আসসালামু আলাইকুম/আদাব,
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। এনগেজমেন্ট চ্যালেঞ্জ সিজন ১২ এর দ্বিতীয় সপ্তাহের এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি দারুন আনন্দিত। আমাদের ইনক্রিটিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটির কারিগর যিনি অর্থ্যাৎ এ্যডমিন দিদি, তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছি।
সেইসাথে সকল মডারেটর ও কমিউনিটি সদস্যদের প্রতিও সম্মান প্রদর্শন করছি। আসলে সত্যিই আমরা একটা পরিবার। আর এই পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে আমি নিজেও অনেক গর্বিত। এডমিন দিদিকে ধন্যবাদ দিতে চাই চ্যালেঞ্জ এর দ্বিতীয় সপ্তাহে এত সুন্দর একটি বিষয় নির্ধারণ করার জন্য। আশা রাখবো আপনারা সকলেই আমার লিখাটি পরবেন। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
আমার ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি হলো আমি গ্রামীন জীবনধারাকেই বেশি পছন্দ করে এবং গ্রামের জীবনধারাকেই আমি বেঁচে নিতে চাই। কারন আমি নিজে গ্রামে বড় হয়েছি। আমার শৈশব এবং কৈশর কেটেছে গ্রামে। যদিও চাকুরির সুবাদে এখন শহরে থাকতে হয়। কিন্তু শহুরে ব্যস্ত এই জীবনের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আমি মাঝে মধ্যে হাপিয়ে উঠি।
তখন আবার নিজেকে চাঙ্গা করার জন্য গ্রামে কাটানো মহুর্তগুলোকে স্মরণ করি। অনেক সুখ দুঃখ লুকিয়ে আছে আমার গ্রামীন জীবনে। সেগুলোকে মনে করি। পরবর্তীতে আবার কাজে নেমে পরি। বলতে গেলে গ্রামে কাটানো স্মৃতিগুলোই আমার মন এবং শরীরকে চাঙ্গা করার একমাত্র খোরাক।
যাই হোক এবার আসল কথায় আসি। গ্রামীন জীবনধারাকে বেঁচে নেওয়ার অন্যতম কারণ হলো দূষণমুক্ত পরিবেশ ও একে অন্যের সাথে মিলেমিশে বসবাস করার বিশাল এক সুযোগ। যেখানে নেই কোন হিংসা নেই কোন বিদ্বেষ। সবাই সবার বিপদে এগিয়ে আসে এবং নিজেদের সুখ দুঃখ একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়।
গ্রামের মানুষজন বেশ সাদা সিদে হয়। তাদের মনে কোন মার প্যচ থাকে না। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জন্য এগিয়ে আসে। যেকোন প্রয়োজনে সবাইকে কাছে পাওয়া যায়। বলতে গেলে গ্রামীন জীবনধারায় একেকটি গ্রাম যেন একেকটি পরিবার। তাই এসব কিছু মিলিয়ে আমার গ্রামীন জীবনধারা অনেক পছন্দ এবং আমি সুযোগ পেলে গ্রামেই বসবাস করতে চাই।
প্রতিটি বিষের কিছু ভালো দিক এবং কিছু চ্যলেঞ্জিং দিক রয়েছে। ঠিক তেমনি গ্রামীন জীবনধারারও এমন কিছু দিক আছে। যাই হোন চ্যলেঞ্জিং দিকগুলোই প্রথমে একটু বলি।
গ্রামীন জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যলেঞ্জিং বিষয় হলো উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব। এ দিকদিয়ে গ্রামীন জনগোষ্ঠী অনেক পিছিয়ে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভাবে অনেক সময় অনেকেই বিরম্বনার স্বীকার হয়। বিশেষ করে কৃষক। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে চাষাবাদ করা ফসল ন্যয্য দামে তারা বিক্রি করতে পারে না এই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য সবথেকে বড় চ্যলেঞ্জিং বিষয় হলো স্কুল বা কলেজে যাওয়া। কেননা গ্রামে স্কুল এবং কলেজের পরিমান খুবই কম। দেখা যায় দুই তিনটা গ্রাম মিলে হয়তো একটি প্রাইমারী স্কুল, এবং একটি হাই-স্কুল। আবার কলেজের ক্ষেত্রে দেখা যায় একটি ইউনিয়ন মিলে হয়তো একটি কলেজ।
এসব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্ট করে লিখা পড়া শিখতে হয়। দূর দূরান্ত থেকে যেসব ছেলেমেয়ে স্কুল বা কলেজে আসে তাদের জন্য এটি খুব কষ্টের একটি ব্যপার হয়ে দাঁরায়। সেই সাথে তো আবার শ্রেণিকক্ষে যায়গা সংকুলানেরও কিছু বিষয় থেকে যায়। অনেক সময় যায়গার অভাবে অনেক শিক্ষার্থীকে খোলা মাঠেও ক্লাস করতে হয়।
গ্রামীন জীবনধারায় উন্নত চিকিৎসা পাওয়া আরেকটি বড় চ্যলেঞ্জিং বিষয়। কেননা গ্রামে তেমন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চোখেই পরে না। যদিও পরে সেখানে আবার ভালো ডাক্তার পাওয়া যায় না। তাই গ্রামীন জনগোষ্ঠিকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য সদরেই যেতে হয়।
অবশ্য সদর হাসপাতালে গেলে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার কিছুটা আশা থাকে। কিন্তু কেউ যদি গুরুতর অসুস্থ হয় তাহলে এত দূরের পথ পারি দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
যাই হোক সব কিছুর মাঝেও কিন্তু গ্রামীন জীবনধারার কিছু ভালো দিক রয়েছে। সবথেকে ভালো দিক হলো মুক্ত হাওয়া, যেই হাওয়ায় বুক ভরে শ্বাস নেয়া যায়। যেই হাওয়ার থাকে না কোন দূষিত পদার্থ। শহুরে হাওয়ায় যেখানে ধুলিকণার স্থর জমে থাকে সেখানে গ্রামীন হাওয়া মানুষের মনকে প্রশান্ত করে।
গ্রামের সহজ সরল শান্ত শীষ্ঠ মানুষগুলো কখনই স্বার্থপর হয় না। এটাই গ্রামীন পরিবেশে সবথেকে ভালো একটি বিষয়। এখানে সবাই সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়। সুখে দুঃখে একে অপরের পাশে এসে দাঁড়ায়। একসাথে সকলকে নিয়ে সুন্দরভাবে বসবাস করা যায়।
গ্রামের ভালো দিকগুলোর মধ্যে আরেকটি ভালো দিক হলো উন্মুক্ত খেলার মাঠ। একটি সোনালী শৈশব। অর্থ্যাৎ তরুণ প্রজন্মের বিকাশে যা যা প্রয়োজন সব গ্রামীন পরিবেশে পাওয়া যায়। এখানে থাকে না কোন বাঁধা থাকে না কোন বৈষম্য।
এখানে কেউ ধনী গরীব বোঝে না। সব শিশুই প্রতিদিন বিকেলে উপযুক্ত পরিবেশে খেলাধুলা করে আবার বাসায় ফিরতে পারে।
হ্যাঁ আমি অবশ্যই মনে করি জীবনধারা এবং পরিবেশ দুটিই আমাদের চিন্তা প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। সবথেকে বড় কথা হলো গ্রামীন পরিবেশে বসবাসকারী একজনের চিন্তাধারা এবং শহুরে বসবাসকারীর চিন্তাধারা আকাশ পাতাল তফাত। একজন শহুরে ব্যক্তির দিন শুরু হয় যানবাহনের শব্দ শুনে।
অন্যদিকে একজন গ্রামীন মানুষের দিন শুরু হয় পাখির কিচির মিচির আওয়াজ শুনে। যারা শহরে বসবাস করে তারা কোন কাজে বের হলে কিছু সময় হাতে নিয়ে বের হয়। কারন কখন কোন ট্রাফিক সিগনালে আটকে থাকতে হবে, কতক্ষণ থাকতে হবে তার কোন সময় সীমা নির্ধারণ করা নেই। এতে করে তাদের মাঝে মধ্যে বিকল্প ভাবনাও ভাবতে হয়। অন্যদিকে গ্রামের মানুষের ট্রাফিক জ্যমের কোন ভয় নেই।
তারা ইচ্ছে মত যখন তখন যে কোন যায়গায় সময়ের আগেই পৌঁছাতে পারে। তাই তাদের ভাবনাও সেইভাবে তৈরি হয়। একজন শহুরে মানুষ বাজারে গেলে দশবার চিন্তা করে কি কি নিবে আর কি কি নিবে না। পকেটে আর কয় টাকা আছে। কত টাকার মধ্যে কতটুকু জিনিস নিতে হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু গ্রামের মানুষের এগুলো চিন্তা করার সময় কই। কেননা গ্রামে শহরের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অনেক কম। অনেকেই তো বাজারেই যায় না। নিজের ক্ষেত থেকে তুলে আনা ফসল দিয়ে পরিবারের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে, কিংবা একে অন্যের সাথে পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমেও নিজের খাবারের চাহিদা পূরণ করে।
আবার শহুরে পরিবেশ মানুষের বসবাসের জন্য অনেক কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে। কেননা আমরা জানি শহরে গাছপালা অনেক কম থাকে। ঘনবসতি বেশি থাকে। প্রচন্ড গরমে মানুষ ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলে। কিন্তু গ্রামে এর বিপরীত।
যে দিকে চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। শীতল হাওয়া। মনকে প্রশান্ত করে দেয়। পরিবেশের কারণেও গ্রামীন জীবনধারা ও শহুরে জীবনধারার মধ্যেও বিশাল পার্থক্য দেখা যায়।
আমি এই প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়ার জন্য কয়েকজন বন্ধুকে আহব্বান জানাতে চাই। তারা হলেনঃ @khursheedanwar @disha @PintoKumar @rom0235
আজ আর নয় বন্ধুরা। ভালো থাকবেন সবাই। আল্লাহহাফেজ।
গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিক্ষা সুযোগ কম হওয়া সত্ত্বেও আপনি আপনার গ্রামকে একটি যৌথ পরিবার হিসেবে গ্রহণ করে সবার পাশ থাকতে চান তেমনটি কিনা তারা সর্বদা আপনার পাশে থাকেন। প্রতিযোগিতায় আপনার সাফল্য কামনা করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য! দুইটা বিষয়ের মধ্যে আপনি গ্রামীণ জীবন বেঁচে নিয়েছেন! আসলে গ্রামের মধ্যে পড়াশোনা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার হার কম থাকা সত্ত্বেও! আপনি গ্রামে বসবাস করতে চান,, কেননা আপনি যৌথ পরিবারে থেকে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চান! এই বিষয়টা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে প্রতিযোগিতা প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিয়ে,, প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভাল থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
The village is really an exciting place to live especially with children time like the second picture with children riding tyres. I used to enjoy that game and it was always fun. I could do that almost all day and forget about food or the punishment I would get staying away for long.
Village lifestyle is really good and interesting even if we have the shortcomings but we always overcome them naturally.
Thanks for sharing with us
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit