আসসালামু আলাইকুম/আদাব,
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে কমিউনিটির মে মাসের দ্বিতীয় প্রতিযোগীতা শীর্ষক আমার একটি লিখনি উপস্থাপন করলাম। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
সর্বপ্রথম আমি শ্রদ্ধেয় এ্যডমিন ম্যমকে ধন্যবাদ দিতে চাই এই মাসে দ্বিতীয়বারের মত প্রতিযোগীতা আয়োজন করার জন্য। ম্যমের দীর্ঘায়ু কামনা করি। সেই সাথে কমিউনিটির সকল সদস্য ও মডারেটর দের প্রতি রইলো অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।
মডারেটরদের নিরলস প্রচেষ্টা ও এ্যডমিন ম্যমের সততা, নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং সকল সদস্যদের সঠিক কর্মের ফলে আমাদের কমিউনিটি ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি আমার কমিউনিটিকে নিয়ে অনেক গর্বিত।
আমার ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি হচ্ছে, আমি কর্মকে বিশ্বাস করি। আবার ভাগ্যকেও অনেকক্ষেত্রে প্রাধান্য দেই। কিন্তু সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেই কর্মকে। কেননা কর্মের দ্বারাই ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব। কর্ম আর ভাগ্য কিন্তু একটি আরেকটির সাথে অতপ্রতো ভাবে জড়িত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি ভাবা যায় না। আপনি কর্মের কথা বললে এমনিতেই ভাগ্য চলে আসবে আবার ভাগ্যের কথা বললে এমনিতেই কর্ম চলে আসবে।
আমরা মানুষ। স্মৃষ্টির সেরা জীব। পৃথিবীতে আমাদের বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই কোন না কোন কর্ম করে জীবন পরিচালনা করতে হবে। তাছাড়াও মানুষ হিসেবে আমাদের দৈনন্দিন কিছু চাহিদা রয়েছে। যেগুলো পূরণ করতে অবশ্যই আমাদের কর্মের দরকার। আর উত্তম কর্ম আমাদের উত্তম জীবন দান করে।
তাই একটি প্রবাদ সমাজে বিদ্যমান, সেটি হলো “জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো”। কর্মকে প্রাধাণ্য দিয়ে আমরা মানুষ্য জাতি দিন রাত এক করে পরিশ্রম করি। আমি অবশ্যই সবার কর্মকে সম্মান করি। আর আমরা যতটুকু পরিশ্রম করবো তার ফল হাতেনাতেই পাবো। কখনো আবার পরিশ্রমের ফল পেতে একটু দেরি হয়। কিন্তু পরিশ্রমের ফল কখনো বৃথা যায় না।
আমরা যদি একাগ্রতার সাথে কোন কর্মকে আপন করে নেই এবং আমাদের একশত ভাগ দিয়ে সেই কাজটি করি তাহলে অবশ্যই সফল হবো। আজ হোক বা কাল। উদাহরণ স্বরুপ বলতে পারি আমাদের দেশের অর্থ্যাৎ বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদের কথা। আমরা সকলেই তার পরিশ্রমের কথা জানি।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সবথেকে পরিশ্রমি খেলোয়ার তিনি। পরিশ্রমের ফল তিনি হাতে নাতে পাচ্ছেন এখন। তার মত এমন আগ্রাসী বলিং ক্রিকেট জগতে এখন খুব কম বলারই করতে পারেন। অথচ একবার বিশ্বকাপ দল থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়েছিলো ফিটনেস এর কারণে। সেবার তিনি সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পরেছিলেন।
কে জানতো যে সেই ছেলেটা আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এত বড় ও অত্যাবশকীয় একজন খেলোয়ার হয়ে উঠবে। তিনি হয়তো তার কর্মকে আপন করে নিয়েছিলো এবং একাগ্রতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করেছিলো। বিধায় তিনি আজ এই পর্যায়।
প্রথমেই একটি উদাহরণ দেয়া যাক। আমার খুব কাছের একজন বন্ধু, যে আজ থেকে ছয় বছর আগে একটি মেয়েকে ধমক দিয়ে বিদায় করেছিলো, মেয়েটি তাকে প্রপোজ করেছিলো বলে। কিন্তু আজ সেই মেয়েটি তার স্ত্রী।
কিন্তু আমার বন্ধু কখনোই চাইতো না যে সে মেয়েটি তার জীবনসঙ্গী হোক। কিন্তু ঘটনাক্রমে আজ সেই মেয়েটিই তার স্ত্রী। এটাকে কী বলবো। অবশ্যই ভাগ্য। কারণ মেয়েটি তার ভাগ্যের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলো।
আবার আমরা সমাজে এমন কিছু মানুষকে দেখতে পাই, যারা অনেক কঠিন রোগে আক্রান্ত। ডাক্তার হয়তো তাদের বলে দিয়েছে ছয় মাস আর আপনি এই পৃথিবীতে বাঁচতে পারবেন। কিন্তু সাত মাস হয়ে গেলো সেই মানুষটি এখনো বেঁচে আছে।এখন কিন্তু আমরাই বলবো এই মানুষটি ভাগ্যের কারণে বেঁচে আছে। তাই জীবনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমি ভাগ্যকেও প্রাধান্য দিয়ে থাকি।
এখন আমি বলবো আমার কাছে কর্মই শ্রেষ্ঠ। কারণ কর্মের দ্বারা ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে থাকে। আমি যদি কর্ম না করে শুধু বসে থাকি আর ভাবি ভাগ্যে যা আছে তাই হবে তাহলে সেটা হবে চরম বোকামি। আজ যারা পৃথিবী বিখ্যাত, তাঁরা সকলেই কিন্তু কর্মের কারনেই বিখ্যাত। তাঁরা কেউ আপনা আপনি বিখ্যাত হননি। বিখ্যাত হওয়ার পেছনে তাঁদের রয়েছে অনেক ত্যাগ, তিতীক্ষা, পরিশ্রম ও ধৈর্য্য।
আজ আমি এই স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করছি। আমি যদি আমার সততা, নিষ্ঠা ও সঠিক পরিশ্রমের দ্বারা এখানে কাজ করি তাহলে একদিন আমি সফল হবই হবো। আমার সফলতা কেউ আটকাতে পারবে না। আর যদি আমি ফাঁকি দেই, চুরি করা কনটেন্ট ব্যবহার করি, তাহলে সফলতা তো দূরের কথা আমি এখানে কাজ করতে পারবো কি না এটাই সন্দেহ।
অর্থ্যাৎ আমার কর্ম হতে হবে স্বচ্ছ ও একদম পরিষ্কার। আমি যদি স্টিমিট প্লাটফর্মের নিয়ম কানুন না মেনে কাজ করি এবং আমার একাউন্টটি হাড়িয়ে ফেলি, তারপর ভাগ্যকে দোষারপ করি তাহলে সেটি কখনো কারো কাছেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। আমার কর্মই বলে দিবে আমি কতদূর অগ্রসর হতে পারবো। তাই আবারো বলবো কর্মই আমার কাছে শ্রেষ্ঠ।
আমার পছন্দের পেছনে সবথেকে বড় গল্প হলো আমার বাবা। আমার বাবা তার কর্মকে শ্রদ্ধা করেছেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সাথে তার কর্ম পরিচালনা করেছেন বলেই আজ আমার ও সকল ভাইবোনের কাছে তিনি শ্রেষ্ঠ বাবা। এর পেছনে অনেক লম্বা কাহিনী আছে। আমি সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।
বাবার বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই পারিবারিক ঝামেলার কারণে আমার দাদু বাবা ও আমার মা কে বাড়ী থেকে বের করে দেন। বাড়ী থেকে বেরিয়ে কিছুদিন নানার বাসায় থাকার পর সেখান থেকে বাবা শহরের দিক পারি জমান। নানার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করে একটি ঘোড়া কেনেন।
স্থানীয় মিস্ত্রির মাধ্যমে একটি গাড়ীও তৈরি করে নেন। অর্থ্যাৎ ঘোড়ার গাড়ী চালানো শুরু করেন আমার বাবা। তিনি কখনই তার কর্মকে ছোট করে দেখতেন না। আমার মা কখনো আমার বাবাকে বলেনি কেন তুমি ঘোড়া গাড়ী চালাও। অথচ আমার দাদা ছিলেন একজন সরকারী চাকুরিজীবি।
টানা পাঁচ বছর ঘোড়া গাড়ী চালানোর পর বাবা আরো দুটি ঘোড়া কিনে এবং গাড়ী তৈরি করে। তারপর সেই গাড়ীগুলো ভাড়ায় খাটায়। এভাবে আরো পাঁচ থেকে সাত বছর যাওয়ার পর আমার বাবা তিনটি রিক্সা কিনে। একটি নিজে চালায় ও বাকি দুটি ভাড়া দেয় অন্য কাউকে।
তারপর আমাদের সংসারে স্বচ্চলতা ফিরে আসে। এরপর আর আমার বাবাকে ফিরে তাকাতে হয় নি। স্মৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবাণীতে আমার বাবাকে এখন সবাই স্থানীয় ভাষায় মহাজন বলে ডাকে। অর্থ্যাৎ আমার বাবা এখন শুধু ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ভাড়ায় খাটায়। বাবার গোডাউন ঘরে পনেরোটি ভাড়ায় চালিত অটোরিক্সা আছে বর্তমানে।
তাই আমি আমার বাবাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। তিনি তার কর্মকে কখনো ছোট করে দেখেননি। নিষ্ঠা ও সঠিক পরিশ্রমের দ্বারা তিনি তার কর্ম চালিয়ে গেছেন। তিনি তার কর্মকে শ্রদ্ধা করতেন। সৎ ও সঠিক কর্মই তাকে আজ এতদূর অবদি পৌঁছে দিয়েছে।
যাই হোক। আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য কিছু বন্ধুকে আমন্ত্রন জানাতে চাই। তারা হলেন, @shahin1 @yoyopk (BIPLOB ROY) @Kamrul @Mamun @shariful
আজ আর নয় বন্ধুরা। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহহাফেজ।
TEAM MILLIONAIRE
Your post has been successfully curated by @irawandedy at 30%.
Thank you for your committed efforts, we urge you to do more and keep posting high quality contests for a chance to earn valuable upvotes from our team of curators and why not be selected for an additional upvote in the weekly list of Top Contests.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit