প্রিয় বন্ধুরা,
কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি আজকের দিনটি আপনাদের সকলের ভালোভাবেই অতিবাহিত হয়েছে।
আজকে এখানে নিয়ে এসেছি কাজিরঙ্গা জঙ্গলের কিছু ছবি নিয়ে, সব ছবি আজকের লেখায় নেই সময় সময় ভাগ করে নেবো আপনাদের সাথে নিজের আসামে কাটানো দিনের অভিজ্ঞতা।
আজকের ছবিতে আপনারা আমার সহযাত্রীদের ছবি দেখতে পাচ্ছেন এবং কিছু ছবিতে আমিও রয়েছি।
এখানে হাতির বেশ কিছু ছবি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছি।
ছোটোবেলায় বাবার হাত ধরে সার্কাস দেখতে গেছি বহুবার, তখন বেশ উপভোগ করতাম বিভিন্ন জন্তুকে দিয়ে নানা খেলা দেখতে। যত বড় হতে থাকলাম বুঝতে শিখলাম সেই জন্তুদের অব্যক্ত ব্যথা।
খাঁচায় বন্দী করে চাবুকের সাহায্যে তাকে বাধ্য করে মানুষের মনোরঞ্জন কখনোই প্রশংসনীয় বিষয় হতে পারে না।
কারণ আমাদের মত অনুভূতি, কষ্ট তাদেরও আছে পার্থক্য শুধু এইটুকুই যে তারা আমাদের মত ভাষায় সেগুলো ব্যক্ত করতে পারে না।
কাজেই সেই ছেলেবেলার মনোরঞ্জন ধীরে ধীরে মন খারাপের কারণ হতে থাকলো, বুঝলাম কাউকে কষ্ট দিয়ে নিজে আনন্দ উপভোগ করাটা কখনোই মানবিকতার পরিচয় হতে পারে না।
তারপর বড়ো হবার সাথে সাথে সার্কাস হারিয়ে গেলো, একপ্রকার খুশি হলাম, কিন্তু পরে দেখলাম সেই সার্কাস বদ্ধ পরিসর থেকে খোলা প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।
এখন সকারের অনুমতিতেই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত সার্কাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, বন্য পশুদের বাহন করে তাদেরকে মূল আকর্ষণের বিষয় করে তোলা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
ইচ্ছে হোক বা নাই হোক বুদ্ধিজীবী মানুষের কাছে এইসকল বুদ্ধি ধারণ করা পশুরাও কাবু হয়ে বাধ্য হয়েছে।
বিজ্ঞান মতে হাতির স্মৃতি শক্তি সবচাইতে প্রখর, কখনো কখনো মনে হয়, এরা নিশ্চই সকল মানুষদের মনে রেখেছে, যারা এদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে নিজেদের মনোরঞ্জন এবং ব্যবসার সাধন বানিয়ে রেখেছে।
আজকের উন্নত সমাজেও এরা পরাধীন, কারণ তারা আমাদের মত নিজের ব্যথা ভাষায় প্রকাশ করতে পড়ে না।
আমার কথায় বুঝতেই পারছেন যদিও এদের দেখার সুযোগ বহুবার হয়েছে কিন্তু এদেরকে আমি স্বাধীন ভাবে থাকতে দেখতেই বেশি পছন্দ করি।
তাদের জায়গাতে নিজের বসিয়ে দেখলেই আমার কথার প্রকৃত মনে আপনারা খুঁজে পেয়ে যাবেন। চিড়িয়াখানা এখনও আছে আমি নিজেও বহুবার গেছি সেখানে কিন্তু মনে মনে তাদের কাছে জানতে চেয়েছি কেমন কাজে তারা, আর বলেছি আমি তাদের সাহায্য করতে না পারার জন্য দুঃখিত এবং লজ্জিত।
কাজেই মনুষ্যত্বহীন মানুষের দলে নিজেকে সামিল ভেবে আজকে ক্ষমা চেয়েছিলাম এই প্রাণীর কাছেও।
আপনারা কি মনে করেন সমাজে পশুদের নিয়ে এই খেলাকে আপনারা কি সমর্থন করেন?
অবশ্যই জানবেন নিজেদের মূল্যবান মতামতের মাধম্যে। আজ এখানেই লেখায় ইতি টেনে বিদায় নিলাম।
ভালো থাকবেন সবাই এবং ভালো রাখবেন প্রাণীজগতের সহ পশু জগৎকেও।