![]() |
---|
Made by Canva |
Hello,
Everyone,
আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ নিয়ে সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও সকলের আশীর্বাদ নিয়ে এবং সৃষ্টি কর্তার কৃপায় ভালোই আছি তবে অনেক ব্যস্ততার ভিতর সময় পার করছি ।
আমি গত পোস্টে বলেছিলাম মা আমার বাসায় এসেছেন এবং তাকে চোখের ডাক্তার দেখাচ্ছি ,এজন্য আমাকে অনেকটা ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে মাকে নিয়ে ।শনিবার থেকে আমাকে Lions eye institute & hospital নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে ।
মায়ের চোখের সমস্যার সাথে অন্যান্য অনেক সমস্যা রয়েছে। তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তার ডায়াবেটিস অনেকটাই বেশি রয়েছে এ ছাড়া শারীরিক জটিলতা রয়েছে ।আসলে বেশি বয়স হলে যে বুড়ি হয় তা না অতিরিক্ত রোগ-শোকে মানুষ তাড়াতাড়ি বৃদ্ধ হয়ে যায় ।
![]() | ![]() | ![]() |
---|
অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে আজকে মায়ের চোখ অপারেশনের তারিখ দিয়েছিলেন। তার যেহেতু ডায়াবেটিস ছিল তাই মাকে নিয়ে আমার অনেক চিন্তা ছিল।
মায়ের চোখ অপারেশন করতে হাসপাতাল যাব তাই খুব সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠলাম ।বলা যায়, গতরাতে এক ঘন্টা ঘুমাতে পারিনি । মা অনেক নরম এবং খুবই ভীতু মনের একজন মানুষ। তিনি অল্প কিছুতে খুব ভেঙ্গে পরেন। সারারাত বাচ্চাদের মতোই করছিল এক ঘন্টা ঘুমায়নি। আমি শুয়ে মোবাইলে বারবার সময় দেখছিলাম, কখন সকাল হবে?
যেহেতু আমাদের খুব সকালে হাসপাতালে মাকে নিয়ে যেতে হবে। ডাক্তার সাহেব অনেক ভালো একজন প্রফেসর ।তবে তিনি ১ দিনে ১০ টি অপারেশনের বেশি করার না। মা অনেক দূর থেকে এসেছেন , বেশিদিন থাকতেও পারবেনা তাই অনুরোধ করার পরে তিনি আজকে( ৮ তারিখ) দিয়েছিলেন। সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ভাত রান্না করেছিলাম, ডাল আর মাছ ভাজি করেছি ।মায়ের জন্য রুটিও করেছিলাম কিন্তু অল্প ভাত খায়েছেন। আমি স্নান করে সকালের প্রার্থনা করে নিলাম।
আমার একটু ভয় লাগছে যেহেতু রাতে মা একদম ঘুমাতে পারিনি। ভাবছি, তার যদি প্রেশার বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিস নেমে যায়। সে মনের ভেতরে আশঙ্কা ছিল। আমরা সকাল সাতটায় হসপিটালের উদ্দ্যেশে বেরিয়ে পড়ি। আর্মি বাবু আজকের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন। সত্যি বলতে, তার এই বিষয়টা আমার খুবই ভালো লাগে। তিনি তার বাবা-মায়ের প্রতি যতটা যত্নশীল ততটা তিনি আমার মা-বাবার প্রতি যত্নশীল ।সেই বিয়ের শুরু থেকে দেখে আসছি আমার বাবা-মায়ের সকল সমস্যায় তিনি এগিযে আসেন । তিনি একটু রাগী বটে কিন্তু তার মনটা অনেক নরম।
যাই হোক আমরা ৭:৩৫ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছে যাই। সেখানে গিয়ে মাকে নতুন করে আরো পরীক্ষা করলেন। সবকিছু মোটামুটি স্বাভাবিকই আছে তবে ব্লাড প্রেশার একটু বেশি ছিল। ৮০/ ১৬০ ছিল। হসপিটালের সকল নিয়ম-কানুন মেনে সকল টাকা পরিশোধ করে সকাল ৯ টার সময় ওটিতে নেওয়া হলো ।সকল কিছু নিয়ে আমাদের ৬২,৮০০টাকা লেগেছে।
কর্তব্যরত নার্স মাকে অনেক সাহস দিয়েছিলেন এবং খুব সুন্দর সুন্দর কথা বলেছিলেন। আমরা ওটি রুমের বাহিরে অপেক্ষা করছি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হওয়ায় আমরা ওটি বাহিরে বসে মনিটরে অপারেশনের লাইভ দেখতে ছিলাম । আমি সঙ্গে শ্রীমদ্ভগবদগীতা নিয়ে গিয়েছিলাম তাই আমি পাঠ করছিলাম আর মাঝে মাঝে মনিটরের দিকে তাকাচ্ছিলাম । কত সূক্ষভাবে চোখের ছানিকে ভেঙে নিয়ে এসে আবার নতুন করে কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেওয়া হলো ।একমাত্র ৩০ মিনিট সময় লেগেছে। মাকে নিয়ে আবার বেডে শুইয়ে দিয়েছিলেন। কোন সেলাই নেই . কোন ব্যান্ডেজ নেই ।
![]() |
---|
এখন কিছুটা সময় মাকে বিশ্রাম নিতে বলেছিল। আমরা বাসায় চলে যেতে পারবো তাই বলেছিল। আর্মি বাবুকে মায়ের পাশে বসে ছিল আমি মেয়েকে নিয়ে দুপুর ১ টায় নিচে আসলাম। সুন্দরভাবে অপারেশন হয়ে গিয়েছিল তাই ভাবছি ,আমার এবার কিছু খেয়ে নিতে হবে। আমিও দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম । মামনি ভেলপুড়ি পেলে অনেক খুশি তাই মেয়ের আবদারটা পূরণ করলাম । খাবার শেষে আমরা আবার মায়ের কাছে চলে আসি।নার্স আমাদেরকে সবকিছু বুঝিয়ে দিলেন। আমাদেরকে আবার দুই সপ্তাহ পরে ডাক্তারের কাছে আসতে বললেন।
চোখ হলো জীবনের অমূল্য সম্পদ। এই ছোট্ট দুটি জিনিস আমাদের যদি অঞ্চল হয়ে যায় তবে সমস্ত পৃথিবীটাই তখন অন্ধকার হয়ে যায় । শুধু টাকা দিলেই হবে না তাই চোখের সঠিক যত্ন নিতে হবে। যেহেতু ডায়াবেটিসের রোগীদের চোখ ,কিডনি, এরকম কিছু কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে ,তাদেরকে অনেক সচেতন থাকতে হবে ।
![]() | ![]() |
---|
আমরা ৩টার দিকে বাসায় চলে আসি ।এসে ফ্রেস হয়ে মাকে নরম করে অল্প ভাত খাইয়ে দিলাম এবং তার ওষুধ খাইয়ে দিয়েছি। সন্তান যখন ছোট থাকে তখন অসুখ হলে মা যেভাবে সন্তানের যত্ন করে, সেভাবে বাবা-মায়ের প্রতি যত্ন নে উচিৎ
আমি ততটা বুঝি না ।তারপরেও বাবা মায়ের প্রতি যত্ন নিতে সাধ্যমত চেষ্টা করি। প্রতি এক ঘণ্টা পরপর মাকে ড্রপ দিতে হয় তাইতো আমি এই রাতে এখনো জেগে আছি ।কারণ এক ঘন্টা পর পর মায়ের চোখে ড্রপ দিতে হবে ।
বাকি সময়টা আমি তোমাদের সাথে জেগে আছি । সকলে আমার মায়ের জন্য আশীর্বাদ করবেন। মা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। সকলে ভালো থাকুন ।আজ এখানেই শেষ করছি।