এই বছরের পিঠে - পুলি

in hive-120823 •  6 hours ago 

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজ আবার চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন কিছু গল্প শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।

শীতকাল মানেই বাজারে নতুন নতুন সবজির আগমন আর তার সাথে বাজারে চলে আসে নলেন গুড় বা খেজুরের গুড়। আখের গুড়ের চেয়ে খেজুরের গুড় আমার বেশি ভালো লাগে। সারা বছর যেহেতু খেজুরের গুড় পাওয়া যায় না তাই সারা বছর নলেন গুড় পাওয়ার জন্য শীতকালের অপেক্ষা করতেই হয়। যদিও অনেক পোস্টেই আমি জানিয়েছিলাম যে আমার শীতকাল একদমই পছন্দ নয় তবুও শীতকালে যে সকল খাবার পাওয়া যায় তা আবার গরমকালে পাওয়া যায় না তাই খাবার দাবারের দিক থেকে কিন্তু শীতকালকে হেয় করা যায় না।

বাজারে নলেন গুড় ওঠার পরপরই বাড়িতে বাড়িতে পিঠের আয়োজন শুরু হয়ে যায়। পিঠে তৈরি করা সময় সাপেক্ষ এবং পরিশ্রমসাধ্য হলেও মানুষ কিন্তু নিজের বাড়িতে মহা সমারোহে পিঠে পুলি তৈরি করে থাকে নিজেদের প্রিয়জনদের জন্য। আর একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করলে তার স্বাদ আরো দ্বিগুন বেড়ে যায়। প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও আমাদের বাড়িতে অনেক ধরনের পিঠে তৈরি হয়েছিল। আজ আপনাদের সাথে তারই কিছু ছবি শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

আমি আগেও জানিয়েছিলাম যে আমার মা কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকে। তাই প্রতিবছর এই সময় বাড়িতে ফিরতে পারেনা। যার ফলে পিঠে তৈরীর সমস্ত দায়িত্বই এসে পড়ে বৌদির উপর। আমিও পড়ানোর জন্য বাড়ির বাইরে থাকি তাই বৌদিকে সেই ভাবে সাহায্য করতে পারি না। তবে বৌদি খুব সুন্দর ভাবে ব্যাপারটাকে সামনে নেয়। সমস্ত আয়োজন নিজের হাতে খুব সুন্দর ভাবে করে। সাহায্য করতে পারি না বলে একটু খারাপ লাগে বটে তবে সত্যি বলতে আমার সময় হয়ে ওঠে না বাড়ির রান্নার কাজে সাহায্য করার মতো।

তবে সৌভাগ্যবশত এই বছর আমার মা পৌষ পার্বণের আগেই বাড়ি চলে এসেছিল। তাই এই বছরের পৌষ পার্বণটা আমাদের কাছে একটু স্পেশাল। মা যে খুব ভালো পিঠে তৈরি করতে পারে তা নয় তবে বৌদিকে যথাসাধ্য সাহায্য করে সব কাজে। যার ফলে বৌদিরও চাপ একটু কমে। আর বৌদি নিজে খুব ভালো রান্না করতে পারে। পিঠেও খুব ভালো বানায়। এই বছর আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন রকমের পিঠে তৈরি হয়েছিল যেমন--- চুষি পিঠে, পাটিসাপটা, ভাপা পুলি, তেলে ভাজা পিঠ ইত্যাদি।

1000142452.jpg

নানারকম পিঠের সম্ভার

প্রথমেই আপনাদের সাথে শেয়ার করি চুষি পিঠের ছবি। পুলি পিঠে টা খেতে দারুণ হয়েছিল। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। পিঠের মধ্যে আমার এই পিঠেটা খুব প্রিয়। তবে এই পিঠেটা তৈরি করতে বেশ অনেকটাই সময় লাগে সাথে পরিশ্রমে লাগে। প্রথমে চালের গুড়ো গরম জল দিয়ে মেখে ছোট ছোট করে চুষি তৈরি করে নিতে হয়। তারপর দুধ ,চালের গুঁড়ো, খেজুরের গুড়, এলাচ ইত্যাদি সহযোগে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হয়। পরে অন্য একটি ভিডিওতে ফুল ডিটেইলস আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

1000142460.jpg

চুষি পিঠে

এরপরে চলে আসি পাটিসাপটা র ছবি নিয়ে। পাটিসাপটা খেতেও আমার খুব ভালো লাগে। অনেকেই পাটিসাপটার মধ্যে নারকেলের পুর দেয় আবার অনেকে দেয় সন্দেশের পুর। ব্যক্তিগতভাবে আমার সন্দেশের পুর দেওয়া পাটিসাপটা খেতে বেশি ভালো লাগে। তবে এই দিন বাড়িতে দুই প্রকার পাটিসাপটাই তৈরি করা হয়েছিল। আমি যেহেতু বাড়িতে ছিলাম না তাই কোন পিঠের ই ডিটেলস ছবি তোলা হয়নি। অন্য কোনো দিন বাড়িতে আবার তৈরি করা হলে আমি অবশ্যই আপনাদের সাথে সম্পূর্ণ বিস্তারিত process শেয়ার করব ।

1000142456.jpg

পাটিসাপটা

এরপরে আপনাদের দেখাবো তেলেভাজা পিঠের ছবি। যদিও সেই দিন তেলেভাজা পিঠাগুলো দেখতে খুব একটা ভালো হয়নি তবে সত্যি কথা বলছি খেতে কিন্তু অসাধারণ হয়েছিল। যদিও আমরা রূপ দেখেই বেশিরভাগ বিষয় বিচার করি তবে মাঝে মাঝে গুণটাও দেখা উচিত।

1000142458.jpg

তেলে ভাজা পিঠে

এরপর চলে আসি ভাপা পুলি পিঠের গল্প নিয়ে। যদিও আমার এই ভাপা পুলি খুব একটা ভালো লাগে না তবে খেতে যে খারাপ হয় তা কিন্তু নয়। সবারই তো পছন্দ অপছন্দ রয়েছে। তাই এই পিঠেটা খেতে ভালো হওয়া সত্বেও আমি বাকি পিঠেগুলো তুলনায় এই পিঠাটাকে কম ভালোবাসি।

1000142454.jpg

ভাপা পুলি পিঠে

পিঠের গল্প অনেক হলো। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোন গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!