Source |
Hello,
Everyone,
এই ২০২৪ সালে এসেও কিছু নারীদের ভুল ধ্যান-ধারণা রয়েগেছে ।তাদের কাছে স্বামী হল প্রভু, তিনি হলেন একমাত্র সংসারের কর্তা। তার হাতে স্ত্রীর সমস্ত কিছু নির্ভর করে ।ভালো থাকা ,মন্দ থাকা এমনকি বেঁচে থাকাটাও নির্ভর করে তার স্বামীর উপরে।
মাঝে মাঝে মনে হয় নারীদের জীবন কি অভিশপ্ত? না কোন অতীত কর্মফলের জন্য তাকে নারী হয়ে জন্ম নিতে হয়েছে। ”মেয়েরা বিয়ের আগে বাবার বোঝা থাকেন এবং বিয়ের পরে হয়ে থাকেন স্বামীর বোঝে” তবে এই কথাটা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় ।
বর্তমান সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও আজ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। নারীরা আজ ঘরে-বাইরে চাকরি করছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তার স্বামীর থেকে স্ত্রীর আয় বেশি হয়ে থাকে ।আজ মেয়েরা সংসার সামলাচ্ছে তার সাথে বিমান চালাচ্ছে, রেল চালাচ্ছে। সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ দেখতে পাই ।
এত অধিকার, এত শিক্ষা তারপরেও এখনো কিছু নারী আছে যারা ঘরের কোণে গুমড়ে গুমড়ে কাঁদে। সমাজের লোক লজ্জার ভয়ে সে কিছু বলতে পারছে না। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সংসারও ছেড়ে যেতে পারছে না । স্বামী নামের প্রভুর অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছে জীবন ভর।
বিধাতা তো নারীকে অনেক যত্ন করে তৈরি করেছেন এবং মায়ের এর সম্মান দিয়েছেন সবার উপরে। বিশেষ করে বাংলাদেশে এখনো কিছু নারীদের মনে এই ধ্যান-ধারণা যে, স্বামী চাইলে যখন তখন স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে পারে , স্বামীর মারার অধিকার আছে । আমার মনে হয় না কোন ধর্মগ্রন্থে এমন লেখা আছে ।
Source |
আমার জানা মতে স্বামীর পাপের ভাগ স্ত্রী বহন করে না বরঞ্চ স্ত্রীর পাপের ভাগ স্বামীকে বহন করতে হয় আরো বলা আছে, স্ত্রীকে সুখে রাখার দায়িত্ব স্বামীর এবং তার ভরণপোষণ দেখভাল সমস্ত কিছু দায়িত্ব হলো তার স্বামীর ।হ্যাঁ স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হতেই পারে, মান অভিমান হতেই পারে তাই বলে কথায় কথায় হাত তুলে তার পুরুষত্ব জাহির করতে হবে ,এমন আইন তো কোথাও নেই।
আজকাল নানা কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমাজ বিবাহ বিচ্ছেদের মূল কারণ হিসেবে নারীকেই বেশি দোষারোপ করে থাকে। একটি ডিভোর্সি মেয়ে এই সমাজে জীবন ধারল করা অনেক কষ্টের। সমাজের কিছু খারাপ লোক তাকে নানা কথা শোনায়, অন্যায় প্রস্তাব দেয় । কিন্তু একটি পুরুষের ক্ষেত্রে তা হয় না ।
Source |
একটি পুরুষ চাইলেই সে চার-পাঁচটা বিয়ে করতে পারে। তারপরেও তার কোন দোষ থাকে না কিন্তু যখনই একটি মেয়ে তার সন্তান নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে আসে তখনই তাকে সমাজের কুসংস্কারের সম্মুখীন হয়। মেয়েটির বাবা-মা সব সময় চায় তার মেয়ে সুখী হোক ,এমনকি মাও তাকে সব সময় বলে থাকেন ”একটু ধৈর্য ধরো ,একটু মানিয়ে নাও, আস্তে আস্তে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে”। মেয়েটি আর কত মানাবে । স্বামীর মন রক্ষা করতে এক এক করে দু তিনটি সন্তানের বাবা মা হয়ে যায় তারপরও স্বামীর মন রক্ষা করতে পারে না।
আর কত সহ্য করবে, শাশুড়ির যন্ত্রণা, ননদের যন্ত্রনা তার সাথে স্বামীর যন্ত্রণা তো আছে ।একটি সংসারে সব সময় কি স্ত্রীকে মানিয়ে নিতে হবে? সবকিছু পরিবর্তন হলেও এখনো কিছু মানুষের ধ্যান-ধারণা পরিবর্তন হয়নি। সে অনেক শিক্ষিত হতে পারে, অনেক বড় চাকরি করতে পারে কিন্তু তার মনের ভিতরে যে একটা কুৎসিত মন থাকে সেটা পরিবর্তন করতে পারছে না।
আজও, আমাদের সমাজে কিছু নারী মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এর শেষ পরিণতি হিসেবে অনেক নারী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে । স্বামী নামক সেই প্রভু আবার ড্যাং ড্যাং করে বিয়ে করতে যাচ্ছে। নারী-পুরুষ সমান অধিকার , সমান শিক্ষিত হলেও সংসারের ক্ষেত্রে এখনো স্বামী-স্ত্রীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি ।যদি সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারতো তাহলে প্রতিটি সংসার হতো একটি সুখের সংসার ।
যদি, স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যের প্রতি সহানুভূতি থাকতো তবে প্রতিটি সন্তান তার বাবা মার একটি সুখী সম্পর্ক দেখতে পারতো । আমাদের বাবা-মা, দাদু ঠাম্মা এদের বিবাহিত জীবন কত সুন্দর ছিল। তারা জীবনের শেষ পর্যন্ত একে-অপরের সঙ্গী ছিল। বর্তমান সময়ে দুই বছর যেতে না যেতেই সংসারে কলহ সৃষ্টি হয় , সম্পর্কটা যেন ফিকে হয়ে যায়।
সবকিছু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা উচিত। কোন সম্পর্ক জোর করে টিকিয়ে রাখা যায় না, যে সম্পর্কে ভালোবাসা থাকে না সেই মিথ্যে সম্পর্ক বেঁধে রাখা উচিত নয়। যদি স্বামী-স্ত্রীর মনের মিল না থাকে সেই সম্পর্ক সেখানে ইতি টানা উচিত এবং তাদের সুন্দরভাবে বিচ্ছেদ হওয়া উচিত । বাবা-মার প্রতি সন্তানের একটা ভুল ধারণা তৈরি না হয়।
Source |
সন্তান যখন ঘুম থেকে উঠে দেখে ’ বাবা-মায়ের ঝগড়া, কলহ লেগেই আছে”। সেই সন্তান মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে । দেখা যায় কোন ডিভোর্সি মেয়েকে পড়াশোনা ক্ষেত্রে কিংবা সমাজে প্রতি ক্ষেত্রে কথা শুনতে হয় , এমন কি কোন সম্ভ্রান্ত ফ্যামিলি সেই মেয়েকে বিয়ে করতে চাচ্ছে না। এখানে বাবা-মায়ের ভুলের শাস্তি সন্তানের পেতে হয়।
এমনও অনেক সুখী পরিবার আছে যেখানে স্বামী-স্ত্রীর রূপ নয় গুনকে ভালবাসে। স্ত্রীকে সকল কাজে সাহায্য করেন ।সংসারে টাকার অভাব থাকলে সেটা পূরণ করা যায় কিন্তু ভালোবাসার অভাব থাকলে সেটা কখনো পূরণ হয় না । একটি ঘটনার জন্য অনেকদিন থেকে মনের ভিতর নানা প্রশ্ন জেগেছিল ।
সবকিছু পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে আমি চাইবো আমাদের মন মানসিকতা পরিবর্তন হোক ।প্রতিটি সংসার হোক সুখের সংসার সেই কামনা করে আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি ।ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।