রাস্তার উন্নয়ন কাজ যেটা দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল কিন্তু এটা যে সমাপ্ত হবে সেইরকম কোনো কাজের গতিই ছিল না। হয়তো রাস্তার ঠিক এই জায়গাতে আমার কদাচিৎ যাতায়াত। বরং মাঝেমধ্যেই শখ করে ছবি তুলতে যাওয়া হয় কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে এই রাস্তাটা আমাদের দক্ষিনাঞ্চলের সেতুবন্ধনের সড়ক ও বলা যায়।
এই পথেই নদীর জন্য বিচ্ছিন্ন থাকা গ্রামের লোকজন এই সড়ক দিয়ে স্বল্প সময়ে যাতায়াতের সুবিধার্থে বেশিরভাগ সময় যাওয়া আসা করে। তাছাড়া, আমাদের বিভাগীয় শহর খুলনা এবং বড় বাজারের নাম ফয়লা বাজার যেখানে যাওয়ার জন্য এই সড়কটাই উত্তম।
পাশেই উল্টো দিকে পুরোনো সড়ক কিন্তু সেটা এখনো গাড়ি চলাচল উপযোগী। অথচ সাথে থাকা সড়কের অবস্থা খুব খারাপ। সত্যি বলতে রাস্তা সংস্কার দেখেই মনে হয় সেটা উন্নয়ন কিন্তু আদেও কি তাই? প্রথম বার সড়ক করার সময় যদি সঠিক সামগ্রী ব্যবহার করা হয় তাহলে এতো দ্রুত নষ্ট হয় না।
টলিতে করে বালি এনে রাখা হয়েছে। তবে সড়কটা দেখেই মনে মনে হাঁসি পাচ্ছিল। কারণ প্রথমবার যখন মোংলার বৈদ্যমারী গিয়েছিলাম চালের গুদাম পরিদর্শন করতে সেই স্মরণীয় সড়ক আমি ২য়টি দেখিনি। যেহেতু, বড়'দির সাথে গিয়েছিলাম তাই বড়'দির অফিস থেকে মোটামুটি ভালোই খাবার খেয়েছিলাম।
তবে সড়কের এই অবস্থা জানা থাকলে আমি কিছু খেতামই না। দেড় ঘণ্টার সড়ক অতিক্রম করতে প্রায় তিন ঘন্টা সময় অতিবাহিত হয়েছিল। সড়কের অবস্থা দেখে মনেই হচ্ছিল না যে এখানে পূর্বে পিচ ঢালাই করা সড়ক ছিল। তবে জনসংখ্যাধিক্য থাকা সত্ত্বেও তেমন কোনো উদ্যোগ ছিল না কারো মাঝে।
এবড়োখেবড়ো ইঁটের খন্ড এদিকে ওদিকে, ইজিবাইক যেন নৃত্য করছিল। আবার কখনো কখনো ধপাস করে গর্তে পড়ছিল। যদি কারো শারীরিক ব্যায়াম করতে কষ্ট হয় তাহলে এই সড়টা দিয়ে যাতায়াত করলে আপনা-আপনি ব্যায়ামের কাজটি হয়ে যাবে। বাংলাদেশের ২য় চালের গুদোম কিন্তু সড়কের কি একটা অবস্থা?
সেই হিসেবে আমাদের সড়ক অনেকটাই উন্নত। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আমরাও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একটা স্থানে বসবাস করছি। কারণ একটি কালভার্ট এবং অপরদিকের অন্য একটি ব্রিজ ভাঙ্গা সেই কারণে কোনো গাড়িতে একক ভাবে গন্তব্য স্থানে বর্তমানে একদমই সম্ভব না।
আপনার দেখবেন একটা পাকা ভবন নির্মাণের সময় বলা হয়ে থাকে এটা একশত বছরের মতো মোটামুটি বসবাস উপযোগী থাকবে। এটা সড়কের ক্ষেত্রে ও প্রযোজ্য। কিন্তু সড়ক তো চলাচল উপযোগী হতেই স্বল্পতা সময় পরেই নষ্ট হতে শুরু করে। এটার বিভিন্ন কারণ ও আছে:-
সড়ক যখন তৈরি করা হয় তখন একটা নির্দিষ্ট বাজেট থাকে। কিন্তু সড়কের কাজ শেষ হতে হতেই দেখা যায় বাজেটের অর্ধেক টাকা ও মনে হয় ব্যয় হয়নি। এখানে অন্যদের থেকে আমাদের দোষটাই বেশি কারণ আমাদের মধ্যে সেবামূলক কাজের চিন্তাধারাই যেন দিন দিন লোপ পাচ্ছে।
আমাদের স্থানীয় দক্ষিণ পাড়ায় একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছিল এবং দিনে কাজ না করে রাতে করা হচ্ছিল। এক সচেতন ব্যক্তি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন এবং কিছুটা নেতিবাচক মনে হলে কয়েকজনকে সাথে করে ঐ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। যখন বিষয়টি তাঁরা উপলব্ধি করতে পারে তখন বাঁধা সৃষ্টি করে।
এমনকি অর্ধ সমাপ্ত কাজ আবারো নতুন করে শুরু করতে হয়েছিল। এরাই সচেতন মানুষের দলভুক্ত। কারণ সরকারি বাজেট দেশের জনহিতৈষী কাজেই করা হয়। এরা কাজ শেষ করেই বিদায় কিন্তু আমাদেরকে সেটা ভালো এবং খারাপ দিক ভোগ করতে হবে। তাই আমাদের নিজেদের ও কিছু দায়িত্ব থেকে যায়।
আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।