Better Life with Steem|| The Diary Game||১৪-১৫ ঘন্টা বাস ভ্রমন ||24-01-25||

in hive-120823 •  7 days ago 
IMG_20250124_070154.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,

সকলের প্রতি রইল আমার অনেক অনেক ভালো বাসা।আশা করি সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। সৃষ্টিকর্তার দেয়া এই সুন্দর পৃথিবী সুন্দর ভাবে উপভোগ করছেন। দেখতে দেখতে আমাদের দিনগুলো কিভাবে কেটে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।

যে দিনগুলো যায় সেদিন গুলোই মনে হচ্ছে ভালো যায় আর সামনের যে দিনগুলো আসবে তা মনে হয় আমাদের জন্য কঠিন হতে পারে। তবে ফেলে যাওয়া দিনগুলোর স্মৃতিটুকু নিয়ে আমরা সামনের দিনগুলো আরো সুন্দরভাবে কাটাতে পারি। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি জীবনের যখন যে পরিস্থিতি আসুক না কেন আমরা যেন তা সুন্দরভাবে মানিয়ে নিতে পারি ।

অনেক কিছু আমাদের পরিকল্পনা মত হয় না তারপরও সেগুলো কাটিয়ে উঠতে আমরা সর্বদাই চেষ্টা করি ।শীত যাইযাই করে এখনো যাচ্ছে না । কিছুদিন থেকে ঠান্ডা- কুয়াশা খুব জেকে বসেছে। শীত চলে যাবার আগে পৃথিবীর মানুষকে একটু কাঁপিয়ে যাচ্ছে। যে যেখানে থাকুন বাড়ির প্রবীনদের ও বাচ্চাদের প্রতি বাড়তি যত্ন নিবেন।

কুয়াশা ঘেরা সকাল :

|IMG_20250124_064126.jpg||
|--|

আজকে আমাদের বরিশাল যেতে হবে তাই দেরি না করে আমরা খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। সকাল ৫:০০ টায় আমাদের ঘুম ভেঙে গেল এবং ফ্রেশ হয়ে খুব দ্রুতই যাওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়ে নিলাম। আমি ও আর্মি বাবু সকাল ছয়টায় বাসা থেকে বের হলাম ।এতটাই কুয়াশা ছিল মনে হচ্ছে যেন এখনও গভীর রাত ।

রাস্তায় সেরকম কোন গাড়ি দেখতে পাচ্ছিলাম না ।আমার হালকা হালকা ভয় লাগছিল। বর্তমান দেশের পরিস্থিতি এমনিতে ততটা। অন্ধকার সকালবেলা রাস্তায় হেঁটে যাওয়া কতটা নিরাপদ হবে এই চিন্তা করছিলাম ।একটু একটু সামনে এগিয়ে যাচ্ছি, সৌভাগ্যবশত একটি অটো রিক্সা মামার দেখা পেলাম ।মামা আমাদের বাস কাউন্টারে নিয়ে গেলেন ।আশেপাশের পরিবেশ তখনো থমথমে, তবে বাস কাউন্টারের পাশের রেস্টুরেন্ট গুলো খুব সকাল বেলায় খুলে যায় । তারা গাড়ির যাত্রীদের জন্য সকাল বেলা নাস্তা তৈরি করা থেকে শুরু করে দুপুরে খাবার সবকিছু আয়োজন করেন। আমাদের মত অনেক যাত্রী এখানে উপস্থিত হন ।

IMG_20250124_062836.jpg

কারো সকাল ছয়টায় গাড়ি এবং আমাদের গাড়ি ছিল সকাল সাতটা। আমরা হলাম প্রথম কাস্টমার এর কিছুক্ষণ পরে আরো অনেক যাত্রী আসলেন ।সকালবেলা তেল ছাড়া পরোটা এবং গরম গরম ধোয়া ওঠা সবজি খেতে বেশি লেগেছিল। সকালের নাস্তা এখান থেকে আমরা খেয়ে নিলাম ।নাস্তা করার শেষে আমরা কাউন্টারে গিয়ে বসলাম ।

শুক্র-শনি দু”দিন ছুটি থাকায় অনিকে তার বাড়িতে যাচ্ছেন ।এখন গাড়ির টিকিট সংগ্রহ করা কোন কঠিন বিষয় নয়। অনলাইন মাধ্যমে এখন টিকিট সংগ্রহ করা যায় ।তবে অনেকেই অনলাইন সম্বন্ধে ততটা জানেনা বিধায় তাদের কাউন্টারে এসে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের গাড়ি চলে আসলো এবং আমরা গাড়িতে উঠে গেলাম । আমাদের কাঙ্ক্ষিত আসনে বসে পড়লাম।

|IMG_20250124_065715.jpg|
|--|-

সকাল ৯ টা বেজে গেলো তখনও কুয়াশা ততটা কাটেনি ।সমস্ত শহর ঢেকে আছে কুয়াশায়। আমি ভেবেছি গাড়িতে বসে ঘুম দিব কিন্তু আমি কখনো জার্নিপথে ঘুমাতে পারি না । আমি নদীর দেশে মেয়ে হলেও গাড়ির জার্নি খুব ভালোবাসি কারণ লঞ্চ কিংবা নৌকা ভ্রমনে আমার খুবই ভয় হয়, যদি ডুবে যাই! গাড়িতে বসে প্রকৃত দৃশ্য দেখতে দেখতে আমি যেতে খুব ভালো বাশি। তবে পাশের সিটে আর্মি বাবু কিন্তু লম্বা একটা ঘুম দিল। আমি বুঝিনা তার এত ঘুম কোথা থেকে আসে। গাড়ির শব্দে মানুষ ঘুমাতে পারে?

IMG_20250124_065745.jpg
কুয়াশা ঘেরা দুপুর

দুপুর বারোটা বেজে গেল তখনও কুয়াশা ততটা কাটেনি। কিছুদিন থেকে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে তাই সূর্যের তাপটা ততটা গায়ে লাগছে না । বরিশাল যেতে ছয় ঘন্টা সময় লেগেছিল ।আমরা দুপুর ১;১৫ মিনিটে বরিশাল এসে পৌছাই। আমার পরীক্ষা ছিল দুপুর ২ঃ০০ টায় ।গাড়ি থেকে নেমে একটু ফ্রেশ হয়ে দুপুরে খাবার খেয়ে পরীক্ষার হলে চলে গেলাম ।

IMG_20250124_070953.jpg

এরই মাঝে আমরা অন্যান্য সহপাঠীরা চলে আসেন। পরীক্ষা মোটামুটি ভালোই হলো। বিকেল পাঁচটায় পরীক্ষা শেষ হল । আমি অসুস্থ ছিলাম তাই আর্মি বাবু বলেছিল আজ বাড়ি থেকে যাই । তাকে ঢাকার ফেরার টিকিট করার জন্য বলি । আমরা আজ ঢাকা চলে যাবো । কারণ একটি দিন বাড়িতে থেকে গেলে আবার ঢাকা আসতে আরো একটি দিন দেরি হবে । তাই আমরা দুজনে আবার সন্ধ্যা ছয়টার গাড়িতে টিকিট কেটে নিয়েছি।

কুয়াশা ঘেরা রাত:
IMG_20250124_212205.jpg

আমি জার্নি পথে ভাত একদমই খেতে পারি না আমি হালকা খাবার খেতে ভালোবাসি। আমি হালকা কিছু খাবার খেয়ে নিলাম আর চিনি ছাড়া সেই আমার প্রিয় লাল চা খেয়ে নিলাশ। পদ্মা সেতু হয়ে যাবার পরে আমাদের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের বেশ উপকার হয়েছে। আমরা যখন তখন যেখানে খুশি যেতে পারি খুব কম সময়ে। যেখানে ঢাকা থেকে বরিশাল আসতে পুরো একদিন লেগে যেত সেখানে আজ আমি একদিনের ভিতর ঢাকা থেকে বরিশালে এসে আবার ঢাকা চলে যেতে পারছি। সত্যি পদ্মা সেতু আমাদের অনেক উপকারে এসেছে এবং অনেক সময় বাঁচিয়ে দিয়েছে ।

IMG_20250124_181644.jpg

২০ মিনিট পানি পানের জন্য বিরতি দিয়েছিল ।আমিও নেমে ছিলাম। এখানের পরিবেশটা অনেক সুন্দর ছিল। রাতের বেলা চারপাশে খোলা মাঠ তার মাঝে এই সুন্দর লাইটিং করা রেস্তোরাঁ গুলো বেশ লাগে। বিভিন্ন দূরপাল্লার গাড়িগুলো এখানে এসে বিরতি নেয় এবং যাত্রীরা ও তাদের পছন্দের খাবার খেতে পারে ।ফ্রেশ হতে পারে। গাড়ি আবার নির্দিষ্ট সময়ের শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো ।রাত এগারোটা বেজে গেল আমাদের বাসায় আসতে । বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়েছি । আসার পথে কাচ্চি বিরিয়ানি ও ময়দার রুটি নিয়ে আসি।আর্মি বাবু কাচ্চি বিরিয়ানি খেল , আমিরুটি আর ডিম খেলাম।

IMG_20250124_202507.jpgIMG_20250124_201739.jpg

কিছুটা অসুস্থ শরীর নিয়ে ১৪ থেকে ১৫ ঘন্টা জার্নি করা আমার জন্য কঠিন ছিল ।তারপরও জীবনে কিছু পেতে হলে অবশ্যই তো কিছু কষ্ট করতেই হবে । কোন ছুটি নিতে হলো না। যেদিন গিয়ে সেদিনই পরীক্ষা দিয়ে আবার ঢাকা চলে আসলাম। এভাবে কেটে গেল আমার ২৪ তারিখের এই দিনটি ।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে ।আপনারা সকলে আমার জন্য দোয়া ও আর্শীবাদ করবেন আমি যেন একটি ভালো ফলাফল করতে পারি।


◦•●◉✿ শুভ রাত্রি✿◉●•◦

(

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার পোস্টে করে জানতে পারলাম আপনার গত দিন পরীক্ষা ছিল। এজন্য আপনি অনেক পথ জার্নি করে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। জার্নি করা সত্যি খুব কষ্টের একটি ব্যপার। তাও আবার বাস জার্নি। আশা করি আপনি যে পরীক্ষা দিতে গেছিলেন পরীক্ষা আপনার ভালো হয়েছে।

ভালো থাকবেন দিদি।

শুধু একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাইয়া।

আপনার ১৪-১৫ ঘন্টার যাত্রার অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ।কুয়াশা ঘেরা সকাল থেকে শুরু করে পদ্মা সেতুর সুবিধা এবং রাতের খাবারের অভিজ্ঞতা পর্যন্ত সবকিছুই খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনার দৃঢ়তা ও জীবনের প্রতিকূলতা মোকাবেলার ইচ্ছা সত্যিই প্রশংসনীয়। পরীক্ষা এবং দীর্ঘ যাত্রা শেষে আবার ঢাকায় ফিরে আসার সাহসিকতাও উজ্জ্বল। আমি আপনার জন্য দোয়া করি যেন আপনি আপনার পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারেন এবং ভবিষ্যতে সব কিছু সহজে ও সুন্দরভাবে পেতে পারেন।

আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।