কম্পিউটার ব্যবহারে আমার দক্ষতা

in hive-120823 •  7 months ago 

কেমন আছেন বন্ধুরা? মহান আল্লাহ্ তা’লার অশেষ মেহেরবানীতে আমি ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে “কম্পিউটার ব্যবহারে আমার দক্ষতা” শীর্ষক একটি লিখনি উপস্থাপন করছি। তাহলে শুরু করা যাকঃ-

20240530_222458.jpg

আমরা সকলেই জানি, বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে এসে কম্পিউটারের ব্যবহার বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই কম্পিউটারের ব্যবহার জানা এক প্রকার বাধ্যতামূলক বলে আমি মনে করি।

আপনি যে সেক্টরেই যান না কেন, প্রত্যেক সেক্টরেই কম্পিউটারের ব্যাবহার দেখবেন। এক্ষেত্রে আমরাই বা পিছিয়ে থাকবো কেন।

যাইহোক, আমি প্রথম কম্পিউটার চালানো শিখি দুই হাজার আঠারো সালের শেষের দিকে। তখন আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করাতাম।

একদিন এলাকার এক বড় ভাই আমাকে বলেন, তার চেনা পরিচিত একজন লোক আছেন যিনি কয়েকজন ছেলেকে কম্পিউটার চালানো শেখাবেন।

কম্পিউটারের বেসিক ভালোভাবে জানা হলে তারপর তাদেরকে যেকোন একটি বিষয়ের উপর পারদর্শী করে গড়ে তুলবেন। তুমি ওখানটায় এপ্লাই করতে পারো। আমি ভাইয়ের কথাটি শুনে সেদিন সারাদিন বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করি।

এক পর্যায়ে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিই, আমার দুটো টিউশনি লস হলে হোক তবুও আমি কম্পিউটার শিখবো। কেননা তখন বেশ ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম, সামনের দিনগুলোতে কম্পিউটারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।

আর আমি যদি কম্পিউটারের ব্যবহার না জানি তাহলে হয়তো অনেকের থেকে অনেক পিছিয়ে থাকবো। পড়ালেখার পাশাপাশি বিশেষ কিছু দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন রয়েছে এই জীবনে। এতে করে অনেকের মধ্যে নিজেকে আলাদা হিসেবে পরিচিত করা যায়।

এরপর যেমন ভাবনা তেমন কাজ। আমি এপ্লাই করলাম এবং আল্লাহ্ তা’লার রহমতে টিকেও গেলাম। সেখানে কম্পিউটারের ব্যবস্থা ছিলো তাই আলাদা করে আর আমাকে কম্পিউটার ক্রয় করতে হয়নি।

প্রথম যেদিন মাউস হাতে নিয়েছিলাম, সেদিন খুব ভয় হচ্ছিলো। বুক ধরফর করছিলো। মাউস কীভাবে কাজ করে এটি আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো। যাইহোক প্রথম প্রথম টাইপিং করতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো।

20240530_222431.jpg

হাতের আঙ্গুলগুলো কোনভাবেই যাচ্ছিলো না কীবোর্ডের বিভিন্ন কী গুলোর উপর। পাঁচ দিন, সাত দিন না হচ্ছিলো না। খুব হতাশ লাগছিলো। এক পর্যায়ে আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।

কিন্তু আমার বড় ভাই বলেছিলো আরেকটু মনযোগ বাড়াতে এবং বারবার চেষ্টা করতে। শেষমেস আমি সফল হয়েছিলাম।

দুই মাসের বেসিক কোর্স ছিলো। কোর্স শেষে পরীক্ষা হয়েছিলো, পরীক্ষায় বেশ ভালো মার্ক পেয়েছিলাম। এরপর আর আমাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমি যেহেতু টাইপিং পারতাম তাই বিভিন্ন কোচিং এর প্রশ্নের কাজগুলো নিয়েছিলাম।

প্রশ্ন গুলো টাইপ করে দিয়ে মোটামুটি রোজগার করতাম। এরপর আমি যেখানে বর্তমানে কর্মরত আছি, সেখানে প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হয়েছিলাম।

কর্তৃপক্ষ মূলত চেয়েছিলো কম্পিউটারে দক্ষতা। আমি সেটি পেরেছি বলে তারা আমাকে সিলেক্ট করেছিলো। এখন পর্যন্ত সেখানেই আমি কর্মরত আছি।

আজ অনেকদিন পর ইন্টারনেটে টাইপিং টেষ্ট দিলাম। ইংরেজীতে ভালো করলেও বাংলাতে একটু খারাপ করেছি। তবুও আমি সন্তুষ্ট। ইংরেজীতে প্রতি মিনিটে তেতাল্লিশটি ওয়ার্ড টাইপ করতে সক্ষম হয়েছি।

20240530_222058.jpg

যেখানে আমার স্কোর এসেছে ছিয়ানব্বই দশমিক আট পাঁচ। টাইপিং এ কোন শব্দ ভুল করিনি দেখে আরো ভালো লাগছে।

এরপর আসি বাংলাতে। বাংলায় প্রতি মিনিটে আটত্রিশটি শব্দ টাইপ করতে সক্ষম হয়েছি এবং আমার স্কোর ছিলো একাত্তর দশমিক দুই সাত। বাংলাতে আমি আটটি শব্দ ভুল করেছি।

20240530_222350.jpg

তবে হঠ্যাৎ পরীক্ষা দিয়েছি বলে বোধয় একটু ভুল বেশি হয়েছে। যাইহোক তবুও আমি খুশি। ইংরেজীতে বানান খুব একটা ভুল হয় না। কেননা কিছু সফটওয়্যার আছে যা ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়।

কিন্তু বাংলাতে এমন সফটওয়্যার এখনো পাইনি। হয়তো থাকতে পারে। কারোর জানা থাকলে আমাকে বলবেন।

আর হ্যাঁ, আমি স্টিমিটি প্লাটফর্মে যতদিন ধরে আছি এবং কমিউনিটিতে যতদিন লিখছি, কী-বোর্ড ব্যবহার করে টাইপিং করেই কিন্তু লিখছি।

আমাদের কমিউনিটির শ্রদ্ধেয় এ্যাডমিন ম্যাম সবসময় আমাদের টাইপিং করার কথাই বলেন। কারণ এতে করে ভুলগুলো বেশ ভালোভাবে চোখে পড়ে। আর আমিও এই বিষয়টি ম্যামের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পালন করে আসছি।

কম্পিউটার ব্যবহার করে আমি মাঝে মধ্যে টুকটাক ডিজাইনের কাজও করে থাকি। এই যেমন এডোবে ফটোশপ সফটওয়্যার এর ব্যসিক কাজ আমি জানি। কিছুটা ইউটিউব দেখে শিখেছি আবার কিছুটা এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকেও শিখেছিলাম।

20240530_222541.jpg

গতকাল কাজের ফাঁকে খুবই সিম্পল একটি পোষ্টার ডিজাইন করেছিলাম যা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। কতটা ভালো হয়েছে জানি না তবে ব্যসিক দিক থেকে ভালোই বলা চলে।

Engineers 2 (1).jpg

(এ্যডবে ফটোশপ সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডিজাইন করা)

সময় পেলে এমন ডিজাইন করি। ডিজাইন করতে ভালো লাগে আমার। যদি কখনো সুযোগ হয় ডিজাইনিং সেক্টরে কিছু একটা করার ভীষণ ইচ্ছা রয়েছে আমার। আপনাদের সকলের নিকট দোয়া চাই এই বিষয়ে।

আজ আর নয় বন্ধুরা। ভালো থাকবেন সবাই। আল্লাহ্হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আপনার সাথে আমার একটা বিষয় একদম মিলে গেলো।আপনার মতে আমিও ২০১৮ সালে কম্পিউটার চালানো শিখেছি।তখন আমি SSC পরীক্ষা দিয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হই।

আমিও মনে পরি এই প্রযুক্তিময় দুনিয়ার কম্পিউটার একটা অপরিহার্য উপাদান, যেটার ব্যবহার প্রতিটা ক্ষেত্রেই লক্ষ্যনীয়। টিউশনি ছেড়ে দিয়ে কম্পিউটার শেখায় মনোযোগী হয়েছিলেন, জীবনে অনেক বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আপনি। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ভালো থাকবেন।

বর্তমান এই আধুনিক যুগে সব জায়গাতেই কম্পিউটারের ব্যবহার রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেকেরই কম্পিউটার শেখা উচিত। তবে আপনার জীবনের কম্পিউটার শেখার কিছু অভিজ্ঞতা পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমিও অনেক আগে থেকেই কম্পিউটার চালানো শিখেছিলাম। এমনকি আমি কম্পিউটার কোর্স ও কমপ্লিট করেছিলাম। আসলেই বর্তমানে যে কোন চাকরির ক্ষেত্রে বা যে কোন কাজে কম্পিউটার খুব প্রয়োজনীয় একটি জিনিস।

সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Wow, I'm impressed by your creativity and design skills! The poster you designed looks amazing, and I love the simplicity and elegance of it. Keep up the great work, and don't worry too much about mistakes - they're an opportunity to learn and grow. Also, I appreciate your dedication to typing in Bengali, even when it's challenging. Your community is lucky to have you.keep up the good work 👍

I'm new here, I want to make good friends. I hope you'll visit my profile and like my post after reading it."

এই প্রযুক্তির যুগে প্রতিটি মানুষের কম্পিউটার শেখা আবশ্যক।। জেনে ভালো লাগলো আপনি ২০১৮ সালে কম্পিউটার শিখছেন।। আমিও ২০১৭ সালে কম্পিউটার ব্যবহার করার বিভিন্ন বেসিক শিখেছিলাম দুর্ভাগ্য শত আমার নিজস্ব ল্যাপটপ বা পিসি না থাকার জন্য আমি আজ সবই ভুলে গেছি।।

আর হ্যাঁ আপনি আপনার দক্ষতা দিয়ে যে ডিজাইন করেছেন সত্যিই অসাধারণ হয়েছে একজন দক্ষ মানুষ ছাড়া এটি করা অসম্ভব বটে।।

সেই শুরু থেকে শেষ অব্দি বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলাম হ্যাঁ আমি দোয়া করি আপনার জন্য জীবনে ভালো একটা পর্যায়ে নিয়ে যান নিজেকে।
আপনার পোস্টটা পড়ে আমি বেশ কিছুটা পিছনে চলে গিয়েছিলাম এবং নিজেকে খুঁজে পেয়ে ছিলাম আপনার পোষ্টের মাঝে কিছুটা সময়ের জন্য।
বড় শখ ছিলো আমার ইচ্ছা বলতে পারেন একটা কম্পিউটার কিনবো একদিন আমি যদিও এটা চালানোর কোন অভিজ্ঞতাই তখন আমার ছিল না।
এইচএসসি পাশের পরে যখন বিয়ে টা হয়ে গেল তখন কম্পিউটার কেনার আশা আমি একদম ছেড়ে দিয়েছিলাম।
তবে বিয়ের পরে যে ভাবেই হোক কম্পিউটার কেনার ইচ্ছাটা আমি পূর্ণ করতে পেরেছি তবে, আমি হতাশায় ভুগছিলাম তখন এটা কিভাবে শিখবো।
এরপরে আমি এক তাবিজ বিক্রেতা করার মতন একটা বড় ভাইয়ের মাধ্যমে এক বুয়া প্রতিষ্ঠানের ভর্তি হয়েছে, সেখান থেকে কিছু শিখতে পারিনি তবে, কম্পিউটার কিভাবে চালু করা বন্ধ করা এবং অল্প কিছু টাইপিং সহ কিছু জিনিস সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবং শিখেছি। কিন্তু দিনশেষে আমি এখনো হতাশায় ভুগছি ।কিভাবে নিজেকে একজন কম্পিউটারের উপরে দক্ষ করা যায় ।আমি জানি না পারবো কিনা সামনেও ,তবে আশা রাখছি। আপনার পোস্টটি পরে ভালো লাগলো দোয়া করবেন আমার জন্য।

কম্পিউটার শেখার দক্ষতা এবং কিভাবে শিখেছেন। সেই বিষয়টা আপনি আমাদের সাথে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আসলে যে কোন জিনিস আমরা যখন প্রথমে শুরু করি, তখন একটু ভয় হয়। তবে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে যদি আমরা কোন কাজ করি। সেটাতে আমরা সফলতা অর্জন করতে পারি।

প্রথমত আপনি প্রশ্ন টাইপিং করার মাধ্যমে আপনার কাজ শুরু করেন। বর্তমান সময়ে আপনি যেখানে কাজ করছেন। ওখানে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন বিষয়টা সত্যিই অসাধারণ। আপনার কম্পিউটার শেখা এবং আপনার কাজের দক্ষতা সত্যিই অসাধারণ। ধন্যবাদ উপরোক্ত বিষয় আমাদের সাথে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।

আপনি টিউশন বাদ দিয়ে হলেও কম্পিউটার চালানো শিখেছেন। বিষয়টি খুবি ইন্টেরেস্টিং।আসলে মানুষ মন থেকে যেটা চায় সেটা করা খুবি সহজ হয়ে যায়।আপনার সিদ্ধান্ত ভালো ছিলো কারন কম্পিউটার শেখা সবার জন্য জরুরি।