স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট

in hive-120823 •  11 days ago  (edited)

রাত্রি যত অন্ধকার হয় জানতে হবে ভোরের আলো ততই কাছে। তেমনি জীবনের সংঘর্ষ যতই কঠিন হোক জানতে হবে সাফল্য তাও ততই কাছে। এ কথাটি আমরা ছোট থেকেই সকলের কাছে শুনে এসেছি কিন্তু আজ এ কথাটি ধীরে ধীরে মানুষের কাছে আর বিশ্বাসযোগ্য থাকছে না। ঘরে ঘরে বেকারত্বের জ্বালায় তরুণ তরুণিরা আজ দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। প্রতিমুহূর্তে তারা যেন এক অজানা অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। দিশাহারা হয়ে পথের সন্ধানে হাতরে বেড়াচ্ছে তাদের সফলতা কিন্তু কোথা থেকে আসবে সেই সফলতা? এই প্রশ্ন সকলের কাছে।

IMG_20241108_195554.jpg

শৈশব থেকেই শিশু মনের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ আনার জন্য তাদের মনে জাগানো হয় নানান স্বপ্ন। কেউ শিক্ষক কেউ ডাক্তার কেউ নার্স কেউ বা ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে শৈশব থেকে কৈশরে পা দেয়। কিন্তু যখন কৈশরে গিয়ে তার সে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় তখন সে ভোগে হতাশায়। দিন যায় রাত যায় কোন সুযোগই পায়না তার যোগ্যতা যাচাই করার। সাথে আছে প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনের অবজ্ঞা, সকলের মুখে একই প্রশ্ন। তোর কেন হলো না এখনো, সবাই তো পাচ্ছে। এ প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দেবে সে ভেবে পাই না।

IMG_20241108_195525.jpg

তাই আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নেয় সমাজের থেকেও ডুবে যায় এক হতাশার অন্ধকারে। ধীরে ধীরে পথ খোঁজাও বন্ধ করে দেয়। নিজেকে সঁপে দেয় ভবিতব্যের হাতে। কারণ ভবিতব্যের হাতে নিজেকে সঁপে না দিয়ে আর কিছু করার নেই তার। আমি যোগ্য আমি যোগ্য এ বলে কতবার কত আর চিৎকার করবে সে ।স্তব্ধ হয়ে গেছে তার মুখের বাণী ।সহস্র তরুণ তরুণী আজ তাই হতাশার অন্ধকারে ডুবে যায়। কবে উঠবে নতুন সূর্য কবে ফুটবে তাদের মুখে হাসি কবে তারা যোগ্যতার প্রমাণ দেবে এ হাজারো প্রশ্ন নিয়ে আজও তাদের বালিশ ভেজে চোখের জলে ,সে খোঁজ রাখে না কেউ।

সুযোগ শুধু একটু সুযোগ দিক না তাদের কেউ। দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর যায় সে সুযোগ একটি বারো না তারা পায়। তবে এ হেন অবস্থায় কি করবে তারা? কি করা উচিত তাদের? আরো কি পথ চেয়ে বসে থাকবে নাকি কোন এক অন্ধকার অতল অমানিশাই ডুবিয়ে দেবে নিজের জীবনকে।

কি হবে তাদের ভবিষ্যতে। কোন জীবিকা করবে তারা গ্রহণ। তবে কি আজ তাদের হত্যা করতে হবে নিজেদের তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্নকে। কাকে জানাবে তারা তাদের এই আর্তনাদ। তাদের চোখ দিয়ে ঝরা এই রক্তের বেদনা। কার কাছে করবে তারা নালিশ। কার কাছে চাইবে তারা জবাব। এ অবস্থার জন্য কে দায়ী। কে দেবে এর উত্তর?

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

ছোটবেলা থেকেই আমাদের প্রত্যকের মনে হাজারো স্বপ্নের বীজ বপন করা হয়। স্কুল জীবন থেকে প্রত্যের মানুষ আমাদের প্রশ্ন করে যে বড় হয়ে কি হতে চাও। তখন আমরাও আমাদের মন মতো একটা উওর দিয়ে দেই। কেউ বা বলল ডাক্তার আবার কেউ বলে শিক্ষক। তবে বাস্তবতা হয় ভিন্ন। এই প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় যখন বারবার অসফল হতে থাকি তখন সবার কাছ থেকে অবহেলিত হতে হয়। ঠিক বলেছেন, রাতের অন্ধকার দেখে ভয় পেলে চলবে না বরং ভাবতে হবে যে রাতের পরই দিনের আলো আসবে। তাই অসফল হওয়ার পর অবশ্যই সফলতা আসবে।

এটাই আমাদের সমাজ ব্যবস্থা যেখানে আমরা বড্ড অসহায়। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও বেকারত্বের কাতারে এখন। তাছাড়া দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের দেশের পরিস্থিতি এই ক্ষেত্রে আরো ভয়াবহ।

লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী বেকারত্বের শিকার। শৈশবের দেখা স্বপ্ন যেন বড় হওয়ার সাথে সাথেই বিলীন হতে শুরু করে। যেটা হাঁড়ে হাঁড়ে উপলব্ধি করছি। আমি নিজেও এই পর্যন্ত সতেরোটা ভাইভা তে অংশগ্রহণ করেছি তাহলে আমি কি কোনো চাকরির যোগ্য ছিলাম না? যদি যোগ্য না ই হতাম তাহলে এম সি কিউ এবং লিখিত পরীক্ষায় পাশ কিভাবে করলাম? নিজেকে প্রশ্ন করলেই যেখানে উত্তর পাই না সেখানে অন্য কেউ উত্তর দিতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।