প্রিয় বন্ধুরা,
দ্বিপ্রহরের শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়ে আজকের লেখা শুরু করছি, এখন ঘড়িতে দুপুর ৩টে বেজে ১২মিনিট যখন আমি আমার লেখা শুরু করেছি।
জানিনা কতখানি লেখার সময় পাবো, কারণ এক ডাক্তারের চেম্বার এর বাইরে দাঁড়িয়ে আছি, ডাক্তার এখন রোগী দেখছেন; আমার ডাক পড়লেই লেখা ছেড়ে দৌড়তে হবে।
আরে না না, আমি রোগী নোই! আমি একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজেই ওষুধ এবং ডাক্তার নিয়েই আমার সারাজীবন কেটে যাচ্ছে কাজের ক্ষেত্রে।
আচ্ছা আপনারা কখনো প্রতিবেশীর একের অন্যের প্রতি ব্যবহারের তারতম্য দেখেছেন? আমি কিন্তু প্রায়শই দেখেছি এবং এখনও দেখি।
এই তারতম্য চোখে পড়ে কোনো ব্যক্তির অর্থনৈতিক অবস্থানের উপরে।
ধরুন আপনার আশেপাশে অনেক প্রতিবেশীর মধ্যে একাংশ ধনী, একাংশ মধ্যবিত্ত আবার একাংশ দরিদ্র।
তাহলে দেখবেন এই মধ্যবিত্তরা চেষ্টা করেন ধনীদের সাথে মেশার এবং তাদের সাথে ভাব জমানোর। এমনকি সমাজের প্রতিটি মানুষ এই ধনীদের সমীহ করে চলেন।
দরিদ্রের কথা এই কারণে বললাম না, কারণ সারাদিনের পরিশ্রম করবার পরে তাদের আর অন্যদিকে তাকাবার সময় হয় না।
হয়তো খুঁজলে দেখা যাবে, সেই দরিদ্রের ঘরে হয়তো অর্থের অভাব কিন্তু প্রকৃত শিক্ষার আলো তার ঘর ধনীদের থেকেও বেশি আলোকিত করে রেখেছে।
কিন্তু সমাজ প্রকৃত শিক্ষা, সভ্যতা, ভদ্রতার চাইতেও আর্থিক দিক থেকে উন্নত মানুষের সংস্পর্শে থাকতে বেশি পছন্দ করে।
আচ্ছা ডাক পরে গেছে বাকি কথা আবার সময় করে লিখছি।
যাক এতক্ষণে সময় হলো, বাড়ি ফিরেছি সন্ধ্যে ৬:৪০ মিনিটে।
তারপর ফ্রেশ হয়ে জমিয়ে বিকেলের চা খেয়ে আবার বাকিটা লিখতে বসলাম।
দেখা যায় ধনী ব্যক্তি নিজের সমকক্ষ অথবা নিজের চাইতে অধিক ধনী ব্যক্তিদের সাথে মিশতে ইচ্ছুক, এবং যেসকল মধ্যবিত্ত তাদের পিছনে পড়ে কাজে ভাব জমানোর জন্য, তারা বিশেষ পাত্তা পাচ্ছেন না।
এখানে আমার আপত্তি, কারণ আমার পাড়াতেই এই বিষয়গুলো আমি সচক্ষে দেখেছি, কথায় আছে কারোর জন্য কিছু করে ফলাও করে বলতে নেই, কারণ তাহলে সেই করার কোনো মূল্য থাকে না।
আজকের কথাগুলো বলছি লেখার প্রসঙ্গ টেনে, আমি যেহেতু ওষুধের সাথে যুক্ত, এবং সেই বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেছি; তাই অনেক সময় আমার সেই দরিদ্র মানুষকে চেষ্টা করেছি বিনামূল্যে ওষুধ দিয়ে একটু সহায়তা করবার।
আমার মনে হয় জীবনে যে জিনিসগুলো পরিবর্তনশীল সেগুলো নিয়ে বিশেষ অহঙ্কার না করায় শ্রেয়।
তারমধ্যে আছে অর্থ, সম্পদ, সৌন্দর্য্য, বয়েস বা সময়, জীবন ইত্যাদি ইত্যাদি।
যেকোনো সময়, উপরিউক্ত জিনিসগুলো হাতছাড়া হবার সম্ভবনা আছে, কাজেই অহঙ্কার নয়, গর্বিত বোধ করুন যদি কখনো কাউকে নিঃস্বার্থ সাহায্য করবার সুযোগ পেয়ে থাকেন, গর্বিত বোধ করুন যদি নিজের কষ্টের দ্বারা উপার্জিত অর্থ কারোর জীবন বাঁচাতে বা পেট ভরাতে কাজে আসে;
গর্বিত বোধ করুন যদি আপনার অর্জিত শিক্ষা দিয়ে কাউকে শিক্ষিত করবার সুযোগ পান।
এছাড়া কামনা করুন পরমেশ্বরের কাছে যেনো আপনি সবসময় অন্যের সাহায্যে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারেন নিস্বার্থ ভাবে সেই ক্ষমতা তিনি আমাদের দেন।
আমার তো মনে হয় মাঝে মাঝে শিক্ষা নিয়েই অহঙ্কার করা উচিত নয়, কিছুদিন আগেই এক ডাক্তার আত্মহত্যা করেছেন, এটা কোনো গল্পো নয় বাস্তব কথা বলছি।
সেই ডাক্তারের কমপক্ষে প্রতিদিনের উপার্জন ছিল ৫০ হাজার টাকা, এবং ব্যক্তি হিসেবে তার যেমন ছিল সুনাম, ততোধিক ছিল তার চিকিৎসার সুনাম।
বাজারে রেখে গেছেন কোটি কোটি টাকার ঋণ, সবার কৌতূহলের বিষয় সেটাই যে, এত উপার্জনের পরেও এত ঋণের কারণ কি?
পরে জানা গেলো মেয়েকে আমেরিকায় পড়াতে গিয়ে তার সেই দুর্গতি, কি লাভ হল এত উপার্জন করে? এত শিক্ষা যার দ্বারা তিনি এই বাজারেও নিজের ভিসিট কখনো বাড়ান নি।
আবার এমন শিক্ষিত, ধনী ব্যক্তির কথাও জানি হটাৎ করে পাগল হয়ে গেছিলেন। আমার কথার সারমর্ম হলো, নিজের কর্ম ঠিক না রাখলে কোনো কিছুই কোনো কাজে আসে না।
কাজেই আজকের দিনে দাড়িয়ে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থানের চাইতে নিজের কর্মের অবস্থান নির্ধারণ করাটা সবচাইতে জরুরি বলে আমার মনে হয়।
কারণ রাজা থেকে ভিখিরি হতে একমুহুর্ত লাগে, তাই নিজের মান সম্মান অন্যের হতে সোপে না দিয়ে নিজের কাজটা সঠিক করবার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
আপনাদের অভিমত জানবার ইচ্ছে প্রকাশ করে আজ এখানেই ইতি টানলাম। ভালো থাকুন এবং ভালো রাখুন সবাইকে।
একদম ঠিক বলেছেন স্যার।আমি আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু শিখছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শিখলে হবে, কাজেও লাগাতে হবে বাস্তব জীবনে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে মানুষ হলো এই পৃথিবীর সবচাইতে স্বার্থপর জীব, এবং সেই কারণে যেদিকে আত্ম স্বার্থ চরিতার্থ করবার সুযোগ আছে বোঝে সেদিকেই ঝোঁক বেশি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একেবারে সঠিক বলেছো, সেই জন্যই আজ সমাজের এই অবস্থা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মানুষ আজ বড়ো আত্মকেন্দ্রিক স্যার। আর অর্থ যার কাছে আছে, সে ভাবে তার সব আছে। মানবিকতার মূল্য দিতে কজন জানে বলুন তো?
ভালো লিখেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit