Better life with steem || The Diary Game || 30th August, 2024 ||

in hive-120823 •  last month 
IMG20240830181643.jpg
এক থেকে আট মাসের মেয়ে বাচ্চার "বেবি পোশাক" তৈরি করলাম আজ

Hello,

Everyone,

আমি কি দিয়ে পোস্টটি লেখা শুরু করব তাই খুঁজে পাচ্ছি না ।প্রথমত হল রাজনৈতিক সমস্যা, দ্বিতীয়ত হল প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং তৃতীয়ত হল প্রতিবেশীদের যে সমস্যাগুলো চোখের সামনে চলে আসে সেগুলো দেখে মানসিক ভাবে অনেক ভেঙ্গে পড়েছি।

আমরা এ কোন সময়ের সাথে চলছি, যেদিকে তাকাই সেদিকেই অনিয়ম, অশান্তি আর অত্যাচার ।বলা যায় ”জোর যার, মুল্লুক তার”। আজ শুক্রবার ছিল। সকলের ছুটির দিন হলেও ঘরের গৃহিণীদের বাড়তি কাজ থাকে ।সাপ্তাহিক বাজার এক সঙ্গে নিয়ে আসে। সেগুলো পরিষ্কার করে আবার সংরক্ষণ করার জন্য বক্সে করে রাখতে হয় । ছুটরি দিনে বাসাতে বিশেষ রান্নাবান্না করা হয়।

Screenshot 2024-08-31 002728.png
ল্যাপটপ থেকে স্ক্রিনশট নেয়া হয়েছে

সকালের নাস্তা করে যখন আমি কিছুটা সময় বসে ছিলাম তখন মোবাইলকে হাতে নিয়ে facebook খুলতেই যে ঘটনাগুলো চোখের সামনে ভেসে আসছে ,সত্যি তা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।

সকলের ন্যায্য দাবি আদায় করার জন্য আন্দোলন করা যেমন যুক্তিসঙ্গত তেমনি কিছু বিষয় অন্যায় ভাবে দাবি করা যুক্তিসংগত নয়। মেধার জন্য ছাত্রদের আন্দোলনের স্বপক্ষে আমিও ছিলাম ।কারণ ,এত দিনের সাধনা ও মেধার ভিত্তিতে তাদের কাঙ্খিত আসন খুজে পাবে ।তাদের সকল দাবি দাওয়া, আন্দোলন সবকিছুই সম্পন্ন হল এবং তারা সফল হলেন। আমরা দ্বিতীয়বার আবার স্বাধীন হলাম ।

Screenshot 2024-08-31 003208.png
ল্যাপটপ থেকে স্ক্রিনশট নেয়া হয়েছে

তবে স্বাধীনতার মানে কি এটা !স্বাধীনতার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যত কিছু বিশৃংখল না হয়েছে স্বাধীনতার পর থেকে তার থেকে বেশি বিশৃঙ্খল হচ্ছে ।আমি কোন রাজনীতি বুঝিনা , আমি কোন দল বুঝিনা, আমি কোন ধর্ম বুঝি না, আমার অতি সাধারন জ্ঞান থেকে যতটুকু বুঝি সেটুকু শেয়ার করছি।

আমরা সকলেই শৈশবে বাবা মায়ের পরে শিক্ষককে স্থান দিয়েছিলাম। শিক্ষকের মর্যাদা দিতে শিখতে হবে। এই নিয়ে অনেক লেখক অনেক কবিতা, গল্প লিখেছেন। যা আমাদের অনুপ্রেরণা দিত। বাবা মা যতটা শাসন করতে পারে তার থেকে শিক্ষকগন বেশি শাসন করতে পারতেন।

আমাদের সময় ব্যাথের লাঠি ছিল।আমাদের ভুল হলে শিক্ষকগন সেই লাঠি দিয়ে মারতেন। আমরা শিক্ষকদের দেখলে মাথা নত করে তাদেরকে সালাম দিয়ে পাশে দাঁড়াতাম, শিক্ষক যেতেন তারপরে আমরা যেতাম ন। এমনকি শিক্ষকদের দেখলে মাথা নত করে পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করতাম। আমার মনে পড়ে, আমাদের ভাই ও বোনের জন্য বাসায় একজন গৃহ শিক্ষক ছিলেন ।আমার বাবা একটি বেতের লাঠি থাকে কিনে দিয়েছিলেন ।

শিক্ষক আমাদের ভালবাসতেন আবার পড়া না হলে শাসনও করতেন। আমাদের শাসন করার জন্য বাবা মা শিক্ষকদের কিচু বলতেন না। আর বর্তমান সময়ে আমরা এতটাই শিক্ষিত হয়েছি যে, শিক্ষক দেখলে তাকে সালাম দেওয়া তো দূরের কথা, তার সামনে থেকে সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে ছাত্রদেরকে চলে যেতে দেখি ।আর এখন যা দেখছি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক , প্রধান অধ্যক্ষ সবাইকে বাধ্যতামূলক ভাবে অবসরে পাঠাচ্ছেন। এটাই কি চেয়েছিল মেধাবী শিক্ষার্থীরা ?

হয়তোবা তিনি ব্যক্তি হিসেবে মন্দ মানুষ ছিলেন কিন্তু শিক্ষক হিসেবে ভালোই ছিল ।তার সহযোগিতা ছাড়া আজকে ছাত্ররা কিন্তু মেধাবী হয়নি ।যদি একটি শব্দ তিনি শিখিয়ে থাকেন তাহলেও কিন্তু তিনি তার শিক্ষক, তার গুরুজন এবং বাবা-মায়ের পরে তার স্থান। একজন শিক্ষক এত বছর ধরে একটি প্রতিষ্ঠানকে ভালোবেসে এসেছেন। একটু একটু করে গড়ে তুলেছেন কত মেধাবী শিক্ষার্থী । তাকে জোর করে ,অপমান করে ,তার প্রিয় স্থান থেকে তাড়িয়ে দেওয়াটা কি আমাদের অন্যায় নয়। আমরা কি একবারও ভাবতে পারি না ! তারও তো পরিবার আছে, তার পরিবারে আমাদের মত সন্তানও আছে।

তারা কি অন্যায় করেছিল ? কেন তার রুজি রোজগার এভাবে আমরা নষ্ট করছি? এই অপমানকে তারা মেনে নিতে পারবে। আমি খবরে শুনেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় কিছু শিক্ষকরা এখন ছাত্রদের ভয়ে লুকিয়ে আছেন। এমনকি তারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্র বিশ্ববিদ্যালয় পাঠিয়ে দিয়েছে ।সকলের সামনে আসতে চাচ্ছেন না কারণ যদি অপমান করা হয় ।যদি তার পরিবারের কোনো ক্ষতি করা হয় ।

যেখানে শিক্ষকদেরকে মূল্যায়ন করা হয় না তবে মেধাবী শিক্ষার্থী কিভাবে তৈরি হবে ।সবার শুভ বুদ্ধি হোক ।ব্যক্তি মানুষকে শাস্তি দিতে গিয়ে একজন ভালো শিক্ষকের অসম্মান করা আমাদের উচিত নয় ।

যেহেতু আজ সাপ্তাহিক বাজার করেছিল তাই অনেক কাজ ছিল আজ । সমস্ত কাজ সেরে আমার দুপুরের খাবার খেতে বিকেল তিনটা বেজে গিয়েছিল । আজ সকাল থেকে দুপুরের কোন ছবি তোলা হয়নি। আমি সেই জন্য দুঃখিত ।আমি কিছুদিন আগে একটি পোস্টে লিখেছিলাম, আমার প্রতিবেশী জাহিদ ভাবি তার একটি ছেলে ও দুমাস আগে একটি তার মেয়ে সন্তান হয়।

জাহিদ ভাই মানুষ হিসেবে যতটা ভালো কিন্তু তিনি স্বামী হিসেবে ততটা ভালো নয়। কারণ তিনি কথায় কথায় তার স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন। যাই হোক , আমি সেই ছোট্ট মেয়ে বাবুর জন্য একটি বেবি ফ্রক তৈরি করি ও বেবির জন্য একটি কাজল উপহার দেই ।আমার মাকে দেখেছি এবং আমি আমার মেয়েকে ছোটবেলা কাজলের টিপ পড়াতাম । ভাবির কাছে কাজল ছিল না তাই আমি একটি কাজল কিনে নিয়ে এসেছিলাম।

IMG20240830194928.jpg

সন্ধ্যা বেলা প্রার্থনা করে নিলাম । ওদের সন্ধ্যাকালীন নাস্তা বানিয়ে দিলাম ।নাস্তা খেয়ে আমার মেয়ে ও আমি ভাবির বাসায় গিয়েছি, বাবুটার উপহার গুলো দিতে । বাচ্চাদের পোশাক তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে । একদম ছোট বাচ্চার এই পোশাক। এক মাস থেকে আট মাস পর্যন্ত বেবিরা পরতে পারবে এমন ভাবে বানিয়ে দিয়েছি। জাহিদ ভাই বাসায় ছিলেন। তিনি আমাদের সাথে হাসিমুখে কথা বললেন ।

ভাবির মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি তার বাম পাশে চোখের উপরে কালসেটে দাগ পড়ে আছে। তিনি বললেন, “আপনার ভাই আবার গায়ে হাত তুলেছে”। সাত বছরের ছেলেটি গলগল করে বলতেলাগলো ”আব্বু আম্মুকে মেরেছে এবং তার গলা চেপে ধরেছিল”। আমি বুঝতে পারিনি এটা কি মানসিক রোগ ? না স্বামীর প্রভুত্ব ফলানো । ভাবির সাথে গল্প করলাম ।ভাবি বলল, ”ওযতই মারুক আমি আর এখান থেকে বাবার বাড়ি যাবনা , মেয়েদের বিয়ের পরে নাকি স্বামীর ঘর তার ঘর, এখান থেকে যেতে হলে আমার লাশ যাবে ”।কথাগুলো শুনে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।

হ্যাঁ মেয়েটা হয়তোবা অন্যায় করতে পারে, মুখে মুখে কথা বলতে পারে তাই বলে সিজারিয়ান মাকে এই সময় এতটা মারধর করতে পারে ! এখানে জিয়াদ ভাইয়ের মা ও ছিলেন। তিনি কিছুই বলেনি ।তিনিও তো একজন মা । একজন মা হয়ে আরেক মাকে মা এভাবে অত্যাচার করে তা দেখে সে কিভাবে চুপ করে রইলো ।

আসলে আমরা মেয়েরা - মেয়েদের কাছেই সাহায্য পাই না। রাগ অভিমান সব সংসারে হয় তাই বলে কি গায়ে হাত তুলতে হবে? দারুন একটি বিষয় হল ,তিনি মারলেন ,তিনি আবার রাগ করে খাবার খাচ্ছেনা। তার জন্য ভাবিও খুব কষ্ট পাচ্ছে । ভেবে ছিল আজ মাটন বিরিয়ানি রান্না করবে কিন্তু তার স্বামী খাবে না তাই সে রান্না করেনি।হায়রে সরল নারী ! যার হাতে মার খেয়েছে তার জন্য এত চিন্তা এত ভাবনা।

পোস্টটি আমার অনেক বড় হয়ে গেছে ।একটু কষ্ট করে পড়ে নিবেন । কারণ স্টিমিট প্ল্যাটফর্ম হল আমার মনের কথা প্রকাশ করার একমাত্র মাধ্যম ।আসলে এই কথাগুলো আমি কারো সাথে শেয়ার করতে পারি না । এখানে মনের কথাগুলো শেয়ার করলে নিজেকে অনেক হালকা মনে হয় । আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি ।অনেক রাতের হয়েছে । প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তা সবার মাঝে শুভ বুদ্ধি প্রদান করুন এবং সবকিছু ভালো রাখুক । শুভ রাত্রি ।

Thank You So Much For Reading My Blog📖

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmPayXPfM22kXaj3xKw37oQ9tua3JfrnuMRWWqGHfhuyA1UYheY5qjiFbP3BW...JWNUaLb1UAxtVkvpEzFvrbCpiTVHr2qys8cnVHpyrfv38wVPMc1Luya71X8AzcNNuKjF1rHwqMTUWN8r39rGXHzGTLWtLUbqpNh6DHaWG6eK2zUkgnx8ShFKdg.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আসলে কিছু কিছু বিষয় যখন আমাদের সামনে আসে তখন আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই, শিক্ষকরা অবশ্যই সম্মানের পাত্র, তাদেরকে জোর করে পদত্যাগ করানো যুক্তিসঙ্গত কাজ নয়, কিন্তু কিছু কিছু শিক্ষক আছে যারা শিক্ষকের যোগ্য না, আমরা দেখেছি অনেক শিক্ষক পদত্যাগ করতে চাইলেও শিক্ষার্থীরা তাকে পদত্যাগ করতে দেয় নাই। আপনার সারাদিনে কার্যক্রম দেখে খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক সুন্দর করে আপনার দিনলিপি তুলে ধরেছেন। আজকের পৃথিবীটা যেন এক বিশৃঙ্খলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। সেদিকে তাকালেই চোখে পড়ে রাজনৈতিক সমস্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সামাজিক অবিচার, যা আমাদের মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে দিচ্ছে। জীবনের সব ক্ষেত্রেই অনিয়ম, অশান্তি আর অত্যাচার যেন প্রতিটি পদক্ষেপে সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। কোথাও যেন 'জোর যার, মুল্লুক তার' এই প্রবাদ সত্যি হয়ে উঠছে।সুস্থ থাকবেন,ভালো থাকবেন, আপনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।

ফেসবুকে আমিও এই দৃশ্যগুলো দেখেছি আসলে লজ্জা হচ্ছে নিজের কাছে এটা দেখার জন্য কি আমরা দেশটা আবারও স্বাধীন করলাম।। শিক্ষার্থীরা একজন শিক্ষকের সাথে কিভাবে আচরণ করছে তাকে জোর করে তার স্থান থেকে নামিয়ে দিচ্ছে।। আসলে অনিয়ম ও জুলুম যেন কিছুতেই আমাদের কাছ থেকে যাচ্ছেনা।।