আজ সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণ মিশনের কিছু মুহূর্ত

in hive-120823 •  2 months ago  (edited)

২৪ ডিসেম্বর সারা পৃথিবীতে এক স্মরণীয় দিন এই দিনেই ভগবান শ্রী যীশুখ্রীষ্টের আবির্ভাব হয়েছিল। তাই এই দিনটি ক্রিসমাস ঈদ নামে পরিচিত। জগৎ কল্যাণে এবং মানুষের মধ্যে মনুষত্ববোধ জাগরনের উদ্দেশ্যে ভগবানের আবির্ভাব হয়েছিল যীশু খ্রীষ্ট রূপে। তিনি এতই দয়াময় ছিলেন যে সকল জীবের প্রতি তার দয়া এবং তার পবিত্র জীবন যেন জগৎ কল্যাণে উৎসর্গ হয়েছিল।

IMG_20241224_190951.jpg

ভগবান শ্রী যিশুখ্রিস্টের এই জন্মতিথি আমাদের শ্রী রামকৃষ্ণ মিশনে এক বিশেষ ঐতিহাসিক দিনরূপে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে ডিসেম্বর এই দিনটিতেই স্বামীজি তার গুরু ভাইদের নিয়ে শ্রীমৎ স্বামী প্রেমানন্দ জি মহারাজ এর বাড়ি আটপুরে ধুনি প্রচলিত করে সন্ন্যাস ধর্ম পালনে ব্রতী নিয়েছিলেন।

IMG_20241224_190928.jpg

ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ জীবিতিবস্থায় তার শিষ্যদের গৈরিক বস্ত্র প্রদান করে গিয়েছিলেন। তিনি তার শিষ্যদের যে উদ্দেশ্যে সংঘবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন তার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল এই দিনটিতে। তাই আজও আঁটপুর শ্রী রামকৃষ্ণ মিশনে ধুনি উৎসব পালিত হয়। এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সকল শাখা গুলিতেও আজ ভগবান শ্রী যীশুখ্রীষ্টের উদ্দেশ্যে বিশেষ অনুষ্ঠান ও পূজার ব্যবস্থা হয়ে থাকে।

IMG_20241224_190943.jpg

আজ আমাদের কৃষ্ণনগর শ্রী রামকৃষ্ণ মিশনে ক্রিসমাস ইফ পালন হয়েছে। মা মারিয়া ও ভগবান শ্রী যীশুখ্রীষ্টের ছবি বসিয়ে তাতে মালা প্রদান করে এবং সুন্দর করে সাজিয়ে সন্ধ্যাবেলায় তার উদ্দেশ্যে বিশেষ পূজা হয়েছে।

শ্রী রামকৃষ্ণ মিশন এর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো যে তারা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে চলতে পারে। আমাদের এই মিশনে এমন অনেক ভক্ত আছেন যারা জাতিতে মুসলমান ও খ্রিস্টান কিন্তু তাদের কাছে রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ এক বিশেষ স্থান অধিকার করেছে তার মৌলিকতার জন্য।

IMG_20241223_103717.jpg

আজকের এই শুভ দিনে ভগবান শ্রী যিশুখ্রিস্টের কাছে সকলের মঙ্গল প্রার্থনা করি। সকলে ভালো থাকবেন। এবং একে অপরের কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে সমাজকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য একটু প্রয়াসই হলে আমাদের সমাজটা আরো সুন্দর হতে পারে এই ভাবনায় সবাই যদি ভাবিত হয় তবে খুব ভালো হয়। ভগবান শ্রী যিশুখ্রিস্টের জীবন দর্শন করলে আমরা তাই দেখি তিনি পরহীতায় নিজের জীবন অর্পণ করেছিলেন। ক্রুষবদ্ধ অবস্থায় ভীষণ যন্ত্রণার মধ্যেও তিনি ভগবানের নিকট প্রার্থনা করেছিলেন 'এরা অবোধ এদের তুমি ক্ষমা কর। এরা জানে না এরা কি করছে ।'তিনি কখনোই নিজেকে ভগবান রুপে প্রকাশ করেননি তিনি ভগবানের একজন সন্তান রূপে নিজেকে সকলের কাছে প্রকাশ করেছিলেন এবং ভগবানের নিকট সকলের মঙ্গল প্রার্থনায় তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল।

তার জীবন দর্শন করে আমাদের জীবনও সেই আদর্শে যদি গঠিত হয় তবে আমাদের জীবন আরো সুন্দর হয়ে যেতে পারে। দোষ অন্যের দোষ ত্রুটি গুলিকে যদি আমরা ক্ষমা মার্জনা করতে পারি তাহলে আমাদের নিজেদের মনের মধ্যেও কোন ক্ষোভ বা বিদ্বেষ তৈরি হবে না। আপনাদের কি মনে হয় এ বিষয়ে একটু বলবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

যীশুখ্রিস্টের জীবন এবং তার শিক্ষা মানব জাতির জন্য এক চিরন্তন পথপ্রদর্শক। তাঁর দয়া, ক্ষমাশীলতা এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আমাদের জীবনে অনুসরণ করার মতো এক অমূল্য শিক্ষা। যদি আমরা একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ দূর করে সহযোগিতার হাত বাড়াই, তাহলে আমাদের সমাজ আরও সুন্দর এবং সুখী হতে পারে। শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা রইলো।