Steem engagement challenge-S10/W4| Do you think advanced technology somehow hampers our natural thought process?

in hive-120823 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম/আদাব,

কেমন আছেন সবাই? নিশ্চই ভালো। আমিও স্মৃষ্টিকর্তার মেহেরবানীতে অনেক ভালো আছি। কমিউনিটি কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। কারণ বর্তমান সময়ে এসে এমন একটা বিষয় আমাদের জন্য নির্বাচন করার জন্য।

সিজন টেন এর চতুর্থ সপ্তাহে এসে উন্নত প্রযুক্তির উপর আমার অনুভূতি প্রকাশ করতে পেরে আমি ভীষণ খুশি। সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমার লিখনি শুরু করছি।

Paper Aquarela Brush Gold Decorative A4 document (1).jpg

(ছবিটি ক্যনভা দিয়ে ইডিট করা)

প্রতিযোগীতায় প্রথম প্রশ্নটি ছিলোঃ আপনি কি মনে করেন যে উন্নত প্রযুক্তি কোনোভাবে আমাদের স্বাভাবিক চিন্তা প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে? আপনার মতামত শেয়ার করুন।

হ্যাঁ আমি অবশ্যই মনে করি উন্নত প্রযুক্তি আমাদের স্বাভাবিক চিন্তা প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে। নানাবিধ কারণে আমি এটি মনে করি। একটি উদাহরণের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক। এখন আমরা কোন সমস্যায় পড়লে বা আমাদের কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে বা কোন কিছুর সমাধান না পেলে আমরা কিন্তু সরাসরি গুগোল সার্চ করা শুরু করে দেই।

কারণ গুগোলে নিরানব্বই ভাগ সমাধান আমাদের দিয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে একশত ভাগ সমাধানও দেয়। এটি অবশ্যই একটি ভালো দিক। কিন্তু আমরা কোন কোন ক্ষেত্রে গুগোল সার্চ করবো সেই বিষয়টির উপর আমাদের নজর দেয়া উচিত। নচেৎ আমরা অচিরেই বুদ্ধিশূণ্য হয়ে পরবো।

সাধারণ কিছু বিষয় যেগুলো চাইলেই আমরা নিজ বুদ্ধিতে সমাধান করতে পারি, কিন্তু আমরা তা না করে কোন কিছু না ভেবেই গুগোল সার্চ করি এবং সমাধান করার চেষ্টা করি। কথায় আছে লোহা দীর্ঘদিন অব্যবহৃত হয়ে পরে থাকলে কিংবা কোন ঘসা মাজা না করলে এমনিতেই মরিচা ধরে।

আমাদের মেধাও ঠিক তেমন। কোন কাজে আমাদের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ না ঘটালে কিংবা মেধার বিকাশ না ঘটালে ধীরে ধীরে আমাদের মেধা অকেজো হয়ে যাবে। নতুন করে কোন কিছু ভাবার বা সাধারণ কোন কিছুর সমাধাণ করার ক্ষমতা আমরা হারিয়ে ফেলবো।

ai-gcb335b03b_1280.png
source

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি জগতে অন্যতম উদ্ভাবন হলো চ্যাট জিপিটি ও ওপেন এ আই। এই দুইটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন আমরা সকলেই আমাদের স্বাভাবিক চিন্তাধারার প্রক্রিয়াকে ব্যহত করছি। কারণ এখানে এমন কিছু নেই যে যার সমাধান পাওয়া যায় না।

উদাহরণ স্বরুপ আমরা যে ব্লোগ এই স্টিমিট প্লাটফর্মে লিখি তা কিন্তু আমাদের নিজস্ব মেধা খাটিয়ে আমরা লিখি। কিন্তু অনেকেই চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে এখন লিখালিখি করছে। যা আমাদের সকলের জন্য ও স্টিমিট প্লাটফর্মের জন্য হুমকিস্বরুপ।

আগে যারা নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে লিখত এখন তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর নির্ভর করে লিখছে। এতে তাদের মেধার বিকাশ ও আমাদের স্বাভাবিক চিন্তাধারার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে আমি মনে করি।

প্রতিযোগীতার দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিলোঃ আমাদের কি এই উন্নত প্রযুক্তির উপর পুরোপুরি নির্ভর করা উচিত, নাকি আমাদের বুদ্ধিকেও ব্যবহার করা উচিত? আপনার উত্তরের পিছনে কারণ ব্যাখ্যা করুন।

কখনোই আমাদের উন্নত প্রযুক্তির উপর পুরোপুরি নির্ভর করা উচিত নয়। আমাদের নিজের বুদ্ধিকেও ব্যবহার করা উচিত। বর্তমান উন্নত প্রযুক্তির অন্যতম উদাহরণ হলো চ্যাট জিপিটি ও ওপেন এ আই। এই প্রযুক্তি দুটি বর্তমান দুনিয়ার ব্যপক সাড়া ফেলেছে। আমারা অনেকেই এখন চ্যাট জিপিটি ও এ আই নির্ভর হয়ে পরছি।

আমি নিজে একজন ওয়েব ডেভলোপার। কিছুদিন আগে আমার মনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো যে চ্যাট জিপিটি ও এ আই এর যুগে ওয়েব ডেভলোপমেন্ট আসলে কতটুকু মানুষের প্রয়োজন আছে। নাকি ওয়েব ডেভলোপমেন্ট এর ভবিষ্যত শূণ্য। এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমি বেশ কিছু জিনিস উপলব্ধি করেছি।

ধরুন আপনার বা যেকোন কোম্পানীর একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আপনি চ্যাট জিপিটিকে বললেন আমাকে এই এই ভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে দাও। চ্যাট জিপিটি হয়তো একটি ওয়েবসাইট আপনাকে তৈরি করে দেবে কিন্তু তার মধ্যেও কিছু গ্যাপ থাকবে। এই গ্যপগুলো ফুলফিল করতে আপনাকে অবশ্যই একজন ওয়েব ডেভলোপার হায়ার করতে হবে।

আবার কিছু জিনিস সংযোজন করতে হবে আবার কিছু বিয়োজন করতে হবে। অর্থ্যাৎ একজন ডেভলোপার ছাড়া আপনি কখনই একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিলেই হবে না। মানব বুদ্ধিমত্তাকেও কাজে লাগাতে হবে।

chatgpt-g532e5aa95_1280.jpg
source

দুইয়ের সংমিশ্রণে ভালো কিছু অবশ্যই করা সম্ভব। তাই আমি বলবো আমাদের পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর হলে চলবে না। নিজের বুদ্ধিকেও ব্যবহার করা উচিত। নচেৎ আমরা পূর্ণাঙ্গ কোন কিছু প্রযুক্তির কাছ থেকে পাবো না।

প্রতিযোগীতায় তৃতীয় প্রশ্নটি ছিলোঃ আপনি কি উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সমর্থন করছেন নাকি বিপক্ষে? আপনার পছন্দের পিছনে যুক্তি শেয়ার করুন।

আমি অবশ্যই উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সমর্থন করছি। কেননা উন্নত প্রযুক্তি আছে বলেই আজ আমি আমার মনের ভাব এই স্টিমিট প্লাটফর্মে শেয়ার করতে পারতেছি। নয়ত আমার মনের ভাব আমার মনের ভিতরেই থাকতো। এই যে আমি এখন এখানে লিখছি, আপনারা লিখাটি পড়ছেন, কী করে এটি সম্ভব হলো? অবশ্যই প্রযুক্তির বদৌলতে।

আমি মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে লিখছি। আপনারা সেই লিখা মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে পড়ছেন। এটি সম্ভব কী করে হলো? বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মোবাইল বা কম্পিউটার একটি উন্নত প্রযুক্তি। এটি ব্যবহার করে আজকাল আমরা সব ধরনের কাজ করছি। আজ যদি এই মোবাইল ও কম্পিউটার আবিষ্কৃত না হতো তাহলে কী আমরা এই প্লাটফর্মে লিখতে পারতাম। কখনই না।

তৃতীয় প্রশ্নটি ছিলোঃ উন্নত প্রযুক্তির সুবিধা এবং অসুবিধা শেয়ার করুন।

উন্নত প্রযুক্তির সুবিধাসমূহঃ

  • প্রযুক্তির প্রধান যে সুবিধাটি রয়েছে সেটি হলো সময় বাঁচানো। অর্থ্যাৎ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা যেকোন কাজ খুব অল্প সময়ের ভেতরে সম্পন্ন করতে পারি।

  • উন্নত প্রযুক্তির অন্যতম একটি সুবিধা হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। প্রযুক্তি যত উন্নত হয়েছে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক ততটাই উন্নত হয়েছে। এখন বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের খোঁজ নিতে পারি।

  • তথ্য বিশ্লেষণ করা একটি অন্যতম সুবিধা। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে তথ্য বিশ্লেষণ এখন অনেকটাই সহজ হয়েছে। যখন প্রযুক্তির ব্যবহার ছিলো না তখন তথ্য যাচাই বাচাই করে বিশ্লেষণ করা অনেক কঠিন একটি কাজ ছিলো। অনেক সময় অনেক ভুল হতো। কিন্তু এখন উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে তথ্য বিশ্লেষণ অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।

  • উন্নত প্রযুক্তির ফলে জীবন যাত্রার মান অনেক সহজ হয়েছে। আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এখন প্রযুক্তির ছোঁয়া রয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে করেছে সহজ, আরামদায়ক ও নিরাপদ।

kindle-ge5cbc50b8_1280.jpg
source

উন্নত প্রযুক্তির অসুবিধাসমূহঃ

  • উন্নত প্রযুক্তির অন্যতম অসুবিধাগুলির মধ্যে প্রধান হলো খুব বেশি পরিমানে প্রযুক্তি নির্ভরতা। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে আমাদের স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাধারা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আমরা খুব বেশি প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পরছি। নিজে চিন্তা করে কোন কিছু সমাধান করার চেষ্টা দিন দিন আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

  • সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মতো চরম দিকগুলো কিন্তু এই উন্নত প্রযুক্তিই ডেকে এনেছে। আমরা সকলেই এখন ইন্টারনেট নির্ভর। ইন্টারনেট এখন সহজলোভ্য হওয়ায় আমরা মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে সবথেকে বেশি সময় ব্যয় করছি। বাইরে গিয়ে কাজ করার ও সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় করার প্রয়োজন বোধ করছি না। ফলে দিন দিন নিজেকে একাকিত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছি।

  • উন্নত প্রযুক্তি কিন্তু আমাদের স্বাস্থহানীর কারণ। আবার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা না করে ভারসাম্য নষ্ট করার ক্ষেত্রেও কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির জুরি নেই। আমরা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘরে বসেই যেকোন কাজ করতে পারি। ফলস্বরুপ বাইরে বের হই না, এক জায়গায় অনেকক্ষণ বসে কাজ করি। এতে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।

সব মিলে উন্নত প্রযুক্তির ভালো মন্দ দুইটি দিকই রয়েছে। আমাদের পরিস্থিতি বুঝে ও সব কিছু মেনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং মন্দ দিকগুলো পরিহার করতে হবে। কারণ যেকোণ কিছুর ভালো দিক গ্রহণ ও মন্দ দিক বর্জন করার মধ্যেই আমাদের মঙ্গল নিহীত রয়েছে।

এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমি তিনজন বন্ধুকে আমন্ত্রন জানাতে চাই। তারা হলেনঃ @Kamrul @Rakib @aburihan1

আজ আর নয়। ভালো থাকবেন বন্ধুরা।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

Great sir 💯