Better Life with Steem|| The Diary Game|| 13-10-2024 || বিজয়া দশমী উদযাপন||

in hive-120823 •  last month  (edited)
Better Life with Steem The Diary Game 13-10-2024  বিজয়া দশমী উদযাপন.png
Made by Canva

সকলকে জানাচ্ছি বিজয়া দশমীর আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ।.মা আসবে আসবে সে অপেক্ষায় ছিলাম একটি বছর । মা আসলো ,আমাদের মাঝে আনন্দ বিলিয়ে দিল। এবার মায়ের যাবার সময় চলে এসেছে।

IMG20241013070155.jpgIMG20241013070240.jpg

সত্যিই এই পুজোর কটা দিন কিভাবে কেটে গেল তাই বুঝতে পারিনি । শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ থাকার কারণে এবং বর্তমান পরিস্থিতি দিক বিবেচনা করে ভেবেছিলাম যে এবার পুজোতে আমি কোন আনন্দই করতে পারব না । আমি শুরুতে আনন্দ না করতে পারলেও শেষের দিকে মা আমাকে আনন্দ করার সে সুযোগ করে দিয়েছিলেন । আমি আগের থেকে অনেকটা সুস্থ আছি ।

অসুস্থ থাকার কারণে মেয়েটাকে আমার জ্রায়ের বাসা পাঠিয়ে দিয়েছিলাম । এই শুভ সময় মেয়েটাকে ছাড়া আমারও ভালো লাগছিল না । নবমীর রাতেই দিদি ফোন দিয়েছিল ওদের বাসায় যাবার জন্য। সকালবেলা যেতে বলেছেন।

সকাল

সকাল ৫:৩০ মিনিটে ঘুম থেকে উঠে পড়লাম ।ঘুম থেকে উঠে সংসারের কিছু কাজ গুছিয়ে রাখি ।আর্মি বাবু ঘুম থেকে উঠে স্নান করে ঠাকুর পূজা দিয়েছেন। আমরা সকাল সাতটায় বাসা থেকে বেরিয়ে পরি । সকালবেলা রাস্তা একদম পরিষ্কার ছিল, কোন যানজট ছিল না তাই আমাদের বেশি সময় লাগেনি। ২৫ মিনিটে আমরা ওদের বাসায় চলে আসি ।

ওদের বাসার গেটের পাশে দুর্গা মন্দির ছিল। আমরা প্রথমে ঠাকুরকে প্রণাম করি এবং দিদির বাসায় যাই ।তখনও বাচ্চারা ঘুমিয়ে ছিলাম । বাচ্চারা রাত ২টার সময় ঘুমিয়ে ছিল তাই এখনও ঘুমাচ্ছে। বরণ সকাল ১১ টা থেকে মায়ের বরণ শুরু হবে তাই ওদের সকাল ৯টায় উঠালাম।

আপনজন একত্র হলে অনেক আনন্দ হয়। পূজোর আনন্দ মানে, খাওয়া দাওয়া, ঘোরাফেরা এটাই তো। আর যদি অসুস্থ থাকি তখন এই আনন্দটাই মাটি হয়ে যায় ।বিশেষ করে বাচ্চাদের বছরে ধরে এই আনন্দ জমিয়ে থাকে ।কবে পুজো আসবে ? কবে এ আনন্দ টুকু উপভোগ করতে পারবে?

IMG20241013095424.jpgIMG20241013102453.jpg

ওরা তো সারাক্ষণ পড়াশোনা, গান-বাজনা এই নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ওদের ছোটখাটো একটু আনন্দ মুহূর্ত দিতে হয়। আমরা ছোটবেলা যতটা আনন্দ করতে পেরেছি, আমাদের বাচ্চারা কিন্তু ততটা পারে না । মাকে বরণ করতে যাবার জন্য বরণ ডালা সাজিয়ে নিলাম ।

মা এই পৃথিবীর সকল সন্তানদের ভালো রাখবেন ,সুস্থ রাখবেন, এই বিদায়ের মুহূর্তে মাকে বিদায় দিতে আসলে খুবই কষ্ট হয় । আসছে বছর মা আবার আসবে সেই আনন্দ নিয়ে অপেক্ষায় থাকবো । আমরা স্বামী-সন্তান, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সকলকে নিয়ে সুখে সুন্দর একটি পৃথিবী গড়তে পারবো।

IMG20241013095331.jpgIMG20241013095402.jpg

আমি পানের খিলি বানাতে পারি কিন্তু জোড়া খিলি কখনো বানাইনি। দিদির কাছ থেকে প্রথম শিখে নিলাম। একটি পান দিয়ে দুটি খিলি অনেক সুন্দর ।

আমরা সকলে মিলে মাকে বরণ করলাম ।সবাই মেতে উঠল সিঁদুর খেলায় । শরীর যতই অসুস্থ থাকুক না কেন আজ মনে হয় যেন শরীরের সমস্ত রোগ দূর হয়ে গেল । নাতি-নাতনিরা দাদুকে পেয়ে অনেক খুশি। বাচ্চারা আশীর্বাদের সাথে সাথে তারপর প্রনামীও চাচ্ছে ।আমরা যা দেই তাতে তারা অনেক খুশি ।আমরাও ছোটবেলায় এমনই আনন্দ করতাম ।

WhatsApp Image 2024-10-14 at 22.42.58_bf4e3252.jpgWhatsApp Image 2024-10-14 at 22.43.01_69c2c451.jpg
WhatsApp থেকে নেওয়া ছবি

ছোট্ট একটা কৌটা নিতাম তাতে সকলের দেওয়া নাড়ু জমাতাম । আমরা বেশির ভাগ সময় দূর্গা পূজার এই দিনে মামা বাড়িতে যেতাম ।মামা ব্যাংক থেকে নতুন দশ টাকার বান্ডিল নিয়ে আসতো এবং সকল বাচ্চাদের হাতে একটি করে ১০ টাকার নতুন নোট দিতেন ।নতুন টাকা পেয়ে আমাদের সে কি আনন্দ হতো এবং কার কত টাকা হয়েছে সে নিয়ে অনেক মজা করতাম ।এখন আর সেই আনন্দটা পাচ্ছিনা ।আজ অনেক বছর হল মামাবাড়িতে যাওয়া হয় না ।বড় মামার কথা অনেক মনে পড়ছে। আজ মামা আকাশের তারা হয়ে গেছে।

WhatsApp Image 2024-10-14 at 22.39.05_57ee48c3.jpgWhatsApp Image 2024-10-14 at 22.43.01_037dbf8d.jpg
WhatsApp থেকে নেওয়া ছবি
নীচে ভিডিও লিংক দেওয়া আছে
Link
দুপুর

যাই হোক আমরা আনন্দ করে আবার বাসায় ফিরে আসলাম ।মেয়ে জামাই তার কাকী শাশুড়ির হাতে মাটন কষা খেতে চেয়েছে ।তাই সে খুব সকালবেলা খাসির মাংস নিয়ে এসেছে।অবশ্য দিদি আমাকে সবকিছু গুছিয়ে দিয়েছিলেন এবং ইলিশ মাছ দিদি রান্না করেছেন। যেহেতু আমি অসুস্থ তাই আমাকে শুধু খাসির মাংস রান্না করতে বলা হয়েছিল ।

IMG20241013130105.jpg

এই বয়সে শাশুড়ি হওয়া এবং জামাইয়ের আবদার পূরণ করতে পারলে ভালই লাগে। তারা আমার থেকে বয়সে অনেক বড় হলেও সম্পর্কের দিক থেকে আমি তাদের বড়। ওরা যখন আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে তখন আমার খুবই লজ্জা লাগে। তারপরও প্রণাম নিতে হয় কারণ আমি যে শাশুড়িমা।

IMG20241013105357.jpgIMG20241013111549.jpg
বিকেল

আমরা তিনটার সময় আবার বেরিয়ে পড়লাম । মায়ের বিসর্জনের সময় হয়ে এসেছে ।ওরা ফোন দিয়ে বলল, আমরা ট্রাকে করে যাবো ঢাকা সদরঘাট। ঢাকাতে মায়ের বিসর্জনের জন্য তিনটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে ।এখানের ঠাকুর বিসর্জন করা হবে ঢাকা সদরঘাটে তাই মেয়েদের জন্য একটি ট্রাক নেওয়া হয়েছে, ঠাকুরের জন্য একটি ট্রাক, ডিজে বক্সের জন্য একটি ট্রাক, ছেলেদের জন্য একটি । এইভাবে মোট ছয়টি ট্রাক নেওয়া হয়েছে।

IMG20241013163042.jpgIMG20241013163830.jpg

শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের অনেক নিরাপত্তা দিয়েছেন।র‌্যাব, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর দল ছিলেন। সকল বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় আমরা সদরঘাট গিয়েছি। যেহেতু অনেক ঠাকুর আজ বিসর্জন দেওয়া হবে তাই নিয়ম শৃঙ্খলা ভাবে আমাদের যেতে হয়েছিল। আমাদের টুকেন নাম্বার ছিল ২৭ ।সেই সিরিয়াল ভাবে ট্রাকগুলো যাচ্ছে।

WhatsApp Image 2024-10-14 at 22.36.38_6a91a392.jpg
WhatsApp থেকে নেওয়া ছবি

মনে হচ্ছে আজ ঢাকার সমস্ত শহর ঘুরে আসলাম।বনানী ,মহাখালী, মগবাজার, ঢাকা ভার্সিটি, জগন্নাথ হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় , ঢাকেশ্বরী মন্দির অনেক কিছু ঘুরে আমরা আজ আসলাম। কষ্টের ভিতরেও এক অন্যরকম আনন্দ ছিল। বিশেষ করে আমার মেয়ে খুবই খুশি ছিল, সে এই প্রথম ঢাকাতে বিসর্জন দেখল ।অবশ্য আমার বাবা মা অনেক চিন্তা করেছিলেন, যেতে হবে না বলেছিলেন ।বাবা মার মন তো! এখনো সন্তানের জন্য চিন্তা করে।

রাত
IMG20241013185152.jpg

আর্মি বাবু আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন তাই আমি সাহস করে গেলাম । তিনিও আমাদের সাথে ছিলেন । পরিবারের সবাই একই গাড়িতে ছিলাম ।সদরঘাট আসতে আমাদের পাঁচ ঘন্টা লেগে গিয়েছিল কিন্তু ফিরে আসতে বেশি সময় লাগেনি ।মাত্র এক ঘন্টায় চলে এসেছিলাম। সদরঘাট থেকে রাত ৯ঃ০০ টায় বাসায় চলে আসি ।এসে ফ্রেশ হই এবং সকলকে রাতের খাবার দেই। বাচ্চাটা শুধু মাংস দিয়ে ভাত খেলো এবং সবাই মাটন কষার অনেক প্রশংসা করল । এটাই আমার আনন্দ যে, কষ্ট করে রান্না করলে তার যদি প্রশংসা পাওয়া যায় তখন আর সেই কষ্টটা অনুভব হয় না।

রাত ১২টায় আমার বাসায় চলে আসি । আজ অনেক হল এখানেই বিদায় নিচ্ছে ।সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকুন ।


◦•●◉✿ শুভ রাত্রি✿◉●•◦

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

cc01ab456aeaff68ede60ae0d6128461.jpg

Hola amigo. Que bonito es conocer de tus tradiciones y cultura, me encantan tus trajes rojos y me gustaría saber si la pintura en tu rostro tiene algún significado.
Bendiciones para ti y tu familia

It seems you celebrated Durgapooja with great fervor. The family looks so happy and filled with bliss. I wish Maa Durga shower her blessings upon you all. 🙏

আপনাকে জানাই শুভ বিজয়া দশমীর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দেখে মনে হচ্ছে বিজয়া দশমীর দিনটি খুব ভালোভাবেই কেটেছে। আসলে সকলে মিলে সিঁদুর খেলার মজাটাই আলাদা। দিকে থাকে মা দুর্গার বিদায় বেলা ।আরেক দিকে সিঁদুর খেলার আনন্দে মনটা ভরে ওঠে। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ।ভালো থাকবেন।

Loading...