নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজ আবার চলে এসেছি আপনাদের সাথে এই বছর সরস্বতী পুজোর কাটানো মুহূর্ত গুলোর দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
তাহলে আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলাম সেখান থেকেই আবার শুরু করা যাক। বিভিন্ন স্কুলগুলো পরিদর্শন করতে করতে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম কৃষ্ণনগর অ্যাংলো ভার্নাকুলার হাই স্কুলে। এই স্কুলটি কৃষ্ণনগরের অনেক পুরনো একটি স্কুল। বিপ্লবী বাঘাযতীন এই স্কুলেই পড়াশোনা করেছিলেন। এই স্কুলে এই বছরের এম ছিল বিভিন্ন ধরনের গাছ কে নিয়ে। অনেক অদ্ভুত অদ্ভুত গাছের কথা সেখানে লেখা ছিল। সেগুলো পড়ছিলাম। তারপর স্কুলের ঠাকুরটি দেখেছিলাম। এরপর যখন বেরিয়ে যাচ্ছি সেই মুহূর্তে সেখানে একটা কুল গাছ দেখতে পেয়েছিলাম। সত্যি কথা বলতে গেলে এই বছরে একটাও কুল খাওয়া হয়নি। তাই লোভ সামলাতে না পেরে গাছের নিচে পড়ে থাকা কয়েকটা কুল কুড়িয়ে নিয়েছিলাম। তারপর আবার চলে গেছিলাম পরবর্তী গন্তব্যস্থলে।
এরপর আমরা চলে গিয়েছিলাম কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে। কিন্তু সেই মুহূর্তে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের গেট বন্ধ থাকায় আমরা চলে গিয়েছিলাম কৃষ্ণনগর হাই স্কুলে। এই স্কুলের মন্ডপ সজ্জা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। আর এই ভালোলাগা জিনিসগুলোর মধ্যেও সব থেকে যেটা ভালো লেগেছে সেটা হল এই স্কুলের স্টুডেন্টরা নিজেদের হাতে মূর্তি তৈরি করেছিল। এগুলো এত অসাধারণ ছিল যে কেউ বিশ্বাসই করবে না যে সেগুলো এই স্কুলেরই স্টুডেন্টরা বানিয়েছে। এত নিখুঁতভাবে তারা মূর্তিগুলো তৈরি করেছিল যে সত্যিই সেগুলো প্রশংসনীয়।
এরপর একটুখানি চোখ সরাতেই পাশে দেখা যাবে একটা পিকচার গ্যালারি। সেখানে এই স্কুলের পড়ুয়ারা নিজেরাই এই ছবিগুলো এঁকেছিল। এক একটা ছবি সত্যিই অনবদ্য। এত সুন্দর ভাবে তারা এই দিনে স্কুলটাকে সাজিয়ে তোলে যে প্রশংসা করতেই হয়। ছোট থেকে বড় সকলেই এই পিকচার গ্যালারিতে নিজেদের হাতে আঁকা ছবি রাখার সুযোগ পায়।
এই স্কুলের মন্ডপ সজ্জা আমার অসাধারণ লেগেছিল। এখানে সরস্বতী মায়ের বিভিন্ন নাম একটি জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছিল। আর তাছাড়া এত সুন্দর সুন্দর শিল্পকলা এখানে দেখেছিলাম যে সত্যিই মনটা ভরে গিয়েছিল। তাই নিজেকে সামলাতে না পেরে বেশ কিছু ফটো সেখানে তুলে নিয়েছিলাম। তার মধ্যেই কয়েকটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
এরপর আমরা চলে গিয়েছিলাম কৃষ্ণনগরের গভর্মেন্ট কলেজে। প্রতিবছরই আমরা এই কলেজে যাই। তাই এই বছরও তার অন্যথা হয়নি। এই কলেজ টা বহু পুরনো একটি কলেজ। কলেজের স্ট্রাকচার এবং দরজা জানালার আকৃতি দেখলেই বোঝা যাবে যে কি কলেজটি কত বছরের পুরনো একটি কলেজ, যা এখনো তার স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমরা যখন সেখানে পৌঁছেছিলাম তখন পুজো শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আমরা পূজোও দেখছিলাম।
তারপর আমরা কলেজের বারান্দায় বেশ কিছু ফটো তুলেছিলাম। ফটোগুলো আমার বেশ ভালো লেগেছিল। ঘুরতে বেরোবো আর ফটো তুলবো না সে তো হয় না আর আমার পার্টনার বুঝে গেছে যে ফটো তোলার ক্ষেত্রে না একেবারেই বলা যাবে না তাহলেই লঙ্কা কান্ড বেঁধে যেতে পারে। তাই ফটো তোলার বিষয়ে বিশেষ বিরক্ত প্রকাশ করে না।
এরই মাঝে কিন্তু আমাদের খাওয়া দাওয়া চলে ছিল। তবে সেইসবের ফটো আর তোলা হয়নি। তার উপরে বেশ অনেক জায়গায় প্রসাদও খেয়েছিলাম। বন্ধুবান্ধবদের সাথে বেরোতে পারিনি তার দুঃখ থাকলেও শেষমেশ চেয়ে ঘুরতে যাওয়া হয়েছিল তাতেই আমি খুব আনন্দ পেয়েছিলাম।
এইভাবে আমরা এই বছর আমাদের সরস্বতী পুজোর দিনটি উপভোগ করেছিলাম। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আপনার সরস্বতী পূজার অভিজ্ঞতা পড়ে সত্যিই ভালো লাগলো। কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে যে পরিমাণ সৃজনশীলতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দেখা যায় তা আপনার লেখায় সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি মূর্তি ও চিত্র প্রদর্শনীর বর্ণনা অসাধারণ ছিল। উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার এই প্রচেষ্টার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit