"যাচ্ছি পথিক,পিছু ডেকো না"

in hive-120823 •  last year  (edited)

লাল ফিতায় মুড়ানো ধূসর মলাটের একখানা বইও যে ভালোবাসার কি বিশাল নিদর্শন হইতে পারে তাহা আমার কল্পনায় কভুও আসে নাই। আমিও মানুষ। আমারও ইচ্ছে হয়, আমারও ভালো লাগে, আমারো খারাপ লাগে, প্রেম আছে এই আমারও, ব্যার্থতায় আমিও নীরবে কাঁদি।

নীল আকাশে ডানা মেলার যে সপ্ন আমায় দেখাইয়াছিলে তাহা আমার কল্পনার দেয়াল উৎরাইয়া উঠিবে, সে সাধ্য তাহার নেই ।

book-3005680_1280.jpg
Source

তোমারে লইয়া নীল আকাশ ভেদিয়া নক্ষত্রের ওপারে যাবার সপ্ন তাই আজীবন সপ্নই রহিয়া গেলো।

সহস্র ক্রোশ হাটিয়া ক্লান্ত, তন্দ্রাচ্ছন্ন রফিক কখন যে আবারো দীপালি রে লইয়া ভাবিতে শুরু করিয়াছে তাহাতে আর হুঁস নেই তাহার।

না চাহিতেও যাহা বারংবার অবচেতনে দোলা দিইয়া চলে তাহারেই বুঝি ভালোবাসা বলিয়া সমাজ সোম্বোধন করিয়াছে।

বারুনই এর স্রোতের তোরে ভাষিয়া ময়না দীপ এর সন্ধানে যাবে বলিয়া রফিক কে কথা দিয়েছিলো দীপালি।

সেই যে ময়না দ্বিপ। সেই হোসেন মিয়ার ময়না দ্বিপ৷

কথা ছিলো একসঙ্গে আবিষ্কার করবে দ্বিপের সকল রহস্য। জা কিনা লেখক নিজেও ভেদিয়া উঠিয়া কূল পায় নাই।

night-4028339_1280.webp
Source

আরো কতো কথাই তো দিয়াছিলো। বিড় বিড় করিয়া বলিতে বলিতে তন্দ্রা ছাড়িয়া উঠিয়া দাড়াইলো রফিক।

এই পৃথিবীতে কেও কথা রাখে না। পৃথিবীর সব রঙ ধুসর। পৃথিবীর সব প্রেম বেদনার। পৃথিবীর সব নদী সাগরে মিলিবার সাধ মেটে না।
পৃথিবীর কেও কারো লাগি থেমে থাকে না।

সময় স্থির করিয়া রাখিতে পারিলে রফিকের প্রেম হয়তোবা আজি পরিপূর্ণতার ছোয়া পাইতো। তবে সুয্যি রে উঠিতে ঠেকাইবে, সেই সাধ্য কাহার!?!?!

এ সমাজে কম্মহীন পুরুষ এর যৌনতা দএয়া হয় না। এ সমাজ, জাহার পয়সা রোজগারের ক্ষমতা নেই, তাহার ভালোবাসা পাবার অধিকার কিনিয়া লইয়াছে।

যাহারা, এই শৃংখল ভাংগিয়া ভাসিয়া জাইতে উদ্ধত হয় সাগরের পানে। যে নদী সকল বিপত্তি অতিক্রমিয়া মিশিতে চায় সাগরের লবনাক্ত জলে, চাখিয়া দেখিতে চায় তাহার তিক্ততার তীব্রতা, তাহারাই অমর হইতে পারে মরিয়া। অথবা, মৃত হইয়াই এই ইহলোকে আমৃত্যু বাঁচিয়া রহিবার অভিনয় করিয়া চলে।

dear-john-2818498_1280.jpg
Source

রফিক,আবার হাটিতে উদ্দত হইলো। আনমনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া বলিয়া চলিল আমি মৃত, জীবিতর বেশে।

দীপালি আর ফিরে আসে নাই রফিকের সম্মুখে। শেষবার তাহাদের দ্যাখা হইয়াছিলো এই স্থানেই বত্রিস বছর পূর্বএ। আজিকার এই ক্ষনে..

সেদিন দীপালি আমায় লাল ফিতায় মোড়ানো ধূসর মলাটের বই খানা হাতে গুজে দিয়েই দ্রুত পদে প্রস্থান করিয়াছিলো। আমরা সেদিন কেওই কাওকে কিছুই কহিতে পারি নাই।

বইয়ের নাম " যাচ্ছি পথিক,পিছু ডেকো না".......

বিড় বিড় করিয়া এইসব বলিতে বলিতে রফিক হাটিয়া চলিছে.............

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

সত্যিই চমৎকার আপনার প্রত্যেকটা শব্দ চয়ন যেন মন কেড়ে নিল। আসলে এভাবে একটা গল্প করতে পারব কখনো চিন্তাও করিনি। তবে রফিকের সাথে যেটা হয়েছে সেটা মোটেও ঠিক হয়নি। আসলে আমাদের মত কিছু নারী, যারা কিনা পুরুষের বিশ্বাসটাকে ভঙ্গ করে। যার কারণে পুরুষ জাতি নারীকে বিশ্বাস করতে চায় না।

আজ থেকে ৩২ বছর আগে রফিকের সাথে দিপালীর দেখা হয়েছিল। দিপালী তখন তাকে একটা বই দিয়েছিল। যার নাম ছিল যাচ্ছি পথিক পিছু ডেকো না। আসলে এই কথাটার পেছনে যে কত মানে লুকিয়ে আছে। সেটা হয়তোবা বলে বোঝানো সম্ভব না।

দিপালী রফিকে অনেক কথাই দিয়েছিল। কিন্তু সেই কথাগুলো রাখার মত যোগ্যতা দিপালীর মধ্যে ছিল না। অনেকটা দূর দুইজন এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেটা হলো না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, এত সুন্দর একটা বিষয় আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। আপনার লেখা পড়ে আমি সত্যিই মুগ্ধ। আপনার শব্দ চয়ন গুলো অসাধারণ।

ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য। সাথেই থাকবেন। আপনাদের কমিউনিটি তে লিখতে বেশ সাচ্ছন্দ্য বোধ করছি।
আসলে লেখাগুলি আরো বিস্তারিত হলে হয়তো বা, অনেক বেশি আনন্দ দিতে পারতুম। কিন্তু, আমাদের সকলেরই কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবু্ও চেষ্টার ত্রুটি বোধকরি থাকবে না আমার৷

বাহ খুব এই সুন্দর একটি পোস্ট। আপনার পোস্টটি খুবই দারুণ হয়েছে। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই উপভোগ করেছি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্যের জন্য। কোন চরিত্র টা আপনার বেশি ভালো লেগেছে বলবেন কি প্লিজ?!?!
আসলে, লিখার ব্যাপকতা বারাতে হলে পড়াশোনার ব্যাপকতা বারাইতে হয়। সময় কই এতো বলুন!??!!!!
তবুও জতোটুকু পারি চালিয়ে নিচ্ছি, জীবন খুবই ছোট্ট।