Better Life with Steem|| The Diary Game||07-02-25||৭ বছর পরে আবার দেখা||

in hive-120823 •  14 days ago 
Untitled design.png
Made by Canva

Hello,

Everyone,

শুক্রবার আমাদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন তাই ঘুম থেকে উঠতে একটু অলসতা লাগে । অফিস স্কুল কলেজ সবকিছুই বন্ধ ছিল তাই আজ আর সকালবেলা ওঠার কোন তারাই ছিল না ।সকাল ৯ঃ০০ টায় ঘুম ভাঙলো। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সংসারের টুকিটাকি কাজ সেরে নিয়েছি। স্নান করে সকালের প্রার্থনা করে নিলাম।

তখনও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘুমাচ্ছিল । সবকিছু বন্ধ ছিল তাই ওদেরকে আমি ঘুম থেকে ডেকে তুলিনি। সপ্তাহের এই ছুটির দিনটা ওরা একটু দেরিতে উটুক । শুক্রবার অন্যদের ছুটি থাকলেও আমাদের গৃহিণীদের এই ছুটির দিনে অনেক কাজের তালিকা থাকে। ওদের ইউনিফর্ম পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে সংসারের বাড়তি কাজ গুলো গুছিয়ে নিতে হয়। সপ্তাহের বাকি ছয় দিনের সমস্ত কাজ মনে হয় যেন ছুটির এই একটি দিনই করতে হয় ।অন্যদিন ব্যস্ততার জন্য সংসারের বাড়তি কাজগুলো করা সম্ভব হয় না তাই চেষ্টা করি এই ছুটির দিনে সেই বাড়তি কাজগুলো সেরে রাখার।

কিছুদিন থেকে আমি খুব অসুস্থ আছি এবং ঠান্ডা শেষ হয়ে হালকা হালকা গরম পড়া শুরু করেছে তাই ঠান্ডা জনিত নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে ,যার জন্য খাবার-দাবারে একদমই রুচি থাকে না ।শীতের সকালবেলা গরম ভাতের সাথে ঝাল ঝাল বিভিন্ন ধরনের ভর্তা হলে খুবই ভালো লাগে। আমি চিন্তা করেছি সকালবেলা ভাতের সাথে ভর্তা করে নেব তাই আমি আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, টমেটো ভর্তা ,পেঁয়াজ কলি ভর্তা এবং কাঁচা কলা ভর্তা করেছিলাম ।

IMG_20250207_130010.jpg

আমার খেতেও তেমন ভালো লাগছিল না কিন্তু এই ভর্তাগুলো যখন তৈরি করছিলাম এর সুস্বাদু গন্ধে আমার রুচি ফিরে এলো মনে হচ্ছে। আমি ওদের জন্য আর অপেক্ষা করিনি , ভর্তাগুলো তৈরি করে সঙ্গে সঙ্গে ভাত খেয়ে নিলাম। মনে হচ্ছে যেন অনেকদিন পরে তৃপ্তি করে ভাত খেলাম আজ ।

আজ আমার শাশুড়ি মায়ের কথা খুবই মনে পড়ছে। মা ভর্তা খেতে খুবই পছন্দ করতেন এবং ভর্তাগুলো বেশিরভাগ সময় মা তৈরি করতেন ।মা যা ভর্তা করুক না কেন খুবই সুস্বাদু হতো। মা আমাদের ছেড়ে প্রায় ২ বছরের মত হলো চলে গেলেন। তার প্রতিটি কথা, প্রতিটি স্মৃতি চোখের সামনে বাসছে।

IMG_20250207_181457.jpgIMG_20250207_191354.jpg

অনেকে বলে, শাশুড়ি নাকি অনেক কঠিন হয়, অনেক ভুল ধরে কিন্তু এই বিষয়ে আমি খুবই ভাগ্যবতী। কারণ আমার শাশুড়ি যথেষ্ট ভালো ছিলেন এবং তিনি আমাকে তার মেয়ের মতো করে একটু একটু করে সবকিছু শিখিয়ে দিয়েছেন।সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি তাকে যেন স্বর্গের সুখে রাখেন।

যাই হোক, আমি দুপুরের রান্নার আয়োজন করতে ব্যস্ত হয়ে পরি। এরই মাঝে আমার খুলনার একজন প্রিয় বৌদি ফোন দিয়েছে। ওরা আজ ঢাকাতে আসছে তাই আমাদের সাথে দেখা করবে। আমি বলেছিলাম বাসায় আসতে কিন্তু ও অনেকটা ব্যস্ত ছিল তাই ওরা বাসায় আসতে পারবে না। তাই আমরা একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে দেখা করলাম। এই মানুষগুলো আমার রক্তের কেউ নয় ।

WhatsApp Image 2025-02-07 at 23.00.01_95fdd78c.jpgWhatsApp Image 2025-02-07 at 23.00.03_f5016004.jpg
WhatsApp থেকে নেওয়া ছবি

আত্মার সম্পর্ক তাদের সাথে আমার ।আমাদের চাকরির সূত্রে বিভিন্ন বিভাগে যেতে হয় এবং তিন বছর কিংবা চার বছর সেই শহরের মানুষগুলো আমাদের আপন হয়ে যায় । দীর্ঘ ৭ বছর পরে ওদের সাথে আমাদের আজ আবার দেখা হবে। দুপুরের খাবার শেষে আজ কোন বিশ্রাম নেইনি । আমরা তৈরি হয়ে গেলাম , আর্মি বাবু uber কল করলো। আমরা গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টে বিকেল চারটায় একত্রিত হলাম ।

রঞ্জনা দিদি আমার খুবই কাছের একজন মানুষ ছিলেন। আমার বড় বোন নেই , বড় বোনের স্থান করে নিয়েছে । দিদি যথেষ্ট ভালো। দাদাবাবুও অনেক ভাল ছিলেন কিন্তু দু বছর আগে দাদা স্ট্রোক করে মারা গিয়েছেন ।তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। দিদি অনেকটা মিশুক। দিদি সবাইকে হাসাতো এবং অনেক কথা বলতো কিন্তু তার মনটা অনেক ভালো।

IMG_20250207_201357.jpgIMG_20250207_201112.jpg

অনেকদিন পরে ওদেরকে অনেক ভালো লাগলো ,গল্প করতে করতে কখন যে রাত নয়টা বেজে গেল তা বুঝতে পারলাম না ।খাওয়া-দাওয়া, গল্প করা যেন শেষই হচ্ছে না । এই আনন্দের সময়টুকু যেন দ্রুত চলে যাচ্ছে। আমার রাত দশটা বাসায় চলে আসি এবং ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি ।এভাবেই কেটে গেল দিন আমার ।

প্রিয় মানুষের সাথে ৭ বছর পরে আবার দেখা ।পৃথিবী যেহেতু গোল হয়তোবা প্রিয় মানুষের সাথে আবারো ঘুরে ফিরে দেখা হতে পারে কোন এক দিন ।সকলে ভালো থাকবেন এবং ভালো বন্ধুদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখবেন ।আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি।


◦•●◉✿ শুভ রাত্রি✿◉●•◦

Thank You So Much For Reading My Blog📖

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmPayXPfM22kXaj3xKw37oQ9tua3JfrnuMRWWqGHfhuyA1UYheY5qjiFbP3BW...JWNUaLb1UAxtVkvpEzFvrbCpiTVHr2qys8cnVHpyrfv38wVPMc1Luya71X8AzcNNuKjF1rHwqMTUWN8r39rGXHzGTLWtLUbqpNh6DHaWG6eK2zUkgnx8ShFKdg.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

@tipu curate

Thank you.

আপনার দিনটি সত্যিই সুন্দর ভাবে কেটেছে তা পরেই মনে হল। প্রিয়জনদের সাথে দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়ার আনন্দটাই আলাদা। আপনার শাশুড়ি মায়ের প্রতি আপনার ভালবাসার শ্রদ্ধা সত্যিই প্রশংসনীয়। ভর্তার গন্ধে রশি ফিরে আসার অনুভূতিটাও বেশ চেনা লাগলো।

আর বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো মুহূর্তগুলো তো সত্যিই অমূল্য। পৃথিবী ঘুরে আবার কখন কোথায় কার সাথে দেখা হয়ে যায় তা বলা যায় না। আশা করি ভবিষ্যতেও এমন সুন্দর মুহূর্ত তৈরি হবে আপনার জীবনে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।আমরা বাবার বাড়ি থেকে এক মাকে ছেড়ে শশুর বাড়িতে আবার নতুন মাকে পাই ।

আমরা যদি তাদের মায়ের স্থানে রাখতে পারি তারাও আমাদের মেয়ের মত ভালোবাসবেন ।

প্রথমেই আপনার শ্বাশুড়ির জন্য দোশা করি। তিনি যেখানে আছেন সেখানে যেন ভালো থাকেন। আসলে মানুষের স্মৃতিগুলো সে চলে যাওয়ার পর বেশি মনে পরে।

কাজের সুত্রে হলেও আপনে অনেক মানুষের সাথে সম্পর্ক রেখেছেন। আসলে দিন শেষে রক্তের সম্পর্কের থেকে অন্যদের সাথে যে সম্পর্ক তৈরি তা বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে যা কখনও ভোলার মতো না।
পোষ্টটা পরে অনেক ভালো লাগল। আপনাদেট সম্পর্কগুলো এভাবেই অটুট থাকুক।

আসলে বর্তমান সময়ে তরকারি বা অন্যান্য খাবার দিয়ে খাবার খেতে তেমন একটা ভালো লাগে না তবে ভর্তা যদি আপনি তৈরি করেন সেটা দিয়ে খাবার খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে আমি প্রায় প্রতিদিন চেষ্টা করি যে কোন এক পদের একটা ভর্তা খাবারের তালিকা রাখার জন্য এটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে।

আপনাদের চাকরির সুবিধার্থে আপনারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন জায়গায় আপনাদেরকে থাকতে হয়েছে তাদের সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক হয়েছে সেই সম্পর্কের একজনের সাথে আবারও সাত বছর পরে দেখা বিষয়টা অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার একটা দিনের কার্যক্রম শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

হয়তোবা সপ্তাহের একটি দিন সব মানুষদের ছুটি থাকে কিন্তু গৃহিণীদের আসলে কোন ছুটি থাকে না। তাদের থাকে না কোন শুক্রবার থাকে না কোন সরকারি ছুটি।গৃহিণীদের নিজের সংসার গুছিয়ে চলাটা আসলে সত্যি অনেক কষ্টের একটি বিষয়। এবং সংসারের যে সকল কাজ গুলো তারা বাড়তি করে ফেলে সব গুলো শেষ করে এই ছুটির সময়। যাইহোক সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ এতো ব্যস্ততার মধ্য থেকে।