শনিবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন। মেয়ে সুস্থ হবার পর থেকে বাহিরে বের হবে বলে বাহানা ধরেছে, কিন্তু ভয়ে বের হতে পারি না। মেয়েকে নিয়ে একটু দূরে গেলেই যদি আবারো অসুস্থ হয়। তবে আজকে সকাল সকাল নাস্তা সেড়ে কিছু শপিং এর উদ্দেশ্যে বের হলাম সবাই মিলে। প্রথমে ভেবেছিলাম সুভাস্তু নজরভ্যালি যাবো, কিন্তু রাস্তায় গিয়ে ঠিক করলাম আজকে মিরপুরে যাওয়া যাক।
ঢাকার আনাচে কানাচে ঘুরে ঘুরে শপিং করা হলেও মিরপুরে যাওয়া হয়ে ঊঠে নি, তাই মিরপুরের পথে যাত্রা। বাসা থেকে বের হয়ে বাসে চড়ে রওনা হলাম মিরপুর ১০ এর উদ্দেশ্যে। যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের রাস্তা সংস্কারের কারণে প্রায় আধাঘন্টা জ্যামে বসে থাকতে হলো। মিরপুর পৌঁছাতে প্রায় ১২ টা বেজে গেল।
এদিক টা আমি তেমন ভালো চিনি না, বাস থেকে নেমে মিরপুর ১০ এর শাহ আলী শপিং কমপ্লেক্সে চলে গেলাম। মানুষের তেমন একটা ভীড় নেই, দোকানদার রা একরকম অবসর সময় পার করছে। কাস্টমার দেখলেই ডাকাডাকি করছে, বুঝতে পারলাম ব্যবসার মন্দা সময় যাচ্ছে।
আমরা প্রথমে মেয়ের জন্যে একটা ফ্রগ কিনলাম। কেনার সময় দাম লেখা ছিল ৯০০ টাকা, তবে দামদামি করে ৪৫০ টাকায় কিনতে পারলাম।
এই মার্কেটে বেশিরভাগ কাপড় আর ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর দোকান , তবে মেয়ের জন্যে আমাদের জুতো কিনতে হবে। পরে একজনকে জিগেস করে জানতে পারলাম মিরপুর ২ এ ভালো জুতোর দোকান আছে। কি আর করার রিক্সা নিয়ে আবারো মিরপুর ২ চলে গেলাম। মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স বেশ গুছানো। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই মার্কেটের দোকানদার দের আরো করুণ অবস্থা, সবাই লাইট ফ্যান বন্ধ করে বসে আছে, কাস্টমার গেলে অন করছে। বুঝতে পারলাম ব্যবসা এই সময়ে অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছে, তবে একটা ভাল দিক, দোকানদার রা বিদ্যুতের অপচয় রোধ করতে সচেষ্ট এখন।
ছোট বাচ্চাদের জুতা কিনতে গেলে মধুর সমস্যায় পড়তে হয়, এবারও ব্যতিক্রম হলো না, এত সুন্দর সুন্দর ডিজাইন রদেখে কোনটা ছেড়ে কোনটা নিবো সেটা ঠিক করাই মুশকিল। অবশেষে মেয়ের পছন্দ মতো এক জোড়া কিনে ফেললাম। মেয়ে বাবুদের জুতোর দাম সাইজের তুলনায় অনেক বেশি মনে হয় আমার কাছে। এবারো এই জুতোজোড়া কিনতে আমার খরচ হলো ১১৫০ টাকা।
জুতো কেনা শেষে মেয়ের জন্যে আরো একটা জামা কিনলাম। এটার দাম নিলো ৬৫০ টাকা। গিন্নী এখান থেকে একটা নেকাব কিনলো, আরো কিছু টুক টাক কেনা কাটা শেষে আমরা বের হলাম।
শপিং কমপ্লেক্স এর উলটো দিকেই দেখতে পেলাম পূর্ণিমা রেস্টুরেন্ট। এখানকার হান্ডি বিরিয়ানির নাম অনেক শুনেছি। চলে গেলাম রেস্টুরেন্টে। অরডার দেয়ার আরো ৩০ মিনিট পরে খাবার এলো। মেয়ের জন্যে নিলাম মোরগ পোলাও। হান্ডি বিরিয়ানি জীবনে প্রথমবার খাওয়া হলো, কি কারনে এর এমন নাম তা জানি না, তবে খেতে ভালোই মনে হয়েছে।
খাবার খেয়ে রিক্সা নিয়ে চলে এলাম মিরপুর হোপ মার্কেটে। এখানে ফুটপাতে অসংখ্য দোকান, এমন কিছু নেই যে এখানে পাওয়া যায় না। মেয়ের প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্যে একটা স্যান্ডেল আর আরো একটা জুতো এখান থেকেই কিনলাম। পাশাপাশি মেয়ে একটা হিজাব ও কিনলো।
একটা সময় মনে হচ্ছে আর না, এবার বাসায় ফিরতে হবে। তবে যমুনার সামনের জ্যাম এভোয়েড করতে হবে, ইনড্রাইভ এপ্সের মাধ্যমে একটা গাড়ী কল করলাম। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বনানী হয়ে গুলশান ২ দিয়ে নতুন বাজার চলে এলাম খুব অল্প সময়েই। ভাড়া আসলো মাত্র ২৯০ টাকা।
ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে আজকের কেনাকাটা গুলো দেখতে লাগলাম। সব মিলিয়ে আজকের পুরো দিনটা কাটলো বাহিরে কেনাকাটা আর ঘোরাঘুড়িতে। এখন মেয়ে সুস্থ থাকলেই হয়।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের দিনালিপির ইতি টানছি। ভালো থাকবেন সবাই।
Device name | Samsung M31 |
---|---|
Photographer | @mukitsalafi |
Location | Dhaka, Bangladesh |
ছোট বাচ্চারা অবুঝ তাই ওদের ভালো মন্দ আমাদেরই দেখতে হয়। ওদের অবুঝ মন অনেক সময় অনেক কিছু বায়না করে তবে আমাদের ভেবে চিন্তে উচিতটাই করতে হবে। তবে এটাও ঠিক ঘরে বন্দী হয়ে থাকতে কারোরই ভালো লাগে না আর বাচ্চাদের কথা তো আলাদা। তাই আজ সবাই মিলে শপিং করতে বেরিয়েছিলেন। কেনাকাটা শেষে সবাই মিলে বাইরে থেকে খাবার খেয়েছিলেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit