ঈদ, দাওয়াত ও বিয়ে

in hive-120823 •  7 months ago 

কেমন আছেন বন্ধুরা? আল্লাহ্‌র অশেষ মেহেরবানীতে আমি সুস্থ্য এবং ভালো আছি। সুস্থ্যতা আল্লাহ্‌ তা’লার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আর এই নিয়ামত পেয়ে আমি অনেক খুশি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে “ঈদ, দাওয়াত ও বিয়ে” শীর্ষক একটি লিখনি উপস্থাপন করছি। তাহলে শুরু করা যাকঃ-

Yellow Illustration Eid al-Adha Greeting Instagram Post.jpg
Edit by canva

বর্তমান চলছে ঈদ মৌসুম। আর এই ঈদের সময়টায় চারিদিক দাওয়াত ও বিয়ের ধুম পরে যায়। ঈদ মানে যেন বর্তমান সময়ে দাওয়াত আর বিয়ে। দাওয়াত খাওয়া, দাওয়াত খাওয়ানো, বিয়ে করা এবং বিয়ে করানোর মধ্যে যেন ঈদের আনন্দ নিহিত।

যাইহোক ঈদ মানে যেহেতু খুশি তাই দাওয়াত এবং বিয়ের মধ্যে এই খুশি ভাগ করা যেতে পারে।

আমরা ঈদের দিন অনেক আত্মীয় স্বজনদের বাসায় দাওয়াত করে থাকি। আবার অনেক আত্মীয় স্বজনের বাসায় দাওয়াত খেতেও যাই।

দাওয়াত খাওয়া এবং খাওয়ানোর কার্যক্রম ঈদের দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যন্ত বহাল থাকে। দাওয়াত খাওয়া এবং খাওয়ানো আমাদের বাঙ্গালী জাতির একটি ঐতিহ্য।

সারাবছর আমরা সকলেই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি। যেহেতু ঈদে বেশ কিছুদিন ছুটি পাওয়া যায় তাই এই সুযোগটি সকলেই কাজে লাগিয়ে থাকে। দীর্ঘদিন যেসব আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা স্বাক্ষাত হয় না তাদেরকেও ঈদে দাওয়াত করে থাকে।

অনেকেই আবার দাওয়াত না করলে মন খারাপ করে থাকে। বলতে গেলে দাওয়াত নিয়ে এক প্রকার মন কষাকষিও হয়ে থাকে।

ধরুন আপনার অনেকগুলো আত্মীয় স্বজনের মধ্যে আপনি কিছু আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত করলেন, কিছু আত্মীয়স্বজনকে বিভিন্ন কারণে দাওয়াত করতে পারলেন না।

যাদের দাওয়াত করলেন না তারা যদি কোন ভাবে টের পায় আপনি অন্য আত্মীয়দের দাওয়াত করেছেন তাহলে কিন্তু তারা আপনার উপর ভীষণভাবে মন খারাপ করবে।

কোন একদিন কথার মাধ্যমে অথবা তাদের আচরণে এটি আপনাকে তারা বুঝিয়ে দেবে। তাই আজকাল দাওয়াত করার বিষয়েও সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। যদিও এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত।

pexels-fauxels-3184195.jpg
source

আবার যারা তাদের মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ঈদের সময়টায় মেয়ের শশুর বাড়িতে দাওয়াত করা আমাদের সমাজে এক প্রকার বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। এই একটি কারণে বিভিন্ন সময় ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয়।

কেউ যদি মোবাইল ফোনে দাওয়াত করে থাকে তাহলে মেয়ের শশুর বাড়ির লোকজন কোনভাবেই সেই দাওয়াত গ্রহন করবে না। উলটো মেয়েকে বলবে তোমার বাসায় তুমি গিয়ে দাওয়াত খেয়ে আসো। আমরা মোবাইলের দাওয়াতে যাবো না।

এমন অনেক বিরম্বনায় পরতে হয় দাওয়াত খাওয়া এবং খাওয়ানোর বিষয় নিয়ে। আবার অনেক সময় দাওয়াত খেতে গেলে বিভিন্ন উপহার নিয়ে যেতে হয়।

আমাদের দেশে দই ও মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রচলন বেশি রয়েছে। দাওয়াত খেতে গেলেন কিন্তু উপহার নিয়ে গেলেন না তাহলেও কিন্তু আপনাকে বিরম্বনায় পরতে হতে পারে। আবার উপহারের কম বেশি হলেও এমনটা হতে পারে।

এবার আশি বিয়ের কথায়। ঈদের মৌসুমে কিন্তু বিয়ের ধুম ধারাক্কা বাজতে থাকে। যেহেতু লম্বা ছুটি পাওয়া যায় তাই অনেকেই এই সময়কে কাজে লাগায়। আবার সকল আত্মীয়স্বজনের দেখা পাওয়া যায় ঈদের এই সময়টায়।

এই ধরুন এখন কুরবানি ঈদের সময় চলছে। আমার বাড়ির পাশেই দুটি বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। পুরো এলাকায় নাহলেও সাত থেকে আটটি বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। আমি শুনেছি অনেকেই গাড়ি ভাড়া নিতে চাইলেও পাচ্ছে না।

সব গাড়ি নাকি বিয়ের অনুষ্ঠানের ভাড়া বুকিং নিয়ে রেখেছে। আবার ডেকোরেটরের মালপত্র পাওয়া বেশ মুশকিল হয়ে গেছে। ডেকোরেটরের দোকানগুলোতে অনেক আগে থেকেই অনেকে বুকিং দিয়ে রেখেছে।

pexels-weddingphotography-2060240.jpg
source

সব মিলিয়ে ঈদের আনন্দ যেনো বিয়ের আনন্দের সাথে মিশে গেছে।

যাইহোক আমরা সকলেই একসাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবো, কেননা আনন্দ ভাগ করার মধ্যে বিশেষ সুখ রয়েছে। আবার অতিরিক্ত আনন্দ যেন অন্য কারোর বিষাদের কারণ না হয় সেই দিকেও মনযোগ দেবো।

বিয়ে এবং দাওয়াতের অনুষ্ঠানগুলো সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করবো। কারোর সাথে মন কষাকষিতে যাবো না। মনের দিক থেকে নিজেরা উদার হবো। ছোট ছোট ভুলগুলো কখনোই অনেক বড় করে দেখবো না।

pexels-leah-newhouse-50725-325521.jpg
source

আর সবসময় বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে চলবো। বিয়ে এবং দাওয়াতে এখন অহরহ বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। তাই সবমিলিয়ে এ ব্যপারে সবাইকে সচেতন থাকার আহব্বান জানাচ্ছি।

আজ আর নয় বন্ধুরা। ভালো থাকবেন সকলে। আল্লাহ্‌হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

ঠিক বলেছেন ভাই, ঈদের মধ্যে দাওয়াত খাওয়াটা বাঙালির জাতির ঐতিহ্য ঈদের দিন থেকে শুরু করে ৬ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত এই দাওয়াত চলতেই থাকে। যারা বিবাহিত করছেন তারা ঈদের পরদিন থেকেই শ্বশুর বাড়ি যাওয়া শুরু করে দেয়। যারা বাড়ি থেকে বাহিরে থাকে তাদেরকে আত্মীয় স্বজনরা দাওয়াত দিয়ে থাকে ।
আমি বাড়ির বাইরে থাকি ঈদের দিনে আমাদের বাড়িতে খায় ঈদের পরদিন থেকে কাকীদের বাড়িতে নারীদের বাড়িতে ও আন্টি নানি এভাবে আমার এখনো দাওয়াত চলতি আছে আজকেও একটি দাওয়াত আছে দুপুর বেলায়।

এখনকার মানুষ মোবাইলে বা অন্যের মাধ্যমে দাওয়াত গ্রহণ করে না যার দাওয়াত সে নিজে দিয়ে দাওয়াত দিবে অথবা কার্ড দিয়ে দাওয়াতটা পছন্দ করে।

আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন

আমার কাছে তো মনে হয় ঈদ এলেই বিয়ের ধুম পড়ে যায়। চারপাশে বিয়ের অনুষ্ঠান একেবারেই খুব জোর সোর ভাবে শুরু হয়। আর বিয়ের অনুষ্ঠান এবং ঈদ আনন্দ সবকিছু মিলিয়ে অন্যরকম একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একদমই ঠিক বলেছেন আমাদের দেশের মেয়েদেরকে বিয়ে দিলে। তাদের শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে দাওয়াত করা একেবারেই একটা আইনের মত হয়ে গেছে।

আসলে বিয়ের দাওয়াত কিংবা অন্যান্য দাওয়াত। দাওয়াত খাওয়ার মধ্যেও কিন্তু একটা মসলা আছে। যেটা আমাদের এখানে বলা হয়ে থাকে। আসলে দাওয়াত নিয়ে অনেকেই মন কষাকষি করে। এটা করা মোটেও ঠিক না। হয়তো বা কারো ভুল হতে পারে অথবা মনে না থাকতে পারে। এটা নিয়ে মন কষাকষি করে নিজেদের সম্পর্ক গুলো নষ্ট করা মোটেও ঠিক না। ভুলগুলো শুধরে নিয়ে পরিবারের সাথে সঠিকভাবে পথ পরিচালনা করতে হবে।ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য ভালো থাকবেন।