpg

কভার ফটো

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো আছেন। দীর্ঘ ৬ টি দিন সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে কাটিয়েছে তা হয়তো আপ্নারা কিছুটা হলেও আচ করতে পেরেছেন। একবিংশ শতাব্দীতে এসে এভাবে ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া এতগুলো দিন কাটানোর কথা হয়তো আপ্নারা কল্পনাও করতে পারবেন না, ঠিক সেই কাজটি আমি ও আমার দেশের মানুষেরা করেছে। করেছে বলবোনা, করতে বাধ্য হয়েছে।

আমার ক্ষেত্রে এই দিনগুলি ছিল আরো বেশি ভয়াবহ। অন্য সবাই পরিবারকে পাশে পেয়েছে, কিন্তু আমার পরিবার গ্রামে থাকায় এই দিনগুলি আমার কেটেছে একদম একাকী, এক প্রকার গৃহবন্দী হয়ে। আজকে যখন লিখতে বসেছি তখন মনে হচ্ছে যুদ্ধের পর যেন আবারো স্বাধীনতার দেখা পেলাম। এ যেন নতুন একটি দিন। যদিও এখনো পুরোপুরি ইন্টারনেট সংযোগ চালু হয় নি, তার পরেও সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট মিলছে কোথাও কোথাও। প্রতিটাদিন কিভাবে কাটিয়েছি তা শেয়ার করবো বলে অধীর আগ্রহে বসে থাকি, কিন্তু ইন্টারনেট বাবার দেখা না পেয়ে সেভাবেই মনের অব্যক্ত কথা গুলো ড্রাফট আকারে জমা থাকে,পোস্ট করতে না পারার দীর্ঘশ্বাস আরো দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। অবশেষে আজকে লিখতে পারছি। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো গতকালের কাটানো দিনটি।

ee.jpg

সকালে ঘুম থেকে ঊঠেই প্রতিদিনের মত বাসার সাম্নের মাঠে গিয়ে ৩০ মিনিট হাটাহাটি করলাম। গত ৬ দিনে ২ কেজি ওজন বেড়েছে, যদি এই হাটা হাটি না করতাম তাহলে সেটা হয়তো আরো বেরে যেত। সকাল বেলা হাটার সময় প্রতিদিন খেয়াল করতাম ৪০-৫০ বছরের মানুষেরা বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। এই বয়সী মানুষদের বেশি দেখা যায় সকাল বেলা বেয়াম করতে।

হাটাহাটি শেষে বাসায় ফেরার পথে দেখলাম আম বিক্রি করছে। আমরুপালি, ছোট সাইজ দাম নিল ৮০ টাকা কেজি। আম গুলো ছোট হলেও খেতে কিন্তু দারুণ ছিল। বাসায় এসে স্নান করে সকালের নাস্তা করলাম। ছোলা মুড়ি মাখা। নাস্তা শেষে বই নিয়ে ডুব দিলাম। এই কটা দিন বেশির ভাগ সময়ত কেটেছে বই এর ভেতর ঢুকে। বহুল আলোচিত সমালোচিত লেখক আহমদ ছফা্র বেশ কিছু বই কেনা হলেও কখনো পড়া হয় নি, অবশেষে পরতে পারলাম।

20240723_17453.jpg

আলোচিত লেখক আহমদ ছফার বই-The Om

একটানা বই পড়ে শেষ করে দুপুরের জন্য রান্না করলাম। একা মানুষ একবার রান্না করে তিনদিন ধরে খাই,এই কারণে মাংস খাওয়া হচ্ছে বেশি। মাংস চাইলে আপনি গরম করে করে মেলাদিন পব্দি খেতে পারবেন, কিন্তু মাছ একবার গরম করলেই আরো ভালো লাগে না।

দুপুরে আজান দিলে চলে গেলাম মসজিদে, জোহরের নামাজ আদায় করলাম। মানুষ বিপদে পড়লে সৃষ্টিকর্তার কাছে যায়, আমিও এই কটা দিন মসজিদকে আপন করে নিয়েছি।

20240723_1847291.jpg

মসজিদে এখন প্রথম সাড়ির নিয়মিত মুখ আমি

নামাজ শেষে বাসায় ফিরে খাবার খেয়ে নিলাম। পড়ার টেবিল টাতে বেশ কিছু গাছ রেখেছি। দেখতে সুন্দর লাগছে এখন। যদিও গিন্নি এলে এই টেবিল আর এখানে রাখতে দিবে না। রাখতে দিলেও এভাবে থাকবে না। দুপুরে খেয়ে হালকা একতা ঘুম দিলাম।

20240723_1433141.jpg

আমার পড়ার টেবিল

ঘুম থেকে ঊঠে নতুন আরো একটি বই পড়া শুরু করে দিলাম।এই বই নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। এ পি জে আবুল কালাম আজাদ স্যারের আত্মজীবনীমূলক বিখ্যাত বই WINGS OF FIRE. যতই পড়ছি ততোই অবাক হচ্ছি, একটা মানুষ শূন্য থেকে কিভাবে নিজেকে সেরাদের কাতারে নিয়ে যাচ্ছেন, এবং এই পথ পরিক্রমায় কারা কিভাবে পাশে ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভূল করেন নি। আশা করছি এই বই আগামী কালকের মধ্যেই শেষ করতে পারবো।

20240723_1745521.jpg

আবুল কালাম আজাদ স্যারের বিখ্যাত বই WINGS OF FIRE

মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে ইন্টারনেট না থাকায় অনেক ভালো হয়েছে, হয়তো এই বই গুলো পড়া হতো না, এখন বুঝতে পারছি বইকে কেন মানুষের শ্রেষ্ট সঙ্গি বলা হয়।

আমার গৃহবন্দী দিন গুলোর প্রথম দিকে খুব খারাপ লাগলেও এখন নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি, আসলে মানুষ সব কিছুর সাথেই মানিয়ে নিতে পারে। এই তো এভাবেই আমার এক একটা দিন পার হচ্ছে, প্রতিনিয়ত কত কিছু শিখছি,জানছি বলে বোঝাতে পারবো না। তবে অপেক্ষা করছি ছাত্র আন্দোলন এর বিজয়ের। অপেক্ষা করছি নতুন সূর্যদয়ের।

Post Details

CameraSamsung M31
LocationDhaka,Bangladesh
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আপনার সারাদিনের কাজকর্ম শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকাল বেলায় হাটাহাটি করা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। এতে শরীর ভালো থাকে ।মন ভালো থাকে। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো ।ভালো থাকবেন।

আসলে বাসায় বসে থাকতে থাকতে খেয়াল করলাম ওজন বেড়ে যাচ্ছে, তাই সকালে হাটাহাটি করা, যদিও অফিস শুরু হলে এই অভ্যাস আর থাকবে না, তখন ঘুম থেকে ঊঠেই যেতে হবে অফিসে। ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ে মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।