নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই খুব ভালো আছেন। আজ আবারো চলে এসেছি আপনাদের সঙ্গে নতুন কিছু শেয়ার করে দেওয়ার জন্য। আজ অনেকদিন পর আবার আপনাদের সাথে একটি মজাদার রেসিপি শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের সকলের খুব ভালো লাগবে।
কথাতেই আছে, "মাছে ভাতে বাঙালি।" বাঙালি মানুষ আর মাছ ভালোবাসবো না তা তো হয় না। আমি মাছ খেতে ভীষণ ভালোবাসি। মাংসের থেকেও আমি মাছের বেশি ভক্ত। দুপুরবেলায় আর যাই রান্না হোক না কেন আমি শুধু মাছেরই খোঁজ করি। তাই বলে প্রত্যেকদিন যে বাড়িতে মাছ রান্না হয় তা নয়। তবে মাছ হলে দুপুরের খাবারটা বেশ জমে যায়। আমি মোটামুটি সব ধরনের মাছই খেতে ভালবাসি, শুধু ভালো করে রান্না করলেই হবে। তবে সব রকমের মাছ কিন্তু আমাদের বাড়িতে রান্না হয় না কারণ আমার বৌদি আবার সব ধরনের মাছ খায় না। তবে সকলের জন্য আলাদা আলাদা মেনু রান্না করা সম্ভব নয় ,তাই বৌদি যে মাছগুলো খাই না সেই মাছগুলো আমাদের বাড়িতে রান্না হয় না। আমাদের বাড়িতে রুই কাতলা মাছটাই বেশি চলে। আমার ভাইপোও মাছ খেতে বেশ ভালোবাসে। আমাদের বাজারটা যেহেতু বেশ খানিকটা দূরে তাই দাদা সপ্তাহে একবার করে বাজারে যায় এবং সারা সপ্তাহের বাজার করে আনে। সবজির পাশাপাশি দাদা দুই তিন রকমের মাছও একবারে কিনে আনে। বড় মাছ বাজার থেকে কেটে দিলেও ছোট মাছ কেটে দেয় না তাই ছোট মাছ নিয়ে এলে সেই মাছ কাটার দায়িত্ব এসে পড়ে আমার ওপরে। মাছ কাটতে আমার বেশ ভালোই লাগে। মাছ কেটে নিয়ে আলাদা আলাদা বাটিতে ভাগ করে সেগুলো রেখে দিই ডিপ ফ্রিজে। তারপর যেদিন যে মাছ রান্না করতে ইচ্ছে হয় সেটা বের করে নিই।
বিভিন্ন রকম মাছের তালিকায় চিংড়ি মাছ কিন্তু আমাদের সকলেরই খুব পছন্দের একটি মাছ। আমার নিজেরও চিংড়ি মাছ খেতে খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে পটল চিংড়ি, এঁচোড় চিংড়ি, চিংড়ি ভাঁপা ----এই রেসিপিগুলো আবার দারুন লাগে। আজ আপনাদের সাথে চিংড়ি মাছেরই একটি রেসিপি শেয়ার করতে চলেছি। বেশ কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম আপনাদের সাথে এই রেসিপিটি শেয়ার করব তবে চিংড়ি মাছ বাড়িতে না থাকায় আর শেয়ার করে ওঠা হয়নি। তবে গতকাল দাদা বাজারে গিয়েছিল এবং বেশ কয়েকটি চিংড়ি মাছ কিনে এনেছিল। তাই ভাবলাম আজ আপনাদের সাথে এই রেসিপিটা শেয়ার করা যাক।
তাহলে চলুন জেনে নিই কিভাবে এই সুস্বাদু রেসিপিটি আমি তৈরি করেছিলাম।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ | |
---|---|---|---|
১ | মাঝারি সাইজের চিংড়ি মাছ | ৫০০গ্রাম | |
২ | নুন | পরিমাণ মতো | |
৩ | হলুদ | পরিমাণ মতো | |
৪ | কাঁচা লঙ্কা | স্বাদ অনুযায়ী | |
৫ | সর্ষের তেল | ১০০গ্রাম | |
৬ | পোস্ত | পরিমাণ মতো | |
৭ | জল | পরিমান মতো | |
৮ | লঙ্কার গুঁড়ো | পরিমাণ মতো | |
৯ | নারকেল | পরিমাণ মতো | |
১০ | সর্ষে | সামান্য |
ধাপ ১ :
প্রথমে চিংড়ি মাছ গুলোকে ভালোভাবে কেটে- ধুয়ে তুলে রেখেছিলাম।
ধাপ ২ :
অন্যদিকে নারকেলটিকে কুচি কুচি করে কেটে নিয়েছিলাম। এরপর মিক্সারে কাঁচালঙ্ক, সরষে, পোস্ত, সামান্য হলুদ, লবণ, লঙ্কার গুঁড়ো ও কুচি করে রাখা নারকেল গুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং একটা পেস্ট তৈরি করে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৩ :
এরপর যে পাত্রে রান্না করতে হবে সেই পাত্রের মধ্যে চিংড়ি মাছগুলোকে দিয়ে দিয়েছিলাম এবং এরপর ওই পেস্টটি মাছের মধ্যে দিয়ে দিয়েছিলাম ।
ধাপ ৪:
এরপর পরিমাণ মতো সর্ষের তেল তার মধ্যে দিয়ে দিয়েছিলাম। এই রান্নাতে সরষের তেল একটু বেশি পরিমাণেই ব্যবহার করা হয়। এতে খাবারের টেস্ট আরও দ্বিগুন বেড়ে যায়। এরপর তার মধ্যে আরো কিছুটা লঙ্কার গুঁড়ো এবং হলুদ দিয়ে ভালোভাবে মাছের সাথে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৫:
এরপর তার মধ্যে পরিমাণ মতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এবং ভালোভাবে মিশিয়ে দিয়েছিলাম। এই রান্নায় বেশি জলের প্রয়োজন হয় না। আমি কাঁচের বাটির এক বাটি জল দিয়েছিলাম।
ধাপ ৬:
এরপর পাত্রটি ওভেনে বসিয়ে দিতে হবে। তারপর ঢাকা দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে।
ধাপ ৭:
এরপর সাত থেকে দশ মিনিট ফুটিয়ে জলটাকে শুকিয়ে আনতে হবে। মাঝে দু একবার ঢাকনা সরিয়ে নাড়িয়ে দিতে হবে, নইলে কড়াইয়ে লেগে যেতে পারে ।
ধাপ ৮:
মাছ সিদ্ধ হলে সবশেষে কাঁচা লঙ্কা এবং সামান্য সরষের তেল উপরে দিয়ে ঢেকে রেখে দিতে হবে। ।
ধাপ ৯:
তাহলে রেডি আমাদের আজকের রেসিপি নারকেল চিংড়ি।
ফাইনাল লুক-----
তাহলে আজকে আমার পোস্টটি আমি এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। আপনারা সকলে ভালো থাকবেন আর অবশ্যই জানাবেন আমার এই রেসিপিটি আপনাদের কেমন লাগলো।
বাপরে করেছেন কি?
এমন সুন্দর রেসিপি যেদিন রান্না করবেন সেদিন কিছুতেই শেয়ার করবেন না। দু তিন দিন বাদে শেয়ার করবেন। না হলে কিন্তু আপনারা যারা খাবেন সকলের পেট ব্যথা হতে বাধ্য।
এর আগেও অবশ্যই কথাটি বলেছি আপনি শুনেছেন কিনা জানিনা, আমি কোনো মাছ খেতে পছন্দ করি না। কিন্তু চিংড়ি এবং ইলিশ মাছ দুটিকে আমি মাছের মধ্যে ফেলি না। এই দুটি অন্য জিনিস। ওই যে কোথায় আছে না এ স্বাদের ভাগ হবে না। কথাটি এই দুটি মাছের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
চিংড়ি মাছ আমার ভীষণ প্রিয়। আর সেটা যদি মালাইকারি বা নারকেল দিয়ে হয় তাহলে তো কোনো কথাই নেই।
আপনার পোস্টের প্রথম ছবিটি দেখেই চোখের সামনে গরম ধোঁয়া ওঠা ভাত আর এই চিংড়ি মাছের কয়েকপিস সেই ভাতের পাশে। উফ্ ছবিটি কল্পনা করেই বেশ কয়েকবার ঢোক গেলার পর আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে তবেই মন্তব্য করতে এলাম।
খুব সুন্দরভাবে গুছিয়ে উপকরণ সহ প্রতিটি ধাপ উপস্থাপন করেছেন। যেটা দেখে অনায়াসেই নতুন কেউ রান্নাটি সহজে করে ফেলতে পারবে। আমাদের বাড়িতেও একই প্রসেসে নারকেল চিংড়ি রান্না হয়ে থাকে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit